দিল্লির নিজামুদ্দিন স্টেশনের কাছের মাদ্রাসী ক্যাম্পে উচ্ছেদ শুরু, বঞ্চনার অভিযোগে সরব বাসিন্দারা

- আপডেট : ২ জুন ২০২৫, সোমবার
- / 55
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: দিল্লির নিজামুদ্দিন স্টেশনের কাছের মাদ্রাসী ক্যাম্পে ঘরবাড়ি ভাঙার কাজ শুরু করেছে দিল্লি পুলিশ, যদিও বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধিতা করে আসছেন বাসিন্দারা ও মানবাধিকার সংগঠনগুলি। আদালতের রায়কে হাতিয়ার করে প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযানে নামলেও, বহু বাসিন্দা এই সিদ্ধান্তকে অবিচার বলে আখ্যা দিয়েছেন।
প্রায় ৩৭০টি পরিবারের বসবাস ছিল মাদ্রাসী ক্যাম্পে। তার মধ্যে ২১৫টি পরিবারকে পুনর্বাসনের আওতায় আনা হয়েছে বলে প্রশাসনের দাবি। কিন্তু বাকি ১৫৫টি পরিবারকে পুনর্বাসনের অযোগ্য বলে ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ, এই সিদ্ধান্ত পক্ষপাতদুষ্ট ও অমানবিক।
অত্যন্ত দরিদ্র মানুষের বসবাস মাদ্রাসী ক্যাম্পে। মহিলারা গৃহস্থালির কাজ করে সংসার চালান, আর পুরুষরা দিনমজুরিতে জীবিকা নির্বাহ করেন। এমন দুর্বল আর্থিক পটভূমির মানুষদের পক্ষে আইনি লড়াই চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
দিল্লি আরবান শেলটার ইমপ্রুভমেন্ট বোর্ড (DUSIB) জানিয়েছে, নিকাশির নালার জায়গা দখল করে এই ক্যাম্প গড়ে উঠেছে, যার ফলে বর্ষার সময়ে জল নিষ্কাশনে মারাত্মক সমস্যা হয়। হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, কারা পুনর্বাসনের উপযুক্ত, তা নির্ধারণে একটি সমীক্ষা করতে। সেই সমীক্ষার ফলেই ১৫৫ পরিবারকে পুনর্বাসন তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে পুনর্বাসন পাওয়া পরিবারগুলিও সমস্যার বাইরে নয়। নারেলায় পাঠানো হয়েছে তাদের, যেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই বললেই চলে। গৃহস্থালীর কাজের সুযোগও সীমিত, ফলে জীবিকা অনিশ্চিত।
এই উচ্ছেদের বিরুদ্ধে সিপিআই(এম) বারবার প্রতিবাদ করেছে। রবিবারও দলের কর্মীরা মাদ্রাসী ক্যাম্পে উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন।
তামিলনাড়ু সরকার, যার অনেক বাসিন্দা মাদ্রাসী ক্যাম্পে থাকেন, জানিয়েছে—ক্যাম্পের বাসিন্দারা চাইলে তামিলনাড়ুতে ফিরে যেতে পারেন। সেখানে পুনর্বাসন ও জীবিকার ব্যবস্থা করবে রাজ্য সরকার।
এই পরিস্থিতিতে মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, শুধু উচ্ছেদ নয়—মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান জরুরি। বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষদের জন্য উপযুক্ত পুনর্বাসন, কর্মসংস্থান এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে সমস্যার মূলে পৌঁছানো সম্ভব নয়।