১৬ অক্টোবর ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শীর্ষ কোর্টের অপেক্ষায় না থেকে সারা দেশেই তালিকা সংশোধনে কমিশন

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৫, সোমবার
  • / 191

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বিহারে ভোটার তালিকায় নিবিড় সংস্কারের বিরুদ্ধে আনা মামলার ফয়সালা হওয়ার আগেই নির্বাচন কমিশন বাকি সব রাজ্যেও একইভাবে ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কংগ্রেস থেকে শুরু করে তৃণমূল, সিপিএমের মতো বিরোধী দলগুলি এর বিরোধিতা করে বলেছে, সুপ্রিম কোর্টের মামলার নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারত কমিশন।

 

এত তাড়াহুড়ো কীসের? আসলে সুপ্রিম কোর্টে বিহারের ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধন নিয়ে রিট আবেদন করার পরেরদিনই নির্বাচন কমিশন সব রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিককে চিঠি লিখে ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধন চালু করার নির্দেশ দেয়।

আরও পড়ুন: বিহারের ৩ লক্ষ বাসিন্দাকে নোটিশ election commission- এর

 

আরও পড়ুন: Bihar SIR: নথি জমা দিয়েছেন ৯৮.২ শতাংশ ভোটার, জানাল কমিশন

বলা হয়, বিহারে যেমন ২০০৩ সালকে কাট অফ ইয়ার ধরা হয়েছে, বাকি রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি কাট অফ ডেট ধরা হবে। অর্থাৎ ২০২৬ সালের পর যাদের নাম ভোটার তালিকায় ঢুকেছে তাদের নতুন করে নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে। তবে লক্ষ্য থাকবে, ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে যাদের বয়স ১৮ হয়েছে তাদের সবার নাম তালিকায় তোলা। কমিশনের এই তাড়াহুড়ো এবং রাজনৈতিক দলগুলিকে আমল না দেওয়ার সমালোচনা করেছে বিরোধী দলগুলি। দলগুলি মনে করে, এই ব্যাপারে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে কাজ শুরু করলে ভালো হত।

আরও পড়ুন: Election commission: পশ্চিমবঙ্গে শীঘ্রই শুরু হবে SIR? জবাব দিল নির্বাচন কমিশন

 

বিশিষ্ট আইনজীবী এবং কংগ্রেসের রাজ্যসভার সদস্য অভিষেক মনু সিংভি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন যে সার্কুলার দিয়ে নতুন করে বাকি রাজ্যগুলিতেও ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধন এর নির্দেশ দিয়েছে, তা অর্থহীন। কারণ সুপ্রিম কোর্টে চলা মামলার ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত কমিশন কিচ্ছু করতে পারবে না। ২৮ জুলাই মামলার শুনানির দিনও কিচ্ছু করতে পারবে না। তার দিনকয়েক পর যা করার করতে পারবে কমিশন। আর সুপ্রিম কোর্ট যদি সংশোধন করতে নিষেধ করে তাহলে সব ঢক্কানিনাদ বন্ধ হয়ে যাবে। যুদ্ধংদেহী মনোভাব নিয়ে বড় বড় সার্কুলার দিয়ে কোনও লাভ নেই। সুপ্রিম কোর্টের মামলায় কী হয় সবাই অপেক্ষা করুন।

 

কংগ্রেস সাংসদ মানিকরাম টেগোর বলেছেন, কমিশনের সাম্প্রতিক সার্কুলারই প্রমাণ করে, ওরা সুপ্রিম কোর্টকেও আমল দিতে নারাজ। আরজেডি সাংসদ মনোজকুমারব ঝা বলেছেন, বিহারে যে সময়ে এটা করা হল এবং রাজনৈতিক দলগুলিকে না জানিয়ে যেভাবে এটা করা হল, তা উদ্বেগজনক। যাঁরা তালিকা সংশোধনের কাজ করছেন তাঁদের কী সমস্যা হচ্ছে সেসবও দেখছে না কমিশন।

 

তৃণমূল সাংসদ সাগরিকা ঘোষ বলেছেন, কমিশনের উত্তর দেওয়া উচিত তালিকা সংশোধনের নামে তারা এন আর সি কার্যকর করছে কিনা। আমাদের দল মনে করে, কমিশনের মূল লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ। এইভাবে পশ্চিমবঙ্গে কমিশন এন আর সি চালু করবে। এটা সকলেই জানেন যে, দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে কোনও নথিই নেই। কমিশন সেই নথিতে ভর করে ওদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে উদগ্রীব। সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জাভেদ আলি খান বলছেন, কমিশন স্বেচ্ছাচারীভাবে কাজ করছে। নয়তো সুপ্রিম কোর্টের রায়ের জন্য অপেক্ষা করত।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

