ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক থাকলেই মৃত্যুদণ্ড, আইন পাস ইরানের সংসদে

- আপডেট : ২ জুলাই ২০২৫, বুধবার
- / 63
ইরানের সংসদে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও আলোচিত আইন সর্বসম্মতভাবে পাস হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে;দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে কোনো ধরনের কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক বা তথ্যভিত্তিক যোগাযোগ করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারে। ইরানের নেতারা এই আইনকে ‘জাতীয় সার্বভৌমত্ব এবং বৈশ্বিক মুসলিম সংহতির প্রতীক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
আইনটি পাশ হওয়ার পর তেহরানে এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম রাইসি বলেন, তএই আইন আমাদের দেশের স্বাধীনতা, নিরাপত্তা এবং ইসলামী আদর্শ রক্ষার জন্য অপরিহার্য ছিল। ইসরাইল দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিম এশিয়ায় সন্ত্রাস ও বিশৃঙ্খলার প্রতীক হিসেবে কাজ করে আসছে। এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া কেবল ইরানের দায়িত্ব নয়, বরং সমগ্র মুসলিম বিশ্বের নৈতিক দায়িত্ব।দ
এই আইন অনুসারে, যারা ইসরাইলি সরকার, প্রতিষ্ঠান বা নাগরিকদের সঙ্গে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে যোগাযোগ রাখবে, অর্থনৈতিক লেনদেন করবে কিংবা তথ্য আদান-প্রদান করবে, তারা তআফসাদ-ফিল-আর্জদ বা তভূমিতে দুর্নীতিদ নামক অপরাধে অভিযুক্ত হবেন। ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গিতে এটি একটি চরম রাষ্ট্রদ্রোহমূলক অপরাধ, যার শাস্তি হতে পারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে শুরু করে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত।
ইরানের ধর্মীয় নেতৃত্ব এই উদ্যোগকে পুরোপুরি সমর্থন করেছে। শীর্ষ আলেমরা বলেছেন, ফিলিস্তিনে ইসরাইলি আগ্রাসন, গাজায় গণহত্যা এবং ইরানভিত্তিক বিজ্ঞানীদের গুপ্তহত্যা;এসব কর্মকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে এই আইন একটি সময়োপযোগী ও সঠিক পদক্ষেপ।
ইরান সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, এই আইন পাসের মাধ্যমে দেশটি ইসরাইলের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক ও আদর্শিক সংগ্রামে তার অবস্থান আরও জোরালো করল। তারা জানায়, তইরান চায় না কোনো নাগরিক ইচ্ছাকৃতভাবে দখলদার একটি রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে দেশকে দুর্বল করুক। এটি কেবল প্রতিরোধ নয়, আত্মরক্ষাও।দ
এই আইন পাস হওয়ার পর ফিলিস্তিনের হামাস ও ইসলামিক জিহাদসহ বহু প্রতিরোধ সংগঠন ইরানকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। তারা একে ‘ইসলামী বিশ্বে সাহসী নেতৃত্বের নিদর্শন’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
অন্যদিকে, পশ্চিমা মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কিছু প্রতিক্রিয়া এসেছে, যেখানে তারা এই আইনকে ‘অতিমাত্রায় কঠোর’ বলে মন্তব্য করেছে। তবে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তএই আইন আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং সার্বভৌম সিদ্ধান্তের প্রতিফলন। পশ্চিমা শক্তিগুলোর উচিত হবে ইরানের নিরাপত্তা ও আদর্শিক নীতিকে সম্মান জানানো।দ আইনের বাস্তবায়ন পর্যায়ে কী কী ধাপ থাকবে, তা এখনো বিস্তারিত জানানো হয়নি। তবে আশা করা যাচ্ছে, আইনটি দেশজুড়ে দ্রুত কার্যকর হবে এবং এটি ইরানিদের মধ্যে দেশপ্রেম এবং মুসলিম সংহতির বার্তা আরও শক্তিশালী করে তুলবে।