০১ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘আইএএস’ পদে উন্নীত শাকিল আহমেদ

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১২ জুন ২০২৩, সোমবার
  • / 15

আবদুল ওদুদ: রাজ্যের সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করে যাওয়া অফিসার শাকিল আহমেদ আইএএস পদে উন্নীত হলেন। ২০২১ সালের স্টেট সিভিল সার্ভিস তালিকায় তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। গত ৯ জুন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের চিফ সেক্রেটারি পিবি গোপালিকা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে। শাকিল আহমেদ ছাড়াও আর ৯ জন ডব্লুবিসিএস অফিসারকে আইএএস পদে উন্নীত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন, সুক্তিসিতা ভট্টাচার্য, চৈতালি চক্রবর্তী, দেবযানী দত্ত, অসিতা মিশ্র, সুদীপ মিত্র, অরুন্ধুতি সরকার, মুকেশ কুমার সিং, বিজিত কুমার ধর, উৎপল ভদ্র ।

শাকিল আহমেদ বর্তমানে রাজ্য সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা এডুকেশন বিভাগের স্পেশাল   সেক্রেটারি পদে রয়েছেন। আইএএস পদে উন্নীত হওয়ায় তিনি এখন ওই দফতরেরই স্পেশাল কমিশনার পদে উন্নীত হলেন।

১৯৯২ ব্যাচের দক্ষ এই ডব্লুবিসিএস অফিসার চাকরি জীবনে প্রবেশের পরই পিছিয়ে পড়া সমাজের উন্নয়নে একাধিক পরিকল্পনা নিয়ে ছিলেন। শুরু থেকেই তিনি সমাজের বঞ্চিত ও পিছিয়ে পড়াদের কল্যানে কাজ করে এসেছেন। বিভিন্ন জেলায় নিযোগ থাকাকালীন কীভাবে মানুষের জন্য কাজ করতে হয় সেটি অন্যান্য অফিসারদের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠে ছিলেন।

অত্যন্ত দক্ষ ও নিজস্ব বুদ্ধি মত্তা, পরিশ্রমিক অফিসার হিসাবে ইতিমধ্যেই রাজ্যে তাঁর সুনাম রয়েছে। শাকিল আহমেদ পূর্ব বর্ধমানের কালনা-১ ব্লকের আধিকারিক হিসাবে ১৯৯৫ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। সেই সময় তিনি মানুষের কল্যানের জন্য উন্নয়নের কাজ করে ছিলেন। এর পর তিনি দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। ওই সময় তিনি ডিস্টিক প্ল্যানিং অফিসার হিসাবে বেশ কয়েকটি উল্লে’যোগ্য পদক্ষেপ নিয়ে ছিলেন।

উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের জন্য তাঁর অবদান উল্লেখ্যযোগ্য। তিনি প্রজেক্ট অফিসার, রাজ্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প জেলা পরষদের সচিব পদেও কাজ করেছেন। দক্ষিণ দিনাজপুরে বালুরঘাটেও বেশ কয়েক বছর কাজ করে ছিলেন। স্বল্প সময়ের জন্য পর্যটন দফতরের সচিবও ছিলেন।

দক্ষ অফিসার হয়ে সুনাম অর্জন করার জন্য ২০০৩ সালে সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের জন্য  পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্তনিগমের জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। কীভাবে সংখ্যালঘুদের উন্নয়ন করতে হবে তাঁর নানা পরিকল্পনা ওই সময় তিনি নিয়ে ছিলেন।

স্কিল ডেভলপমেন্ট ট্রেনিং তার মধ্যে অন্যতম। ওই সময়ে তাঁর গ্রহন করা পরিকল্পনা গ্রহণ করা আজও বিদ্যামান। চার বছর কাজ করার পর ২০০৭ সালে শাকিল আহমেদকে দক্ষিণ ২৪ পরগণার ক্যানিং-এর মহকুমা শাসক হিসেবে কাজ করেন। ওই সময়ে ব্লার্ড-ফ্লু মহামারি দেখা  দিলে ক্যানিং এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

 ক্যানিং-এর জটিল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগে অতন্ত দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করে ছিলেন। যার কারনে পরবর্তিতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শাকিল আহমেদ ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীনে থাকা ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের প্রশাসনিক কর্তা হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। ওই সময়ে তিনি স্বপ্ল সময়ের জন্য সচিব ও কিউরেটর পদও সামলান। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে বিভিন্ন জাতীয় আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী আয়োজনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ছিলেন। সেখানে শীর্ষ পর্যায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে রয়েছে  কলকাতার সাহিত্য সভা, অক্সফোর্ট সাহিত্য উৎসব, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে প্রশাসনিক কর্মকর্তা দায়িত্বে থাকা কালীন মেশিডোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী, সেক্রেটরি অব স্টেট হিলারি ক্লিনটন, থাইল্যান্ডের রাজকুমারি-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতির রাষ্ট্র প্রথান ও শীর্ষ পর্যায়ের অফিসারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওই সময় তিনি রাজ্যপাল, বিভিন্ন রাজ্যের মন্ত্রী , রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিদেশ সফর করেন।

 ২০১৫ সালের মে মাস থেকে  রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়ক এবং মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের  যুগ্মসচিব পদে কাজ করেন। এরপর তাঁকে সচিবও করা হয়। ২০২২ সালের শেষ দিকে তাঁকে  সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের ম্যানেজিং ডাইরেক্টরও করা হয়। দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে কাজ করার পর ২০২৩ সালের ৯জুন  শাকিল  আহমেদকে রাজ্য সরকার আএএস পদে উন্নীত করল।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

