করোনা পরবর্তী ভারতে একাকীত্ব বড় সমস্যা! শহুরে যুবক-যুবতীরা বেশি ভুগছেন একাকীত্বে! রিপোর্টে প্রকাশিত

- আপডেট : ২ জুলাই ২০২৫, বুধবার
- / 33
পুবরে কলম ওয়েবডেস্ক: বর্তমান ভারতে মানসিক স্বাস্থ্য এক বড় সমস্যা। ‘জার্নাল অফ ফ্যামিলি মেডিসিন অ্যান্ড প্রাইমারি কেয়ার’-এ এক তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাপত্র অনুযায়ী, করোনা অতিমারীর সময় ও পরবর্তী সময়ে দেশে একাকীত্বজনিত সমস্যা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। যার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে শহরাঞ্চলের মানুষ, বিশেষত তরুণ ও বয়স্কদের ওপর।
গবেষণাপত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের ১০.১ শতাংশ মানুষ বর্তমানে একাকীত্বের সঙ্গে লড়াই করছেন। শহরাঞ্চলে এই হার আরও বেশি। ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সিদের মধ্যে ৪০% একাকীত্ব ভুগছেন। অন্যদিকে ৬৫ থেকে ৭৪ বছর বয়সিদের মধ্যে ২৯% এর বেশি একাকীত্বে ভুগছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ছোট পরিবার, নগরায়ণ, ব্যস্ততা ও প্রযুক্তিনির্ভর জীবনযাপন এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার অভ্যাস এই সমস্যার প্রধান কারণ। করোনা অতিমারীর পর ডিজিটাল সংযোগ বাড়লেও, বাস্তব জীবনে মানুষের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। দিল্লি, মুম্বই ও বেঙ্গালুরুর মতো মেট্রো শহরগুলোতে মানসিক চাপ ও একাকীত্বের হার সবচেয়ে বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) একাকীত্বকে শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য একটি প্রধান কারণ হিসাবে চিহ্নিত করেছে। এর ফলে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, স্মৃতিভ্রংশ, ডিমেনশিয়া এবং আলঝাইমারের মতো জটিল রোগের সম্ভাবনা বাড়ে। পাশাপাশি, একাকীত্বের সঙ্গে মানসিক অবসাদ, উদ্বেগ ও আত্মহত্যার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পায়।
এইমস দিল্লির চিকিৎসক ডাঃ সঞ্জয় রাই বলেন, একাকীত্ব কমাতে নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ এবং সামাজিক যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি পরামর্শ দেন, ঘরের মধ্যে একা না থেকে পার্কে হাঁটতে যাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করা বা পারিবারিক সময় কাটানো উচিত। এছাড়া, তরুণদের স্ক্রিন টাইম কমিয়ে অফলাইন কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে উৎসাহিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, বয়স্ক এবং দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্যে এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। তাই তাদের প্রতি আলাদা মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। যাতে তারা মানসিকভাবে ভেঙে না পড়েন।
সার্বিকভাবে, গবেষক ও চিকিৎসকরা মনে করছেন—এই মুহূর্তে একাকীত্ব মোকাবিলায় জাতীয় স্তরের সচেতনতা ও নীতিগত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। না হলে এর সামাজিক ও স্বাস্থ্যগত প্রভাব আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।