০১ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চেটেপুটে খান, কিন্তু জানেন কি কেন লাল কাপড়ে মোড়া থাকে বিরিয়ানির হাঁড়ি

অর্পিতা লাহিড়ী
  • আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২২, মঙ্গলবার
  • / 10

 

পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ সুলতান-ই-আলম ওয়াজিদ আলি শাহ বাদশা, বা অযোধ্যার নবাব—ওয়াজিদ আলি শাহ ইংরেজেদের হাতে নিজের রাজত্ব হারানোর পর কলকাতার মেটিয়াবুরুজে নির্বাসিত হন নবাব। খাদ্যরসিক, সংস্কৃতিমনস্ক নবাবের হাত ধরেই কলকাতা চিনেছিল মুঘলাই খানা বিরিয়ানিকে। সুগন্ধিত মশলা মাখানো সরু চালের ভাতের সঙ্গে তুলতুলে মাংস, ডিম আর আলু। একটা স্বর্গীয় অনুভূতি এনে দেয় জিভের মধ্যে। কিন্তু এখন প্রশ্ন হলো বিরিয়ানির হাঁড়িতে কেন জড়ানো থাকে লাল কাপড়। বিরিয়ানি তো চেটেপুটে খান কিন্তু এই কারনটা কি জানেন।

ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, সম্রাট হুমায়ুনের খাদ্য পরিবেশনে ‘দরবারি রীতি’ অনুযায়ী, রুপোলি পাত্রের খাবারগুলির জন্য লাল কাপড় আর অন্য ধাতব বা চিনামাটির পাত্রগুলিকে সাদা কাপড়ে ঢেকে নিয়ে আসা হতো।

পরবর্তিকালে মুঘল দরবারেও এই রীতি অনুসরণ করা হয়। খাদ্য পরিবেশনের এই রীতি ও রঙের ব্যবহার লখনউয়ের নবাবরাও অনুসরণ করতেন। সেই থেকেই বিরিয়ানির পাত্র লাল কাপড়ে ঢাকার রীতি চলে আসছে।

মুঘল সম্রাট হুমায়ুন যখন রাজ্য হারিয়ে ইরানে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তখন তাঁকে পারস্য সম্রাট লালগালিচার উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন। খাবার পরিবেশনে দরবারি রীতিগুলোতে রূপালি পাত্রের খাবারগুলোর জন্য লাল কাপড় আর ধাতব ও চিনামাটির জন্য সাদা কাপড় দিয়ে ডেকে নিয়ে আসা হতো, যা মুঘলরাও তাদের দরবারে চালু করেন। শুধু তাই নয়, সম্মানিত ব্যক্তি বা সাধকদের জন্য ছিল লাল পাগড়ির ব্যবস্থা।

শেষকথা বিরিয়ানি ভারতবর্ষে পা রাখে মুঘল আমলে। খাবার পরিবেশনে এই প্রথা ও রঙের ব্যবহার শহর লক্ষ্মৌয়ের নবাবরাও অনুসরণ করতেন। সমাজ জীবনে তাই অভিজাত্য, বনেদি, উষ্ণতা প্রকাশে লাল বা লালসালুর ব্যবহার চলে আসছে যুগ যুগ ধরে।

 

 

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

চেটেপুটে খান, কিন্তু জানেন কি কেন লাল কাপড়ে মোড়া থাকে বিরিয়ানির হাঁড়ি

আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২২, মঙ্গলবার

 

পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ সুলতান-ই-আলম ওয়াজিদ আলি শাহ বাদশা, বা অযোধ্যার নবাব—ওয়াজিদ আলি শাহ ইংরেজেদের হাতে নিজের রাজত্ব হারানোর পর কলকাতার মেটিয়াবুরুজে নির্বাসিত হন নবাব। খাদ্যরসিক, সংস্কৃতিমনস্ক নবাবের হাত ধরেই কলকাতা চিনেছিল মুঘলাই খানা বিরিয়ানিকে। সুগন্ধিত মশলা মাখানো সরু চালের ভাতের সঙ্গে তুলতুলে মাংস, ডিম আর আলু। একটা স্বর্গীয় অনুভূতি এনে দেয় জিভের মধ্যে। কিন্তু এখন প্রশ্ন হলো বিরিয়ানির হাঁড়িতে কেন জড়ানো থাকে লাল কাপড়। বিরিয়ানি তো চেটেপুটে খান কিন্তু এই কারনটা কি জানেন।

ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, সম্রাট হুমায়ুনের খাদ্য পরিবেশনে ‘দরবারি রীতি’ অনুযায়ী, রুপোলি পাত্রের খাবারগুলির জন্য লাল কাপড় আর অন্য ধাতব বা চিনামাটির পাত্রগুলিকে সাদা কাপড়ে ঢেকে নিয়ে আসা হতো।

পরবর্তিকালে মুঘল দরবারেও এই রীতি অনুসরণ করা হয়। খাদ্য পরিবেশনের এই রীতি ও রঙের ব্যবহার লখনউয়ের নবাবরাও অনুসরণ করতেন। সেই থেকেই বিরিয়ানির পাত্র লাল কাপড়ে ঢাকার রীতি চলে আসছে।

মুঘল সম্রাট হুমায়ুন যখন রাজ্য হারিয়ে ইরানে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তখন তাঁকে পারস্য সম্রাট লালগালিচার উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন। খাবার পরিবেশনে দরবারি রীতিগুলোতে রূপালি পাত্রের খাবারগুলোর জন্য লাল কাপড় আর ধাতব ও চিনামাটির জন্য সাদা কাপড় দিয়ে ডেকে নিয়ে আসা হতো, যা মুঘলরাও তাদের দরবারে চালু করেন। শুধু তাই নয়, সম্মানিত ব্যক্তি বা সাধকদের জন্য ছিল লাল পাগড়ির ব্যবস্থা।

শেষকথা বিরিয়ানি ভারতবর্ষে পা রাখে মুঘল আমলে। খাবার পরিবেশনে এই প্রথা ও রঙের ব্যবহার শহর লক্ষ্মৌয়ের নবাবরাও অনুসরণ করতেন। সমাজ জীবনে তাই অভিজাত্য, বনেদি, উষ্ণতা প্রকাশে লাল বা লালসালুর ব্যবহার চলে আসছে যুগ যুগ ধরে।