১৭ অক্টোবর ২০২৫, শুক্রবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আর্থিকভাবে গরিবদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৭ নভেম্বর ২০২২, সোমবার
  • / 60

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের রায় সোমবার বড় জয় এনে দিল মোদি সরকারকে। সংরক্ষণের বাইরে থাকা ও উচ্চবর্ণের আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণি (ইডব্লিউএস)-র জন্য কলেজ এবং সরকারি চাকরিতে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ বজায় রাখল শীর্ষ আদালত।

পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। দরিদ্র শ্রেণির জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ যে বৈধ তা মেনে নিয়েছেন পাঁচজন বিচারপতির মধ্যে তিনজনই। সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত যে বৈধ, তার পক্ষে রায় দিয়েছেন বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী, বিচারপতি বেলা ত্রিবেদী এবং বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা।

আরও পড়ুন: এসআইআর শেষ পর্যন্ত দেখবে আদালত: এসআইআর নিয়ে পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের

তবে মতানৈক্যের পথে হেঁটেছেন প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিত এবং বিচারপতি এস আর ভাট। বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী তাঁর রায়ে বলেছেন, ১০৩তম সাংবিধানিক সংশোধন দেশের সংবিধানের মূল কাঠামোর বিরোধিতা করে না। এই সংশোধনে ইডব্লিউএস বা আর্থিকভাবে গরিব শ্রেণির আওতা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এসইবিসি, ওবিসি, এসএস/এসটিদের। এই সংশোধন বৈধ বলে রায় দিয়েছেন তিনজন বিচারপতি।

আরও পড়ুন: SIR নিয়ে আজ ফের শুনানি সুপ্রিম কোর্টে

বিচারপতি বেলা ত্রিবেদী সংশোধনের পক্ষে রায় দিতে গিয়ে বলেছেন, সংবিধানের ১০৩ সংশোধনকে বৈষম্যমূলক বলা চলে না। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের সংরক্ষণ নীতির সমীক্ষা করার প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল।

আরও পড়ুন: সুপ্রিম ঘটনার পুনরাবৃত্তি, ফের বিচারককে জুতো ছুটে মারলেন মামলাকারী

পক্ষে রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা লিখেছেন, সংরক্ষণ হল আর্থিক ন্যায় অর্জন করার একটি মাধ্যম। এই মাধ্যমকে সংকীর্ণ স্বার্থান্বেষীদের হাতে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। তবে বিচারপতি পার্দিওয়ালা এও বলেছেন, সংরক্ষণ অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত চলতে পারে না। অপরদিকে বিপক্ষে রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি এসআর ভাট বলেছেন, ১০৩তম সাংবিধানিক সংশোধন বৈষম্যমূলক।

 

ইডব্লিউএস বা আর্থিকভাবে দরিদ্র শ্রেণির পরিধি থেকে এস/এসটি এবং ওবিসি সম্প্রদায়কে বাদ দেওয়া বৈষম্যমূলক। এই সংশোধনী সংবিধানে বর্ণিত সবশ্রেণির মানুষের সমতার নীতিকে আঘাত করেছে। বিচারপতি ভাটের পর্যবেক্ষণের সঙ্গে সহমত পোষণ করে প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিতও ১০৩তম সংবিধান সংশোধনের বিপক্ষে রায় দিয়েছেন।

 

প্রসঙ্গত, মোদি সরকার ১০৩তম সংবিধান সংশোধন করতে গিয়ে ১৫(৬) এবং ১৬(৬) নং ধারা সংযোজন করেছে। এই নতুন ধারায় এসসি/এসটি এবং ওবিসিকে বাদ দিয়ে আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণিকে কলেজে এবং সরকারি চাকরিতে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়া হবে। সংরক্ষণ দেওয়া হবে তাদেরই যাদের বাৎসরিক আয় ৮ লাখ টাকার নীচে।

 

১০৩নং সাংবিধানিক সংশোধনীকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। এখন আদালত এ বিচারও করবে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়ার ফলে সংরক্ষণ ৫০ শতাংশের বেশি হচ্ছে কি না, কারণ সুপ্রিম কোর্ট ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের সীমা ধার্য করেছিল। ১০ শতাংশ ইডব্লিউএস সংরক্ষণের বিরোধিতা করেছে তামিলনাড়ু। তবে একে সমর্থন করেছে মধ্যপ্রদেশ, অসম এবং অন্ধ্রপ্রদেশ।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

