০১ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ছেলের মোবাইল বিক্রি বাবার! আক্রোশে মা, বোন সহ আরও ২ জনকে খুন কিশোরের

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৮ নভেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার
  • / 13

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  মোবাইলের প্রতি আসক্তি মানুষকে যে কোথায় নিয়ে যেতে পারে,  তার মর্মান্তিক সাক্ষী থাকল ত্রিপুরা। ছেলের মোবাইল বিক্রি করে দেওয়ার জন্য নিজের পরিবারের চার সদস্যকে খুন করল ১৫ বছরের এক কিশোর। ছেলের অত্যাধিক ফোনের আসক্তি দেখেই বাবা বিরক্ত হয়ে মোবাইলটি বিক্রি করে দেন। এর পরেই ছেলের মনে আক্রোশ তৈরি হয়। সমস্ত রাগ গিয়ে পড়ে পরিবারের উপরে। নিজের দাদু, মা,  ১০ বছরের ছোট বোন ও  এক আত্মীয় খুন করে ওই কিশোর।

ত্রিপুরার ধালাই জেলার বাসিন্দা কমলপুরের দুরাই শিববাড়ি এলাকার ঘটনা। বাবা হারাধন দেবনাথ পেশায় বাস  কন্ডাক্টর। ফলে কাজে বাড়ির বাইরে ছিলেন হারাধন। সেই ফাঁকেই এই কাণ্ড ঘটায় ওই কিশোর।

রবিবার বাড়ি ফিরে হারাধন দেখেন গোটা বাড়ি নিস্তব্ধ। পরে বাড়ির উঠোনে গিয়ে দেখেন চারদিকে রক্ত ছড়িয়ে আছে। পড়ে আছে দেহ। পরে পুলিশকে সমস্ত ঘটনা জানান তিনি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কমলপুর থানার পুলিশ।

এদিকে খুনের পরই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় কিশোর। কয়েকঘন্টার মধ্যেই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

অ্যাসিস্ট্যান্ট ইনস্পেক্টর জেনারেল জ্যোতিষ্মান দাস চৌধুরী বলেছেন, ‘কমলপুর পুলিশ স্টেশনে আমরা খুন ও প্রমাণ লোপাটের মামলা  দায়ের হয়েছে। পুলিশ হালাহালি বাজার থেকে অভিযুক্তকে আটক করেছে।’

কিশোর  নিজের ৩২ বছর বয়সী মা সমিতা দেবনাথ,  ৪২ বছর বয়সী রেখা দেব নামের এক আত্মীয়, ৭০ বছরের দাদু বাদল দেবনাথ ও ১০ বছর বয়সী সূপর্ণা দেবনাথকে খুন করেছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, মোবাইলে প্রবল আসক্তি ছিল। টিভিতে সিআইডি ও ক্রাইম পেট্রল দেখত। ফোনে আসক্তির জন্য পড়াশোনায় মন ছিল না। ফলে ছেলের এই আচরণে বিরক্ত হয়ে যান বাবা। তার পরেই ছেলের ফোনটি বিক্রি করে দেন তিনি। খুনের ঘটনার দিন  ছেলেটি গেম খেলার জন্য মায়ের কাছে ফোন চায়। কিন্তু মা ফোন দিতে না পারায় ছেলের সঙ্গে অশান্তি হয়।

তারপর রেগে গিয়ে একটি বাঁশের লাঠি দিয়ে মাকে আঘাত করে কিশোর। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর মায়ের। সেই সময় এই গোটা ঘটনা দেখে ফেলে অভিযুক্তের ১০ বছরের বোন।  মেয়েটি চিৎকার করে ওঠায় সেই একই লাঠি দিয়ে বোনকেও আঘাত করে অভিযুক্ত। ছোট্ট  মেয়েটি কেন কাঁদছে তার খোঁজ নিতে এসে নাতির হাতে প্রাণ যায় দাদুরও। তারপর প্রতিবেশী অভিযুক্তের মায়ের খোঁজে তাদের বাড়ি আসলে তিনজনের মৃতদেহ দেখতে পান। তাঁকেও লাঠির আঘাতে খুন করে কিশোর। মোট চারটি খুন করেছে কিশোরটি। বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে।

