মেছুয়া বাজারের অগ্নিদগ্ধ এলাকা পরিদর্শন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

- আপডেট : ১ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 125
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেছুয়ার হোটেলে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। শহরে বারবার আগুন লাগার পিছনে উঠে এসেছে গাফিলতির অভিযোগ। তাই নিয়ে বারবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী । মেছুয়ার অগ্নিদগ্ধ এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শনের করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে দাঁড়িয়েই কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর। বেনিয়মে কেউ মদত দিলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেই জানান ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ মমতা।
মঙ্গলবার মেছুয়ার হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের জেরে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন দিঘায়। কারণ, জগন্নাথদেবের মন্দির উদ্বোধনের কথা ছিল। সেখান থেকেই অগ্নিকাণ্ডের প্রতি মুহূর্তের খোঁজ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। দিঘা থেকে ফিরেই মেছুয়ায় যান তিনি। সেখানে দাঁড়িয়ে বলেন, “এই হোটেলটা ১৯৮৯ সাল থেকে চলছে। অনেক পুরনো। কিছু কিছু বাড়ির ছাদ ভেঙে পড়ছে। পুলিশ, পুরসভা ও দমকলকে বলব বৈঠক করতে। কিছু দিনের জন্য স্থানান্তরিত হয়ে বাড়ি তৈরি করুন। নিরাপত্তার স্বার্থে বসে কথা বলুন। আমি আশা করি জীবনের স্বার্থে সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করুন। নিজেরাই দরকার হলে তৈরি করুন। বাড়িগুলোর অবস্থা খুব খারাপ। যেকোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে। আদালতকেও বলব এটা জীবন-মরণ সমস্যা। যে বাড়িগুলিকে বিপজ্জনক বলে জানানো হয়েছে, সেগুলিকে অবশ্যই ঠিক করতে হবে।”
মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, “বেনিয়মে স্থানীয় কেউ মদত দিলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তা সে প্রশাসনিক কিংবা রাজনৈতিক নেতৃত্ব – যেই হোক না কেন। ছাড়া হবে না। যেসব হোটেল নিয়ম মানে না সেখানে সারপ্রাইজ ভিজিট করা হবে। কাউন্সিলরদের জানিয়ে সারপ্রাইজ ভিজিট নয়। পুলিশ, দমকল সারপ্রাইজ ভিজিট করুক। ১৫ দিনের মধ্যে সারপ্রাইজ ভিজিটের রিপোর্ট দিতে হবে। কোথাও কোথাও আমি কিন্তু ভীষণ রাফ অ্যান্ড টাফ। কেউ কিছু না শুনলে ব্যবস্থা নেব।”
অগ্নিদগ্ধ ওই হোটেলটির পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে মমতা আরও বলেন, “এই ঘটনার তদন্ত হবে। যে বাড়িগুলিতে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নেই, জল নেই সেগুলি খতিয়ে দেখা হবে। এই হোটেলে একটিমাত্র সিঁড়ি। নামতে গিয়ে লোকের ধোঁয়ায় মৃত্যু হয়েছে। দমকল, পুলিশ পাশের বাড়ি থেকে মই দিয়ে অনেককে নামিয়েছে। ধোঁয়া বেরনোর জায়গা ছিল না। হোটেলের ব্যবসা করছেন অথচ নিরাপত্তা নিয়ে ভাববেন না? ব্যবসা অবশ্যই করুন তা বলে অতিথিদের নিরাপত্তা নিয়েও আপনাদের ভাবা উচিত। হোটেল মালিক ও ম্যানেজার গ্রেফতার হয়ে গিয়েছে।”
মুখ্যমন্ত্রীর আর্জি, “দয়া করে এদিকে নজর দিন। মালিক পাশে থাকে তো ভালো। প্রয়োজনে নিজেরাই বাড়ি তৈরি করুন। ২-৩ দিনের মধ্যে বৈঠক করে কতগুলি বাড়ি, হোটেল বিপজ্জনক তা খতিয়ে দেখুন। আমরা ঘরের মধ্যে প্লাস্টিক, রাসায়নিক রেখে দিই। এই কারণে আগুন লেগে যায়। আগুন বেড়ে যায়। আগুন নিয়ে খেলবেন না। আগুন জ্বালানো সহজ। নেভাবে কে? যার পরিবারের লোকজনের মৃত্যু হয়েছে, সে বোঝে দুঃখ কতটা।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “বারবার নোটিস দিলেও যাচ্ছে না। না গেলে কী করব? আমি কি ধাক্কা দিয়ে বের করে দেব? সকলকে সহযোগিতা করতে হবে। মানবিকভাবে প্রতিটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। কেউ এখানে ১০, ২০, ৩০ বছর বাস করেন। এখানে শপিং মল, দোকান রয়েছে। ৬ মাস অন্তর অন্তর পরীক্ষা করতে হবে। আমি ১৫ দিন সময় দিলাম।
আমি কারও বিরুদ্ধে নই বলেও জানান তিনি।এসব বলার জন্য ভোট না দিলে না দেবেন। ভোটের জন্য বলছি না। শুধু জীবন বাঁচাতে বলছি বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায়।