ট্রাম্প প্রশাসন ছাড়লেন মাস্ক, ১৩০ দিনের সরকারি মিশনের সমাপ্তি

- আপডেট : ৩০ মে ২০২৫, শুক্রবার
- / 84
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: মার্কিন ধনকুবের ও টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক অবশেষে ট্রাম্প প্রশাসন থেকে সরে দাঁড়ালেন। হোয়াইট হাউস বুধবার রাতে তাঁর পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, সরকারের ‘সংকোচন ও দক্ষতা বৃদ্ধির’ উদ্দেশ্যে গঠিত বিশেষ বিভাগ ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’ তে তাঁর ১৩০ দিনের মেয়াদ শেষ হয়েছে।
‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’ -এর মাধ্যমে ফেডারেল প্রশাসনের প্রায় ১২ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার কর্মী ছাঁটাই, আগাম অবসর অথবা স্বেচ্ছা প্রস্থানের মাধ্যমে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই কার্যক্রম নিয়ে নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে এর সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে।
মাস্ক নিজের বিদায়বার্তায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে বলেন, ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’ -এর মিশন সময়ের সাথে সাথে আরও শক্তিশালী হবে এবং এটি সরকারি ব্যবস্থার একটি জীবনধারা হয়ে উঠবে।’ এর অধীনে যে হারে ফেডারেল কর্মী ছাঁটাই হয়েছে, তা ইতিমধ্যে বিভিন্ন দফতরে জনসেবা প্রদান ব্যাহত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মাস্কের বিদায়ের পর প্রশাসনের ভেতরে নেতৃত্বের শূন্যতা ও সমন্বয়ের
ইলন মাস্কের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যেই আগে থেকেই উদ্বেগ ছিল। এখন তাঁর পদত্যাগে একদিকে যেমন টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রতি তাঁর মনোযোগ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে, অন্যদিকে বাজারে কিছুটা অনিশ্চয়তাও তৈরি হয়েছে যে তিনি ভবিষ্যতে আরও রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ নিয়ে ফিরবেন কিনা।
মাস্কের এই অরাজনৈতিক ক্ষমতা প্রাপ্তি এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনের চেষ্টা অনেককেই মনে করিয়েছে একজন ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রস্তুতি। অনেকে মনে করছেন, এটি হতে পারে তাঁর নিজস্ব রাজনৈতিক দল গঠনের বা ভবিষ্যতে প্রেসিডেন্ট পদে লড়াইয়ের একটি মহড়া।
‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’ -এর মাধ্যমে যেভাবে কেন্দ্রীয় সরকার সংকুচিত করা হয়েছে, তা সরকারি চাকরির ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা এবং নাগরিকদের সেবার ওপর বড় ধরনের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে। মাস্কের অনুপস্থিতিতে এই কাঠামো কীভাবে পরিচালিত হবে এবং তা কতটা কার্যকর হবে, তা এখনো অনিশ্চিত।
মাস্ক নিজে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করলেও সম্প্রতি তিনি রিপাবলিকানদের বাজেট বিল নিয়ে সরাসরি সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, তবাজেট ঘাটতি কমানোর পরিবর্তে এটি বরং তা বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’ -এর কাজকে বাধাগ্রস্ত করছে।দ
এই মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন তোলে। এমনকি রিপাবলিকান দলীয় অনেক নেতাও মাস্কের এই অবস্থানকে ‘দ্বৈত নীতি’ বলে অভিহিত করেছেন।
ইলন মাস্কের ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’ থেকে প্রস্থানে অনেকে একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি দেখছেন, কিন্তু অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক এটিকে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনাও বলে মনে করছেন। একজন প্রযুক্তিপ্রধান ধনকুবের কীভাবে আমলাতন্ত্রে ঢুকে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করতে পারেন, মাস্ক তার একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ; এই প্রভাব তিনি ভবিষ্যতে কোথায় এবং কীভাবে কাজে লাগাবেন?