সোমবার ফের দার্জিলিঙে মুখ্যমন্ত্রী

- আপডেট : ৯ অক্টোবর ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 164
আবদুল ওদুদ: দুর্যোগ বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গে পুনর্গঠনের কাজ তদারকি করতে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে আগামী সোমবার ফের দার্জিলিংয়ে যাচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নবান্নে বিজয়া উপলক্ষে সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা জানাতে এসে তিনি এ কথা জানান। এই সফরে তিনি কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখবেন এবং বিপর্যয়ের মোকাবিলায় যাঁরা সাহসিকতার সঙ্গে নিজের জীবনকে বাজি রেখে বন্যা দুর্গত এলাকায় কাজ করেছেন, সেই কর্মীদের সম্মানিতও করবেন।
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা, বিশেষ করে নাগরাকাটা ও মিরিক, ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একাধিক রাস্তা ও সেতু ভেঙে পড়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত। মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং ১৫ দিনের মধ্যে অস্থায়ী রাস্তা ও সেতু তৈরির কথা বলেছেন। সেই নির্দেশ মেনে কাজ কতটা এগিয়ে, তা খতিয়ে দেখতেই এবার তাঁর দার্জিলিং সফর। তিনি সেখানেই বসেই পরিস্থিতির পর্যালোচনা ও কাজের তদারকি করবেন। মিরিকের রাস্তা এখনও পুরোপুরি ঠিক না হওয়ায়, সেখানে যাওয়া আপাতত সম্ভব হচ্ছে না। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া মোকাবেলা করে যারা কাজ করেছেন তাদের সম্মানিত করবেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই।
বিপর্যয়ের মোকাবিলায় প্রথম সারিতে থেকে যাঁরা কাজ করেছেন; দমকল কর্মী, এসডিআরএফ, পুলিশ, ইঞ্জিনিয়ার, চিকিৎসক, নার্স; তাঁদের সকলকেই এই সফরে সম্মানিত করবে রাজ্য সরকার। চরম বিপদের মুখে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করার জন্য তাঁদের এই সম্মাননা দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার নবান্নের প্রেস কর্নারে সাংবাদিকদের সঙ্গে বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়ের ফাঁকে মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, তিস্তা, জলঢাকা, তোর্সার মতো নদীতে একের পর এক জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করে নদীর স্বাভাবিক গতিপথে বাধা তৈরি করা হয়েছে, যা বন্যার অন্যতম কারণ।
তিনি আরও বলেন, গঙ্গা ভাঙন ও বন্যা নিয়ন্ত্রণের মতো প্রকল্পগুলি কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকা সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি। মাইথন ও পাঞ্চেতে ড্রেজিং না করার ফলেও সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে এবং অতিরিক্ত জল ছাড়ার কারণে রাজ্য বারবার বন্যায় ভাসছে। এই অব্যবস্থার প্রতিবাদে তিনি সরব হয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়েছেন, কাজ করে কেউ সমালোচনা করলে তিনি তা স্বীকার করে নেবেন, কিন্তু কাজ না করে মিথ্যা দোষারোপ করা চলবে না। তাঁর নিজস্ব উদ্যোগে ৪৫টি ভলভো বাসে করে বহু পর্যটককে কলকাতায় ফিরিয়ে আনা এবং রাত তিনটে পর্যন্ত উত্তরকন্যায় বসে ত্রাণের ব্যবস্থা করার কথা উল্লেখ করেন। এর পাশাপাশি, বাগডোগরা থেকে কলকাতার অস্বাভাবিক বিমান ভাড়ার বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি।কেন্দ্রীয় অব্যবস্থার প্রতিবাদে তৃণমূল কংগ্রেস আগামী ১১ অক্টোবর মাইথন ঘেরাও করার কথা ঘোষণা করেছে। এরপর পাঞ্চেতও ঘেরাও করা হবে বলে নবান্নে সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকে জানান মুখ্যমন্ত্রী।