পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: বৈশ্বিক চিনি উৎপাদন খাতে ব্রাজিল ও ভারতের মধ্যকার প্রতিযোগিতা দীর্ঘদিনের। এবার চিনির ভর্তুকি সমস্যা সমাধানের জন্য ব্রাজিলের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে ভারত।
২০১৯-এ ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া এবং গুয়েতেমালার মতো দেশ বিশ্ব বাণিজ্যিক সংস্থার সমস্যা সমাধান কমিটির কাছে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিল। তাদের দাবি ছিল ভারত যেভাবে দেশের চিনি রফতানিতে ভর্তুকি দেয় তা বিশ্ব বাণিজ্যের নিয়মকে উলঙ্ঘন করে।
নালিশে আরও বলা হয় যে, এওএ-র নিয়মানুযায়ী নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার চিনির রফতানি বাড়ানোর জন্য কৃষকদের ভর্তুকি দিচ্ছিল।
আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চিন এবং রাশিয়া-সহ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অন্য তেরোটি সদস্য দেশ তৃতীয় পক্ষ হিসেবে এই বিতর্কে অংশ নেয়।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে সংস্থার বিবাদ নিষ্পত্তিকারক বিচারকরা অভিযোগকারীদের পক্ষেই রায় দেন।
নিয়ম অনুযায়ী, বিশ্ব বাণিজ্যিক সংস্থার সদস্য দেশগুলি যদি মনে করে কোনও দেশের চিনি রফতানির কোনও বিশেষ ধরনের উপায় ডব্লিউটিও-র নির্ধারিত নিয়মের বিরুদ্ধে, তাহলে তারা জেনিভায় অবস্থিত সংস্থার অফিসে মামলা দায়ের করতে পারে। বিতর্ক সমাধানের প্রাথমিক পর্যায়ে দ্বিপাক্ষিক বিচার-বিমর্শ প্রথম প্রক্রিয়া। যদি দু পক্ষই মামলার সমাধান করতে না পারে, তাহলে তারা সমস্যা সমাধান কমিটির কাছে যেতে পারে।
নালিশের প্রেক্ষিতে ডব্লিউটিও নিজেদের বয়ানে বলেছে, এই ব্যাপারে কমিটির রিপোর্ট জারি করা হয়েছে। তিনটি দেশেরই অভিযোগের উপর আলাদা আলাদাভাবে বিচার করে বিশ্ব বাণিজ্যিক সংস্থা জানিয়েছে, ‘আমরা দেখতে পেয়েছি যে ভারত কৃষির সমঝোতার অনুচ্ছেদ ৭.২ (বি)এর অধীনে নিজেদের দায়িত্ব অনুযায়ী কাজ করছে না।’
এই ব্যাপারে ভারত নিজেদের প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, চিনি শিল্পের জন্য জারি করা ভারতের বর্তমান নীতির উপর বিশ্ব বাণিজ্যিক সংস্থা কমিটির সিদ্ধান্তের কোনও প্রভাব পড়বে না।
ভারত নিজেদের বয়ানে বলেছে, দেশ নিজের স্বার্থ রক্ষার জন্য সমস্ত জরুরী পদক্ষেপ করেছে আর চাষীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য ডব্লিউটিও-র রিপোর্টের বিরুদ্ধে আবেদন করেছে যাতে কোনও অ্যাকশন নেওয়া না হয়।
ভারত জানিয়েছে, ওই তিনটি দেশ ভুল দাবি করেছিল যে ভারত আখ উৎপাদনকারীদের যে ঘরোয়া সহায়তা দেয়, তা বিশ্ব বাণিজ্যিক সংস্থার ঠিক করে দেওয়া সীমার অনেক বেশি পাশাপাশি ভারত চিনি কলগুলিকে রফতানি ভর্তুকি দেয়। কেন্দ্রীয় সরকার এই ভর্তুকি দেওয়া আগেই বন্ধ করেছে।