শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মানে ভূষিত হলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি

- আপডেট : ৫ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার
- / 50
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: আন্তর্জাতিক মঞ্চে ফের সম্মানিত হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর মুকুটে যুক্ত হল আরও একটি পালক। মোদিকে দেশের সর্বোচ্চ সম্মান ‘মিত্র বিভূষণ পদক’-এ সম্মানিত করল শ্রীলঙ্কা সরকার। ভারত ও দ্বীপরাষ্ট্রের মধ্যেকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করতে, উভয় দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উন্নীতকল্পে ব্যতিক্রমী অবদানের জন্য এই স্বীকৃতি দেওয়া হল মোদিকে। রাষ্ট্রপতি অনুরা কুমার দিশানায়েক বলেন, “আমি আন্দের সঙ্গে জানাতে চাই, শ্রীলঙ্কা সরকার তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ সম্মান মিত্র বিভূষণ প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদি এই সম্মানের জন্য অত্যন্ত যোগ্য ব্যক্তি।” পুরস্কার গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর জবাবি ভাষণে বলেন, এটি তার জন্য “গর্বের বিষয়”। এরপর তিনি আরও বলেন, “আজ, রাষ্ট্রপতি অনুরা কুমার দিশানায়েকের হাতে ‘শ্রীলঙ্কা মিত্র বিভূষণ’ পুরস্কারে সম্মানিত হওয়া, শুধু আমার জন্য নয়, ১৪০ কোটি ভারতীয়ের জন্য সম্মানের।এই সম্মান শ্রীলঙ্কা এবং ভারতের জনগণের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক এবং গভীর বন্ধুত্বের প্রতিফলন ঘটাবে। এর জন্য আমি রাষ্ট্রপতি, শ্রীলঙ্কা সরকার এবং এখানকার জনগণকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের বন্ধুত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ দেওয়া হয় ‘মিত্র বিভূষণ পদক’। মোদিকে দেওয়া পদকের নকশায় রয়েছে ভারত-শ্রীলঙ্কা বন্ধনের নানা প্রতীক। যেমন, ধর্মচক্র যা বৌদ্ধ ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে। পুন কলস—ধানের আঁটি রাখার একটি আনুষ্ঠানিক পাত্র, যা সমৃদ্ধির প্রতীক এবং নবরত্ন বা নয়টি মূল্যবান রত্ন। এছাড়া একটি গোলকের মধ্যে পদ্মের পাপড়ির নকশা রয়েছে, যা স্থায়ী বন্ধুত্বের প্রতীক। পদকটির নকশায় খোদাই করা সূর্য ও চাঁদ চিরকালীন সম্পর্কের প্রতীক হিসাবে চিহ্নিত। প্রাচীন সভ্যতা থেকে অসীম ভবিষ্যতের দিকে দিকনির্দেশ করে। শ্রীলঙ্কার এই পুরস্কার ২০০৮ সালে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি মাহিন্দা রাজাপক্ষে চালু করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি ছাড়াও মাত্র তিনজন নেতা এই সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন। মালদ্বীপের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি মামুন আব্দুল গাইয়ুম, ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রপতি মাহমুদ আব্বাস এবং ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাত।উল্লেখ্য, এই নিয়ে ২২তম আন্তর্জাতিক সম্মানে ভূষিত হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর আগে গত ১১ মার্চ মরিশাসের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান পান।

শুক্রবার তিনদিনের সফরে শ্রীলঙ্কায় পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিমানবন্দরে রাজকীয় অভ্যর্থনা জানানো হয় মোদিকে। কলম্বোতে মোদিকে স্বাগত জানান শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিশানায়েক। এরপর হোটেলেও নমোকে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয়। সেখানে তাঁর সঙ্গে দেখা হয় প্রবাসী ভারতীয়দের। এই তিনদিন পড়শি দেশে একগুচ্ছ কর্মসূচি রয়েছে মোদির। থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলন থেকেই শ্রীলঙ্কায় চলে যান প্রধানমন্ত্রী। শনিবার সকালে পা রাখেন দ্বীপরাষ্ট্রে।পড়শি দেশে পৌঁছোনোর কিছুক্ষণ পরেই, প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি দিশানায়েকের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়। শনিবার, ভারত ও শ্রীলঙ্কা বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। যার মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা মূলক চুক্তি রয়েছে। তার মধ্যে ত্রিনকোমালিকে একটি জ্বালানি কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার চুক্তিও রয়েছে। শ্রীলঙ্কার পূর্বাঞ্চলে বিভিন্ন সেক্টরে অনুদান দেওয়ার জন্য আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ভার্চুয়ালি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক প্রকল্পের উদ্বোধনও করেন তাঁরা। যার মধ্যে রয়েছে সামপুর সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প এবং ডাম্বুলায় তাপমাত্রা-নিয়ন্ত্রিত কৃষি গুদাম।