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ছেলের মোবাইল বিক্রি বাবার! আক্রোশে মা, বোন সহ আরও ২ জনকে খুন কিশোরের

আপডেট : ৮ নভেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  মোবাইলের প্রতি আসক্তি মানুষকে যে কোথায় নিয়ে যেতে পারে,  তার মর্মান্তিক সাক্ষী থাকল ত্রিপুরা। ছেলের মোবাইল বিক্রি করে দেওয়ার জন্য নিজের পরিবারের চার সদস্যকে খুন করল ১৫ বছরের এক কিশোর। ছেলের অত্যাধিক ফোনের আসক্তি দেখেই বাবা বিরক্ত হয়ে মোবাইলটি বিক্রি করে দেন। এর পরেই ছেলের মনে আক্রোশ তৈরি হয়। সমস্ত রাগ গিয়ে পড়ে পরিবারের উপরে। নিজের দাদু, মা,  ১০ বছরের ছোট বোন ও  এক আত্মীয় খুন করে ওই কিশোর।

ত্রিপুরার ধালাই জেলার বাসিন্দা কমলপুরের দুরাই শিববাড়ি এলাকার ঘটনা। বাবা হারাধন দেবনাথ পেশায় বাস  কন্ডাক্টর। ফলে কাজে বাড়ির বাইরে ছিলেন হারাধন। সেই ফাঁকেই এই কাণ্ড ঘটায় ওই কিশোর।

রবিবার বাড়ি ফিরে হারাধন দেখেন গোটা বাড়ি নিস্তব্ধ। পরে বাড়ির উঠোনে গিয়ে দেখেন চারদিকে রক্ত ছড়িয়ে আছে। পড়ে আছে দেহ। পরে পুলিশকে সমস্ত ঘটনা জানান তিনি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কমলপুর থানার পুলিশ।

এদিকে খুনের পরই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় কিশোর। কয়েকঘন্টার মধ্যেই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

অ্যাসিস্ট্যান্ট ইনস্পেক্টর জেনারেল জ্যোতিষ্মান দাস চৌধুরী বলেছেন, ‘কমলপুর পুলিশ স্টেশনে আমরা খুন ও প্রমাণ লোপাটের মামলা  দায়ের হয়েছে। পুলিশ হালাহালি বাজার থেকে অভিযুক্তকে আটক করেছে।’

কিশোর  নিজের ৩২ বছর বয়সী মা সমিতা দেবনাথ,  ৪২ বছর বয়সী রেখা দেব নামের এক আত্মীয়, ৭০ বছরের দাদু বাদল দেবনাথ ও ১০ বছর বয়সী সূপর্ণা দেবনাথকে খুন করেছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, মোবাইলে প্রবল আসক্তি ছিল। টিভিতে সিআইডি ও ক্রাইম পেট্রল দেখত। ফোনে আসক্তির জন্য পড়াশোনায় মন ছিল না। ফলে ছেলের এই আচরণে বিরক্ত হয়ে যান বাবা। তার পরেই ছেলের ফোনটি বিক্রি করে দেন তিনি। খুনের ঘটনার দিন  ছেলেটি গেম খেলার জন্য মায়ের কাছে ফোন চায়। কিন্তু মা ফোন দিতে না পারায় ছেলের সঙ্গে অশান্তি হয়।

তারপর রেগে গিয়ে একটি বাঁশের লাঠি দিয়ে মাকে আঘাত করে কিশোর। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর মায়ের। সেই সময় এই গোটা ঘটনা দেখে ফেলে অভিযুক্তের ১০ বছরের বোন।  মেয়েটি চিৎকার করে ওঠায় সেই একই লাঠি দিয়ে বোনকেও আঘাত করে অভিযুক্ত। ছোট্ট  মেয়েটি কেন কাঁদছে তার খোঁজ নিতে এসে নাতির হাতে প্রাণ যায় দাদুরও। তারপর প্রতিবেশী অভিযুক্তের মায়ের খোঁজে তাদের বাড়ি আসলে তিনজনের মৃতদেহ দেখতে পান। তাঁকেও লাঠির আঘাতে খুন করে কিশোর। মোট চারটি খুন করেছে কিশোরটি। বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে।