১৩ অক্টোবর ২০২৫, সোমবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনের আগে তারেকের ফাউল, বিপাকে বিএনপি

মারুফা খাতুন
  • আপডেট : ২২ অগাস্ট ২০২৫, শুক্রবার
  • / 153

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : বাংলাদেশে নির্বাচন আসন্ন। আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবে বলে ইতিমধ্যেই ঘোষণা হয়ে গেছে এবং সেই অনুযায়ী সরকার ও প্রশাসন প্রস্তুতি চালাচ্ছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলিও ২৬-এ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে বলে মনে করে ঘুটি সাজাচ্ছে।

কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন যারা জুলাই বিপ্লবে সামনে থেকে কিংবা পিছনে দাঁড়িয়ে সমর্থন দিয়েছিল, তাদের মধ্যে এখন বেশকিছু বিরোধ চলছে।

আরও পড়ুন: খালেদা জিয়াকে দেখতে ফিরোজায় ইসহাক দার

তবে এখন সব থেকে বেশি বিপাকে পড়েছে শহীদ জিয়াউর রহমানের গড়া বিএনপি দল। খালেদা জিয়া অসুস্থতার কারণে দলের বাগডোর নিজের হাতে রাখেননি। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি এখনও বিএনপি-তে শেষ কথা বলে মনে করে বাংলাদেশী পর্যবেক্ষকরা। দল চালান তারেক রহমান। তিনি জিয়াউর রহমানের পুত্র। তারিক রহমান লন্ডনে বসে দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং প্রয়োজনে তিনি ভিডিয়ো কলে বিএনপি সমর্থকদের সম্বোধনও করে থাকেন।

আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার নির্যাতনকারীদের বিচার হওয়া উচিত : মির্জা আব্বাস

কিন্তু হাসিনা চলে যাওয়ার পরও তারেক রহমান দেশে ফেরার ঝুঁকি নিচ্ছেন না। অনেকে বলে থাকেন, এর প্রধান কারণ হচ্ছে, তাঁর বিরুদ্ধে বেশকিছু মামলা রয়েছে, যার সমাধান এখনও হয়নি। এছাড়া রয়েছে ঘুষ ও মানি লন্ডারিংয়ের কয়েকটি মামলা।

আরও পড়ুন: জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে চায় ইউনূস সরকার

বর্তমানে বাংলাদেশে সব থেকে বড় দল হিসেবে বিএনপি যখন নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত, সেই সময় লন্ডন থেকে জিয়া এমন একটি কথা বলেছেন যাতে বাংলাদেশের ইসলামপন্থী নাগরিক, বিভিন্ন সংগঠন এবং আলেম-উলামারা ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তারেক রহমান বলেছেন, দেখতে হবে বাংলাদেশ যেন মৌলবাদীদের অভয়ারণ্য হয়ে না ওঠে। তাঁর এই কথার ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়েছে।
বেশকিছু আলেম-উলামা এবং ইসলামী সংগঠন তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলছেন, বাংলাদেশের ৮৫ শতাংশ জনগণ হচ্ছে মুসলিম।

আর তারা যদি কুরআন, হাদিস মানেন, তবে কেন সেটা ‘মৌলবাদ’ হয়ে উঠবে? কিছু পীর-মাশায়েখ এবং ইসলামী রাজনৈতিক দল তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তাঁরা বলছেন, তারেকের এই বক্তব্যের সঙ্গে আওয়ামি লিগের বক্তব্যের কোনও পার্থক্য নেই। আওয়ামি লিগের নেত্রী হাসিনা ও অন্য নেতৃবৃ¨ তারা না থাকলে বাংলাদেশে মৌলবাদের উত্থান হবে বলে সব সময় ভয় দেখাতেন। তাই ইসলামপন্থীদের বক্তব্য, তারেক জিয়া কি সেই পথেই হাঁটছেন?

তাঁরা এও বলছেন, ‘হাসিনার স্বৈরাচার’কে পরাস্থ করতে যারা লড়াই করেছেন, তাদের মধ্যে তারেক জিয়া-সহ বিএনপি’র নেতৃবৃ¨ সামিল ছিলেন না। আর যারা বাংলাদেশে জুলাই বিপ্লবে প্রাণ দিয়েছেন সেই ছাত্র-যুবকদের বেশির ভাগই ছিলেন ইসলামে বিশ্বাসী। এখন তারেক জিয়া দূর থেকে যেসব কথা বলছেন তাতে হয়তো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমারা খুশি হবে। কিন্তু তাদের খুশি করার জন্য ছাত্র-যুবকরা প্রাণ দেয়নি, আহত হয়নি।

তবে বিএনপি-র অনেক নেতা সাংবাদিকদের বলেছেন, তারেক জিয়া পরে আর একটি বিবৃতি দিয়ে এই পরিস্থিতি ঠিকই সামলে নেবেন। অনেকে আবার এও বলছেন, নির্বাচনের আর বেশি দেরি নেই। তার আগে বিএনপি-র নেতা হিসেবে তারেক জিয়ার এমন ফাউল করা উচিত হয়নি।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

নির্বাচনের আগে তারেকের ফাউল, বিপাকে বিএনপি

আপডেট : ২২ অগাস্ট ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : বাংলাদেশে নির্বাচন আসন্ন। আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবে বলে ইতিমধ্যেই ঘোষণা হয়ে গেছে এবং সেই অনুযায়ী সরকার ও প্রশাসন প্রস্তুতি চালাচ্ছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলিও ২৬-এ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে বলে মনে করে ঘুটি সাজাচ্ছে।

কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন যারা জুলাই বিপ্লবে সামনে থেকে কিংবা পিছনে দাঁড়িয়ে সমর্থন দিয়েছিল, তাদের মধ্যে এখন বেশকিছু বিরোধ চলছে।

আরও পড়ুন: খালেদা জিয়াকে দেখতে ফিরোজায় ইসহাক দার

তবে এখন সব থেকে বেশি বিপাকে পড়েছে শহীদ জিয়াউর রহমানের গড়া বিএনপি দল। খালেদা জিয়া অসুস্থতার কারণে দলের বাগডোর নিজের হাতে রাখেননি। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি এখনও বিএনপি-তে শেষ কথা বলে মনে করে বাংলাদেশী পর্যবেক্ষকরা। দল চালান তারেক রহমান। তিনি জিয়াউর রহমানের পুত্র। তারিক রহমান লন্ডনে বসে দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং প্রয়োজনে তিনি ভিডিয়ো কলে বিএনপি সমর্থকদের সম্বোধনও করে থাকেন।

আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার নির্যাতনকারীদের বিচার হওয়া উচিত : মির্জা আব্বাস

কিন্তু হাসিনা চলে যাওয়ার পরও তারেক রহমান দেশে ফেরার ঝুঁকি নিচ্ছেন না। অনেকে বলে থাকেন, এর প্রধান কারণ হচ্ছে, তাঁর বিরুদ্ধে বেশকিছু মামলা রয়েছে, যার সমাধান এখনও হয়নি। এছাড়া রয়েছে ঘুষ ও মানি লন্ডারিংয়ের কয়েকটি মামলা।

আরও পড়ুন: জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে চায় ইউনূস সরকার

বর্তমানে বাংলাদেশে সব থেকে বড় দল হিসেবে বিএনপি যখন নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত, সেই সময় লন্ডন থেকে জিয়া এমন একটি কথা বলেছেন যাতে বাংলাদেশের ইসলামপন্থী নাগরিক, বিভিন্ন সংগঠন এবং আলেম-উলামারা ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তারেক রহমান বলেছেন, দেখতে হবে বাংলাদেশ যেন মৌলবাদীদের অভয়ারণ্য হয়ে না ওঠে। তাঁর এই কথার ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়েছে।
বেশকিছু আলেম-উলামা এবং ইসলামী সংগঠন তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলছেন, বাংলাদেশের ৮৫ শতাংশ জনগণ হচ্ছে মুসলিম।

আর তারা যদি কুরআন, হাদিস মানেন, তবে কেন সেটা ‘মৌলবাদ’ হয়ে উঠবে? কিছু পীর-মাশায়েখ এবং ইসলামী রাজনৈতিক দল তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তাঁরা বলছেন, তারেকের এই বক্তব্যের সঙ্গে আওয়ামি লিগের বক্তব্যের কোনও পার্থক্য নেই। আওয়ামি লিগের নেত্রী হাসিনা ও অন্য নেতৃবৃ¨ তারা না থাকলে বাংলাদেশে মৌলবাদের উত্থান হবে বলে সব সময় ভয় দেখাতেন। তাই ইসলামপন্থীদের বক্তব্য, তারেক জিয়া কি সেই পথেই হাঁটছেন?

তাঁরা এও বলছেন, ‘হাসিনার স্বৈরাচার’কে পরাস্থ করতে যারা লড়াই করেছেন, তাদের মধ্যে তারেক জিয়া-সহ বিএনপি’র নেতৃবৃ¨ সামিল ছিলেন না। আর যারা বাংলাদেশে জুলাই বিপ্লবে প্রাণ দিয়েছেন সেই ছাত্র-যুবকদের বেশির ভাগই ছিলেন ইসলামে বিশ্বাসী। এখন তারেক জিয়া দূর থেকে যেসব কথা বলছেন তাতে হয়তো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমারা খুশি হবে। কিন্তু তাদের খুশি করার জন্য ছাত্র-যুবকরা প্রাণ দেয়নি, আহত হয়নি।

তবে বিএনপি-র অনেক নেতা সাংবাদিকদের বলেছেন, তারেক জিয়া পরে আর একটি বিবৃতি দিয়ে এই পরিস্থিতি ঠিকই সামলে নেবেন। অনেকে আবার এও বলছেন, নির্বাচনের আর বেশি দেরি নেই। তার আগে বিএনপি-র নেতা হিসেবে তারেক জিয়ার এমন ফাউল করা উচিত হয়নি।