শীর্ষ কোর্টের অপেক্ষায় না থেকে সারা দেশেই তালিকা সংশোধনে কমিশন

আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৫, সোমবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বিহারে ভোটার তালিকায় নিবিড় সংস্কারের বিরুদ্ধে আনা মামলার ফয়সালা হওয়ার আগেই নির্বাচন কমিশন বাকি সব রাজ্যেও একইভাবে ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কংগ্রেস থেকে শুরু করে তৃণমূল, সিপিএমের মতো বিরোধী দলগুলি এর বিরোধিতা করে বলেছে, সুপ্রিম কোর্টের মামলার নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারত কমিশন।

 

এত তাড়াহুড়ো কীসের? আসলে সুপ্রিম কোর্টে বিহারের ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধন নিয়ে রিট আবেদন করার পরেরদিনই নির্বাচন কমিশন সব রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিককে চিঠি লিখে ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধন চালু করার নির্দেশ দেয়।

আরও পড়ুন: বিহারের ৩ লক্ষ বাসিন্দাকে নোটিশ election commission- এর

 

আরও পড়ুন: Bihar SIR: নথি জমা দিয়েছেন ৯৮.২ শতাংশ ভোটার, জানাল কমিশন

বলা হয়, বিহারে যেমন ২০০৩ সালকে কাট অফ ইয়ার ধরা হয়েছে, বাকি রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি কাট অফ ডেট ধরা হবে। অর্থাৎ ২০২৬ সালের পর যাদের নাম ভোটার তালিকায় ঢুকেছে তাদের নতুন করে নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে। তবে লক্ষ্য থাকবে, ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে যাদের বয়স ১৮ হয়েছে তাদের সবার নাম তালিকায় তোলা। কমিশনের এই তাড়াহুড়ো এবং রাজনৈতিক দলগুলিকে আমল না দেওয়ার সমালোচনা করেছে বিরোধী দলগুলি। দলগুলি মনে করে, এই ব্যাপারে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে কাজ শুরু করলে ভালো হত।

আরও পড়ুন: Election commission: পশ্চিমবঙ্গে শীঘ্রই শুরু হবে SIR? জবাব দিল নির্বাচন কমিশন

 

বিশিষ্ট আইনজীবী এবং কংগ্রেসের রাজ্যসভার সদস্য অভিষেক মনু সিংভি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন যে সার্কুলার দিয়ে নতুন করে বাকি রাজ্যগুলিতেও ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধন এর নির্দেশ দিয়েছে, তা অর্থহীন। কারণ সুপ্রিম কোর্টে চলা মামলার ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত কমিশন কিচ্ছু করতে পারবে না। ২৮ জুলাই মামলার শুনানির দিনও কিচ্ছু করতে পারবে না। তার দিনকয়েক পর যা করার করতে পারবে কমিশন। আর সুপ্রিম কোর্ট যদি সংশোধন করতে নিষেধ করে তাহলে সব ঢক্কানিনাদ বন্ধ হয়ে যাবে। যুদ্ধংদেহী মনোভাব নিয়ে বড় বড় সার্কুলার দিয়ে কোনও লাভ নেই। সুপ্রিম কোর্টের মামলায় কী হয় সবাই অপেক্ষা করুন।

 

কংগ্রেস সাংসদ মানিকরাম টেগোর বলেছেন, কমিশনের সাম্প্রতিক সার্কুলারই প্রমাণ করে, ওরা সুপ্রিম কোর্টকেও আমল দিতে নারাজ। আরজেডি সাংসদ মনোজকুমারব ঝা বলেছেন, বিহারে যে সময়ে এটা করা হল এবং রাজনৈতিক দলগুলিকে না জানিয়ে যেভাবে এটা করা হল, তা উদ্বেগজনক। যাঁরা তালিকা সংশোধনের কাজ করছেন তাঁদের কী সমস্যা হচ্ছে সেসবও দেখছে না কমিশন।

 

তৃণমূল সাংসদ সাগরিকা ঘোষ বলেছেন, কমিশনের উত্তর দেওয়া উচিত তালিকা সংশোধনের নামে তারা এন আর সি কার্যকর করছে কিনা। আমাদের দল মনে করে, কমিশনের মূল লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ। এইভাবে পশ্চিমবঙ্গে কমিশন এন আর সি চালু করবে। এটা সকলেই জানেন যে, দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে কোনও নথিই নেই। কমিশন সেই নথিতে ভর করে ওদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে উদগ্রীব। সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জাভেদ আলি খান বলছেন, কমিশন স্বেচ্ছাচারীভাবে কাজ করছে। নয়তো সুপ্রিম কোর্টের রায়ের জন্য অপেক্ষা করত।