বাংলায় বিপিএল তালিকাভুক্ত মানুষের সংখ্যা কমছে, মেনে নিল নীতি আয়োগ… স্বীকৃতি দিল RBI

- আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, রবিবার
- / 25
পুবের কলম প্রতিবেদক: পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার যে সুশাসন করছে তার স্বীকৃতি দিল খোদ কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি আয়োগ। শুধু তাই নয়, নীতি আয়োগের স্বপক্ষে তথ্য তুলে ধরল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াও। নীতি আয়োগ এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ওই তথ্য অনুযায়ী, বাংলায় বিপিএল তালিকাভুক্ত মানুষের সংখ্যা ক্রমশই কমছে। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে এই সংখ্যা মাত্র ৮.৬ শতাংশ যা দেশের জাতীয় গড়ের থেকেও কম।
একইসঙ্গে, নীতি আয়োগের তথ্য অনুযায়ী, বাংলার থেকে বেশি সংখ্যক বিপিএল তালিকাভুক্ত মানুষের সংখ্যা রয়েছে দেশের একাধিক বিজেপি শাসিত ডবল ইঞ্জিনের রাজ্যে। সেই সব রাজ্যের মধ্যে রয়েছে গুজরাট, উত্তরপ্রদেশও। রয়েছে বিজেপি শাসিত রাজ্য রাজস্থান, ত্রিপুরা, ছত্তিশগড়, অসম, মধ্যপ্রদেশ এবং নীতীশ কুমারের বিহারও। এই সব রাজ্যে বিপিএল তালিকাভুক্ত মানুষের সংখ্যা বাংলার থেকে অনেক বেশি।
উল্লেখ্য, দেশে বর্তমানে বিপিএল তালিকাভুক্ত মানুষের সংখ্যা ১১.২৮ শতাংশ। বাংলায় তার থেকেও কম মানুষ বিপিএল তালিকাভুক্ত। ২০১১ সালে তৃণমূল রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাংলার মানুষের সামাজিক সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
রাজ্যে চালু হয়েছে লক্ষ্মীর ভান্ডার, কন্যাশ্রী, মেধাশ্রী, রূপশ্রী, জয় বাংলা, জয় জোহর, তেমনি আছে কৃষকবন্ধু, মৎস্যবন্ধু, তপশিলী বন্ধুর মতো অজস্র আর্থসামাজিক প্রকল্প যেখানে মানুষের হাতে সরাসরি টাকা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আছে বাংলা শস্য বিমা যোজনাও। এই সব প্রকল্পের কারণেই বাংলার প্রান্তিক মানুষের হাতে পর্যাপ্ত নগদের জোগান পৌঁছে গিয়েছে। এর জেরেই রাজ্যে দারিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারী বা বিপিএল তালিকাভুক্ত মানুষের সংখ্যা ক্রমশ কমছে।
রাজ্যে বর্তমানে দারিদ্র্যসীমার নীচে থাকা মানুষের হার কমে দাঁড়িয়েছে ৮.৬০ শতাংশ। এর নেপথ্যে যে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্প্রসূত আর্থসামাজিক প্রকল্পগুলি তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছে কেন্দ্র সরকারের পাশপাশি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং দেশের অর্থনীতিবিদদের একাংশও।
শনিবার রাজ্য বিধানসভায় বাজেট বিতর্কের শেষে জবাবী ভাষণে রাজ্যের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, আমরা সরকারে আসার কয়েক বছর আগেও ৫৭.৬০ শতাংশ রাজ্যবাসী দারিদ্র্যসীমার নীচে অবস্থান করতেন। আমাদের মা-মাটি-মানুষের সরকার দারিদ্র্যসীমার নীচে থাকা ২ কোটিরও বেশি মানুষের জীবিকার সংস্থান করেছে। ফলে দারিদ্র্যসীমার নীচে অবস্থান করছেন এমন মানুষের সংখ্যা ৪৯ শতাংশ কমে বর্তমানে ৮.৬০ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে।
রাজ্যের দেওয়া এহেন পরিসংখ্যান নিয়ে অতীতে একাধিকবার বিরোধী শিবির প্রশ্ন তুলে থাকলেও এবার খোদ কেন্দ্রের নীতি আয়োগ দপ্তরের তরফেই রাজ্যের এই তথ্য মেনে নেওয়া হয়েছে।
তাই, এবার আর বিরোধীরা এই তথ্যকে অস্বীকার করতে পারবেনা বলেই মনে করেন রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সহ নারী ক্ষমতায়নের অন্যান্য প্রকল্প চালু হওয়ায় ব্যাপকভাবে উপকৃত হয়েছেন রাজ্যের মহিলারা। এবার আরও বেশি সুবিধা তাঁরা পাবেন।’ তাঁর মতে, পৃথিবীর তাবড় তাবড় অর্থনীতিবিদরা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে মানুষের হাতে নগদের জোগান বাড়ানোর কথা বলছেন। কেন্দ্র সেই উপদেশ না মানলেও এরাজ্যের সরকার তা করে দেখিয়েছে। এই সাফল্য তারই প্রতিফলন।