পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: গ্রামে-গঞ্জে গাছ থেকে ডাব পেড়ে অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ এটি। এই কাজের সঙ্গে যুক্ত মানুষের জীবনে বিপদ যেন সর্বদা অপেক্ষা করে থাকে। সাবধানতা ছাড়াই গাছে উঠে নারকেল পাড়তে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে আহত হওয়ার খবর অহরহ শোনা যায়। কারণ ডালপালাহীন এই গাছে ওঠা মোটেও সহজসাধ্য বিষয় নয়৷ তাই এই গাছে ওঠার একটি সহজ পন্থা আবিষ্কার করলেন এক কৃষক৷ সম্প্রতি এমনই এক ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে।
ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, এক ব্যক্তি বাইকের মতো ছোট্ট মেশিনটির দু’দিকে পা করে বসছেন। হ্যান্ডেলটি জড়িয়ে রয়েছে নারকেলের গুঁড়িকে। এক্সেলেটরে চাপ দিতেই উপরের দিকে উঠে যাচ্ছে সেই গাছ বাইক। আর সহজেই ছোঁয়া যাচ্ছে নারকেলের কাধিঁ। ফলে অনায়াসে একসঙ্গে অনেক নারকেল পেড়ে আনা সম্ভব হচ্ছে। সময়ও বাঁচছে। নির্দিষ্ট গতিতেই আবার নিচে ফিরে আসছে গাছ বাইকটি।
কর্নাটকের বঁটবাল শহরের কৃষক কোমালে গণপতি ভট্ট এই গাছ বাইকটির নির্মাতা বলে জানা যাচ্ছে। ওই মোটরবাইকের নাম ‘আরিকা বাইক’।
এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের কাছে কোমালে জানিয়েছেন, এই বাইকটি তিনি ২০১৯ সালে বানিয়েছিলেন। তবে সম্প্রতিকালে এতে কিছু পরিবর্তন এনে নতুন রূপে বাজারে ছেড়েছেন।
শেরউইন মাবেন নামক এক ব্যক্তির সহযোগিতায় তিনি এই কাজটি সম্পূর্ণ করতে পেরেছেন বলেও জানান তিনি। শিবমোগার জেলার মাবেন’স ইঞ্জিনিয়ারিং সলিউশন নামে এক কারিগরি সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্তা মাবেন। এই বাইকের সাহায্যে আম, কাঁঠাল গাছেও ওঠানামা করা যায় বলে জানিয়েছেন কোমালে।
তিনি আরও বলেন, ‘‘৪৫ কেজি ওজনের এই যন্ত্রটি চালানো করা খুবই সহজ। ২ মিনিটেই যন্ত্রটিকে গাছে আটকে তাতে চড়ে উপরে ওঠা যায়। গাছ থেকে ফল পাড়ার জন্য একটি ট্রলিও লাগানো হয়েছে এতে। এতে চড়ে এক লটে ৭০-৮০টা নারকেল পাড়তে পারেন।
কোমালের দাবি, এখনও পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার কৃষক এই বাইক কিনেছেন। তাঁদের কেউ বাইকটি নিয়ে কোনও সমস্যায় পড়েননি। তিনি বলেন, ‘‘আমি নিজেও এই গাছ বাইক ব্যবহার করি। এতে একটি ২-স্ট্রোক ইঞ্জিন লাগানো হয়েছে। প্রতি লিটার পেট্রলের সঙ্গে ৪০ মিলিলিটার টি-২ তেল মিশিয়ে এটি চালাতে হয়।’’
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শুধুমাত্র কর্নাটকই নয়, কেরল এবং তামিলনাড়ুর কৃষকেরাও কোমালের এই বাইক ব্যবহার করছেন। যদিও এটি বর্ষাকালে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত নয় বলেই জানিয়েছেন কোমালে।