০৪ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফের কেন্দ্রের নিষেধাজ্ঞা: বাংলাদেশ থেকে স্থলপথে পাট ও পাটজাত পণ্য আমদানি বন্ধ

চামেলি দাস
  • আপডেট : ২৮ জুন ২০২৫, শনিবার
  • / 337

এম এ হাকিম, বনগাঁ: বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় সরকার তিন মাসে তিনটি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল। এর ফলে আমদানি-রফতানির সঙ্গে যুক্ত মানুষজনের মধ্যে উদ্বেগ ও আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে ২৭ জুন শুক্রবার। কেন্দ্রীয় সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফরেন ট্রেড বা ‘ডিজিএফটি’ এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের কোনও পাট বা শণের তৈরি পণ্য স্থলপথে ভারতে ঢুকতে পারবে না। পাটজাত ৯ ধরণের পণ্যের উপরে এই বিধিনিষেধ কার্যকর হয়েছে। তবে মহারাষ্ট্রের নভোসেবা সমুদ্রবন্দর দিয়ে কেবলমাত্র এ ধরণের পণ্য প্রবেশ করতে পারবে।

গত মে মাসে বাংলাদেশে তৈরি রেডিমেড পোশাকের উপরেও একই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রক। এ দিকে, এ ধরণের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসতেই দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম স্থলবন্দর পেট্রাপোলে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত ভারতীয় আমদানি-রফতানিকারক ব্যবসায়ী, পেট্রাপোল কাস্টমস হাউস এজেন্ট বা যারা পণ্য আমদানি ও রফতানির জন্য কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স সংক্রান্ত কাজ করেন এমন কর্মী, পরিবহণ ক্ষেত্র, পেট্রাপোল স্থলবন্দরে লোড-আনলোডের সঙ্গে যুক্ত এক হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ হারানোর আশঙ্কা করছেন।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ইলিশ পৌঁছল পেট্রাপোল স্থল বন্দরে, খুশি ব্যবসায়ীরা

শনিবার পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তী এ ঘটনাকে ‘অনেক বড় ধাক্কা’ বলে অভিহিত করে বলেন, পেট্রাপোল স্থলবন্দরের মতো অন্যান্য স্থলবন্দরে কয়েক লাখ মানুষ আমরা যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত তারা প্রায়ই আমরা এ ধরণের ধাক্কা খাচ্ছি। আগামীদিনে আরও আশঙ্কা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। কিছুদিন আগে গার্মেন্টস সামগ্রীতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়েছে। এবার পাটজাত পণ্যের উপরে নিষেধাজ্ঞা। পাটজাত পণ্যের বেশিরভাগ শিল্প হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। এসব পণ্য মহারাষ্ট্রের নভোসেবা সমুদ্র বন্দর দিয়ে আমদানি করে সংশ্লিষ্টরা কতটুকু লাভবান হবেন তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোর আগেই বাংলায় পদ্মার ইলিশ

অন্যদিকে, পেট্রাপোল কাস্টমস হাউস এজেন্ট বা ‘সিএইচএ’ কর্মী নূর ইসলাম মণ্ডল বাপি বলেন, বাংলাদেশের বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে দৈনিক কমপক্ষে ১০০ ট্রাক পাট ও পাটজাত পণ্য ভারতের পেট্রাপোল স্থলবন্দরে আসতো, এবারের নিষেধাজ্ঞায় তা বন্ধ হয়ে গেল। এর ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্টরা বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার পতনের পর প্রথম ভোটে ডাকসু শিবিরের জয়জয়কার

প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকার এর আগে গত ১৭ মে বাংলাদেশ স্থলবন্দর থেকে ভারতে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা ও সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় প্রভৃতি পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। গত ৯ এপ্রিল বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছিল কেন্দ্র।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ফের কেন্দ্রের নিষেধাজ্ঞা: বাংলাদেশ থেকে স্থলপথে পাট ও পাটজাত পণ্য আমদানি বন্ধ

আপডেট : ২৮ জুন ২০২৫, শনিবার

এম এ হাকিম, বনগাঁ: বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় সরকার তিন মাসে তিনটি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল। এর ফলে আমদানি-রফতানির সঙ্গে যুক্ত মানুষজনের মধ্যে উদ্বেগ ও আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে ২৭ জুন শুক্রবার। কেন্দ্রীয় সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফরেন ট্রেড বা ‘ডিজিএফটি’ এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের কোনও পাট বা শণের তৈরি পণ্য স্থলপথে ভারতে ঢুকতে পারবে না। পাটজাত ৯ ধরণের পণ্যের উপরে এই বিধিনিষেধ কার্যকর হয়েছে। তবে মহারাষ্ট্রের নভোসেবা সমুদ্রবন্দর দিয়ে কেবলমাত্র এ ধরণের পণ্য প্রবেশ করতে পারবে।

গত মে মাসে বাংলাদেশে তৈরি রেডিমেড পোশাকের উপরেও একই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রক। এ দিকে, এ ধরণের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসতেই দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম স্থলবন্দর পেট্রাপোলে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত ভারতীয় আমদানি-রফতানিকারক ব্যবসায়ী, পেট্রাপোল কাস্টমস হাউস এজেন্ট বা যারা পণ্য আমদানি ও রফতানির জন্য কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স সংক্রান্ত কাজ করেন এমন কর্মী, পরিবহণ ক্ষেত্র, পেট্রাপোল স্থলবন্দরে লোড-আনলোডের সঙ্গে যুক্ত এক হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ হারানোর আশঙ্কা করছেন।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ইলিশ পৌঁছল পেট্রাপোল স্থল বন্দরে, খুশি ব্যবসায়ীরা

শনিবার পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তী এ ঘটনাকে ‘অনেক বড় ধাক্কা’ বলে অভিহিত করে বলেন, পেট্রাপোল স্থলবন্দরের মতো অন্যান্য স্থলবন্দরে কয়েক লাখ মানুষ আমরা যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত তারা প্রায়ই আমরা এ ধরণের ধাক্কা খাচ্ছি। আগামীদিনে আরও আশঙ্কা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। কিছুদিন আগে গার্মেন্টস সামগ্রীতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়েছে। এবার পাটজাত পণ্যের উপরে নিষেধাজ্ঞা। পাটজাত পণ্যের বেশিরভাগ শিল্প হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। এসব পণ্য মহারাষ্ট্রের নভোসেবা সমুদ্র বন্দর দিয়ে আমদানি করে সংশ্লিষ্টরা কতটুকু লাভবান হবেন তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোর আগেই বাংলায় পদ্মার ইলিশ

অন্যদিকে, পেট্রাপোল কাস্টমস হাউস এজেন্ট বা ‘সিএইচএ’ কর্মী নূর ইসলাম মণ্ডল বাপি বলেন, বাংলাদেশের বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে দৈনিক কমপক্ষে ১০০ ট্রাক পাট ও পাটজাত পণ্য ভারতের পেট্রাপোল স্থলবন্দরে আসতো, এবারের নিষেধাজ্ঞায় তা বন্ধ হয়ে গেল। এর ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্টরা বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার পতনের পর প্রথম ভোটে ডাকসু শিবিরের জয়জয়কার

প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকার এর আগে গত ১৭ মে বাংলাদেশ স্থলবন্দর থেকে ভারতে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা ও সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় প্রভৃতি পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। গত ৯ এপ্রিল বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছিল কেন্দ্র।