‘আইএএস’ পদে উন্নীত শাকিল আহমেদ

আপডেট : ১২ জুন ২০২৩, সোমবার

আবদুল ওদুদ: রাজ্যের সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করে যাওয়া অফিসার শাকিল আহমেদ আইএএস পদে উন্নীত হলেন। ২০২১ সালের স্টেট সিভিল সার্ভিস তালিকায় তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। গত ৯ জুন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের চিফ সেক্রেটারি পিবি গোপালিকা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে। শাকিল আহমেদ ছাড়াও আর ৯ জন ডব্লুবিসিএস অফিসারকে আইএএস পদে উন্নীত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন, সুক্তিসিতা ভট্টাচার্য, চৈতালি চক্রবর্তী, দেবযানী দত্ত, অসিতা মিশ্র, সুদীপ মিত্র, অরুন্ধুতি সরকার, মুকেশ কুমার সিং, বিজিত কুমার ধর, উৎপল ভদ্র ।

শাকিল আহমেদ বর্তমানে রাজ্য সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা এডুকেশন বিভাগের স্পেশাল   সেক্রেটারি পদে রয়েছেন। আইএএস পদে উন্নীত হওয়ায় তিনি এখন ওই দফতরেরই স্পেশাল কমিশনার পদে উন্নীত হলেন।

১৯৯২ ব্যাচের দক্ষ এই ডব্লুবিসিএস অফিসার চাকরি জীবনে প্রবেশের পরই পিছিয়ে পড়া সমাজের উন্নয়নে একাধিক পরিকল্পনা নিয়ে ছিলেন। শুরু থেকেই তিনি সমাজের বঞ্চিত ও পিছিয়ে পড়াদের কল্যানে কাজ করে এসেছেন। বিভিন্ন জেলায় নিযোগ থাকাকালীন কীভাবে মানুষের জন্য কাজ করতে হয় সেটি অন্যান্য অফিসারদের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠে ছিলেন।

অত্যন্ত দক্ষ ও নিজস্ব বুদ্ধি মত্তা, পরিশ্রমিক অফিসার হিসাবে ইতিমধ্যেই রাজ্যে তাঁর সুনাম রয়েছে। শাকিল আহমেদ পূর্ব বর্ধমানের কালনা-১ ব্লকের আধিকারিক হিসাবে ১৯৯৫ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। সেই সময় তিনি মানুষের কল্যানের জন্য উন্নয়নের কাজ করে ছিলেন। এর পর তিনি দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। ওই সময় তিনি ডিস্টিক প্ল্যানিং অফিসার হিসাবে বেশ কয়েকটি উল্লে’যোগ্য পদক্ষেপ নিয়ে ছিলেন।

উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের জন্য তাঁর অবদান উল্লেখ্যযোগ্য। তিনি প্রজেক্ট অফিসার, রাজ্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প জেলা পরষদের সচিব পদেও কাজ করেছেন। দক্ষিণ দিনাজপুরে বালুরঘাটেও বেশ কয়েক বছর কাজ করে ছিলেন। স্বল্প সময়ের জন্য পর্যটন দফতরের সচিবও ছিলেন।

দক্ষ অফিসার হয়ে সুনাম অর্জন করার জন্য ২০০৩ সালে সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের জন্য  পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্তনিগমের জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। কীভাবে সংখ্যালঘুদের উন্নয়ন করতে হবে তাঁর নানা পরিকল্পনা ওই সময় তিনি নিয়ে ছিলেন।

স্কিল ডেভলপমেন্ট ট্রেনিং তার মধ্যে অন্যতম। ওই সময়ে তাঁর গ্রহন করা পরিকল্পনা গ্রহণ করা আজও বিদ্যামান। চার বছর কাজ করার পর ২০০৭ সালে শাকিল আহমেদকে দক্ষিণ ২৪ পরগণার ক্যানিং-এর মহকুমা শাসক হিসেবে কাজ করেন। ওই সময়ে ব্লার্ড-ফ্লু মহামারি দেখা  দিলে ক্যানিং এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

 ক্যানিং-এর জটিল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগে অতন্ত দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করে ছিলেন। যার কারনে পরবর্তিতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শাকিল আহমেদ ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীনে থাকা ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের প্রশাসনিক কর্তা হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। ওই সময়ে তিনি স্বপ্ল সময়ের জন্য সচিব ও কিউরেটর পদও সামলান। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে বিভিন্ন জাতীয় আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী আয়োজনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ছিলেন। সেখানে শীর্ষ পর্যায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে রয়েছে  কলকাতার সাহিত্য সভা, অক্সফোর্ট সাহিত্য উৎসব, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে প্রশাসনিক কর্মকর্তা দায়িত্বে থাকা কালীন মেশিডোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী, সেক্রেটরি অব স্টেট হিলারি ক্লিনটন, থাইল্যান্ডের রাজকুমারি-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতির রাষ্ট্র প্রথান ও শীর্ষ পর্যায়ের অফিসারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওই সময় তিনি রাজ্যপাল, বিভিন্ন রাজ্যের মন্ত্রী , রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিদেশ সফর করেন।

 ২০১৫ সালের মে মাস থেকে  রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়ক এবং মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের  যুগ্মসচিব পদে কাজ করেন। এরপর তাঁকে সচিবও করা হয়। ২০২২ সালের শেষ দিকে তাঁকে  সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের ম্যানেজিং ডাইরেক্টরও করা হয়। দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে কাজ করার পর ২০২৩ সালের ৯জুন  শাকিল  আহমেদকে রাজ্য সরকার আএএস পদে উন্নীত করল।