আর্থিকভাবে গরিবদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট

আপডেট : ৭ নভেম্বর ২০২২, সোমবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের রায় সোমবার বড় জয় এনে দিল মোদি সরকারকে। সংরক্ষণের বাইরে থাকা ও উচ্চবর্ণের আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণি (ইডব্লিউএস)-র জন্য কলেজ এবং সরকারি চাকরিতে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ বজায় রাখল শীর্ষ আদালত।

পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। দরিদ্র শ্রেণির জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ যে বৈধ তা মেনে নিয়েছেন পাঁচজন বিচারপতির মধ্যে তিনজনই। সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত যে বৈধ, তার পক্ষে রায় দিয়েছেন বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী, বিচারপতি বেলা ত্রিবেদী এবং বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা।

আরও পড়ুন: এসআইআর শেষ পর্যন্ত দেখবে আদালত: এসআইআর নিয়ে পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের

তবে মতানৈক্যের পথে হেঁটেছেন প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিত এবং বিচারপতি এস আর ভাট। বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী তাঁর রায়ে বলেছেন, ১০৩তম সাংবিধানিক সংশোধন দেশের সংবিধানের মূল কাঠামোর বিরোধিতা করে না। এই সংশোধনে ইডব্লিউএস বা আর্থিকভাবে গরিব শ্রেণির আওতা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এসইবিসি, ওবিসি, এসএস/এসটিদের। এই সংশোধন বৈধ বলে রায় দিয়েছেন তিনজন বিচারপতি।

আরও পড়ুন: SIR নিয়ে আজ ফের শুনানি সুপ্রিম কোর্টে

বিচারপতি বেলা ত্রিবেদী সংশোধনের পক্ষে রায় দিতে গিয়ে বলেছেন, সংবিধানের ১০৩ সংশোধনকে বৈষম্যমূলক বলা চলে না। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের সংরক্ষণ নীতির সমীক্ষা করার প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল।

আরও পড়ুন: সুপ্রিম ঘটনার পুনরাবৃত্তি, ফের বিচারককে জুতো ছুটে মারলেন মামলাকারী

পক্ষে রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা লিখেছেন, সংরক্ষণ হল আর্থিক ন্যায় অর্জন করার একটি মাধ্যম। এই মাধ্যমকে সংকীর্ণ স্বার্থান্বেষীদের হাতে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। তবে বিচারপতি পার্দিওয়ালা এও বলেছেন, সংরক্ষণ অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত চলতে পারে না। অপরদিকে বিপক্ষে রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি এসআর ভাট বলেছেন, ১০৩তম সাংবিধানিক সংশোধন বৈষম্যমূলক।

 

ইডব্লিউএস বা আর্থিকভাবে দরিদ্র শ্রেণির পরিধি থেকে এস/এসটি এবং ওবিসি সম্প্রদায়কে বাদ দেওয়া বৈষম্যমূলক। এই সংশোধনী সংবিধানে বর্ণিত সবশ্রেণির মানুষের সমতার নীতিকে আঘাত করেছে। বিচারপতি ভাটের পর্যবেক্ষণের সঙ্গে সহমত পোষণ করে প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিতও ১০৩তম সংবিধান সংশোধনের বিপক্ষে রায় দিয়েছেন।

 

প্রসঙ্গত, মোদি সরকার ১০৩তম সংবিধান সংশোধন করতে গিয়ে ১৫(৬) এবং ১৬(৬) নং ধারা সংযোজন করেছে। এই নতুন ধারায় এসসি/এসটি এবং ওবিসিকে বাদ দিয়ে আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণিকে কলেজে এবং সরকারি চাকরিতে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়া হবে। সংরক্ষণ দেওয়া হবে তাদেরই যাদের বাৎসরিক আয় ৮ লাখ টাকার নীচে।

 

১০৩নং সাংবিধানিক সংশোধনীকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। এখন আদালত এ বিচারও করবে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়ার ফলে সংরক্ষণ ৫০ শতাংশের বেশি হচ্ছে কি না, কারণ সুপ্রিম কোর্ট ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের সীমা ধার্য করেছিল। ১০ শতাংশ ইডব্লিউএস সংরক্ষণের বিরোধিতা করেছে তামিলনাড়ু। তবে একে সমর্থন করেছে মধ্যপ্রদেশ, অসম এবং অন্ধ্রপ্রদেশ।