জাপানে প্রথমবার ৭ লক্ষের নিচে জন্মহার, উদ্বেগে সরকার

- আপডেট : ৫ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 152
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: জাপানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বছরে জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যা ৭ লক্ষের নিচে নেমে এসেছে। সেদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালে মোট ৬,৮৬,০৬১টি শিশুর জন্ম হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৪১,২২৭ কম। ১৮৯৯ সাল থেকে শুরু হওয়া রেকর্ড অনুযায়ী, এটাই এখন পর্যন্ত জাপানের সর্বনিম্ন বা রেকর্ড-কম জন্মহার।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের তথ্য বলছে, প্রবীণ নাগরিকের অনুপাতে জাপান বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে, প্রথমে রয়েছে ইউরোপের ক্ষুদ্র রাষ্ট্র মোনাকো।জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা এই অবস্থাকে ‘জরুরি অবস্থা’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি জন্মহার বাড়াতে পরিবারবান্ধব নানা নীতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যার মধ্যে কর্মক্ষেত্রে আরও নমনীয় সময় এবং সন্তান পালনে সহায়ক পরিবেশ গড়ে তোলার কথাও রয়েছে।
বুধবার প্রকাশিত সরকারি রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ২০২৪ সালে জাপানে প্রতি মহিলার সন্তান উৎপাদনের গড় সংখ্যা (ফার্টিলিটি রেট) নেমে এসেছে ১.১৫-এ, যা এ যাবৎকালের সর্বনিম্ন। পাশাপাশি, দেশে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১৬ লক্ষ মানুষের, যা গত বছরের তুলনায় ১.৯ শতাংশ বেশি।
এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী ইশিবা জানিয়েছেন, দেশের গ্রামীণ জনপদের পুনরুজ্জীবন এখন অত্যন্ত জরুরি। কারণ বহু গ্রামের বেশিরভাগ বাসিন্দা এখন ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে, এবং অনেক জায়গাই প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়ছে।
সেদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রকের তথ্য বলছে, জাপানের অন্তত ২০,০০০টিরও বেশি জনপদে বয়স্করাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। ১২ কোটির বেশি জনসংখ্যার এই দেশে শ্রমশক্তির ঘাটতি দিন দিন বাড়ছে। এর পেছনে বয়সজনিত সংকটের পাশাপাশি রয়েছে কঠোর অভিবাসন নীতিও।
প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়ার পরিস্থিতিও ভালো নয় ; ২০২৪ সালে তাদের জন্মহার আরও নিচে, মাত্র ০.৭৫। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিয়ের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে বটে, তবে তা জন্মহারের ঘাটতি মেটাতে যথেষ্ট নয়। তারা বলছেন, জাপানের মতো উন্নত অর্থনীতির জন্য দীর্ঘমেয়াদি সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার ছাড়া এই সংকট থেকে বের হওয়া কঠিন।