০৫ অক্টোবর ২০২৫, রবিবার, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মহাকাশে আটকে পড়া নভোচারীদের ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব মাস্ককে দিলেন ট্রাম্প!

আবুল খায়ের
  • আপডেট : ৩০ জানুয়ারী ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 432

প্রায় আট মাস ধরে পৃথিবীতে ফিরতে পারছেন না বাচ উইলমোর এবং সুনিতা উইলিয়ামস

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: মহাকাশ স্টেশনে আটকে পড়া নভোচারী বাচ উইলমোর এবং সুনিতা উইলিয়ামসকে দ্রুত ফিরিয়ে আনতে ইলন মাস্ককে নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ এ কথা জানান মাস্ক। তবে এই ঘোষণার ফলে নাসার সামনে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে। এক্স-এর এক পোস্টে মাস্ক বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দুই বোয়িং স্টারলাইনার-এর নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোরকে ফিরিয়ে আনতে বলেছেন। তাঁরা ২০২৪ সালের জুন থেকে মহাকাশ স্টেশনে রয়েছেন। জো বাইডেনের প্রশাসন দুই নভোচারীকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে এতদিন সেখানে রেখেছে তা দুর্ভাগ্যজনক। বিষয়টি নিয়ে মাস্ক কেবল ব্যঙ্গ করেছেন বলে অনেকেই মনে করেন। তবে, এই মন্তব্য নাসার জন্য বেশকিছু জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। কারণ নাসা অনেক আগেই বলেছে যে, বাচ উইলমোর এবং সুনিতা উইলিয়ামস মহাকাশ স্টেশনে আটকে পড়েননি। তাদের জন্য একটি সুরক্ষিত ব্যবস্থা রয়েছে।
নতুন ঘোষণাটি ট্রাম্প ও মাস্কের রাজনৈতিক কৌশল হতে পারে। কারণ, প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেনকে ব্যর্থ প্রমাণিত করতে চান ট্রাম্প। তবে, নাসা এবং স্পেস এক্স এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। নভোচারীদের কিছুটা দেরিতে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কোনও ঝুঁকি দেখতে পাচ্ছে না নাসা। কারণ উইলমোর এবং উইলিয়ামস সুস্থ আছেন এবং তাদের কাছে পর্যাপ্ত খাবার এবং কাপড় রয়েছে।
নাসার নভোচারীদের দ্রুত ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিলে ত্রু«-৯ মিশনে একাধিক পরিবর্তন আসতে পারে। উল্লেখ্য, ত্রু«-৯ হল স্পেস এক্স-এর একটি মিশন যা নাসার মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এটি স্পেস এক্স-এর ফ্যালকন ৯ রকেট এবং ড্রাগন ক্যাপসুল ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে নভোচারীদের পাঠায়।

তবে এই দুই নভোচারী দ্রুত ফিরে এলে মহাকাশ স্টেশনটি পরিচালনায় বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেখানে শুধু ডন পেটিট নামের একজন মহাকাশচারী থাকবেন। তিনি বেশ অভিজ্ঞ হলেও তার ওপর এত দায়িত্ব চাপানো ঠিক হবে না। এই মিশনটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এতে মহাকাশে একটি স্পেসওয়াক (মহাকাশে বাইরে কাজ) এবং কিছু জরুরি প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পরিকল্পনা ছিল।
নভোচারীদের ফেরার তারিখ এখন ত্রু-১০ মিশনের ওপর নির্ভর করছে। এই মিশনে নতুন একটি ড্রাগন স্পেসক্রাফট ব্যবহার হবে। আরও প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে ২৫ মার্চ উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করেছে স্পেস এক্স। যদি ২৫ মার্চে উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা মেনে চলে, তবে স্পেসএক্স-কে একটি পুরোনো ড্রাগন স্পেসক্রাফট ব্যবহার করতে হতে পারে। এই মহাকাশযানটি মূলত অন্য একটি মিশন ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’ এর জন্য তৈরি হয়েছিল। এই মিশনে স্পেস এক্স একটি নতুন ড্রাগন স্পেসক্রাফট ব্যবহার করতে চায়। তবে স্পেস এক্স আরও কিছু সময় চেয়েছে যাতে তারা এই নতুন স্পেসক্রাফটটি সঠিকভাবে প্রস্তুত করতে পারে।’

আরও পড়ুন: মোদির বজ্রকন্ঠ কেড়ে নিয়েছেন Donald Trump: জয়রাম রমেশ

আবার মার্চের শেষের ত্রু«-১০ মিশনটি উৎক্ষেপণের তারিখ থেকে পিছিয়ে গেলে আরও সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। কারণ, পেটিট রাশিয়ার সয়ুজ যান দিয়ে মহাকাশ স্টেশনে গিয়েছিলেন এবং তার ফেরার তারিখ ২০ এপ্রিল। সয়ুজ স্পেসক্রাফটটি ২১০ দিন পর্যন্ত মহাকাশে থাকতে পারবে, কিন্তু ২০ এপ্রিল তাদের যাত্রার ২২১ দিন পূর্ণ হবে। তাই, ২০ এপ্রিল সম্ভবত সয়ুজ মিশনের শেষ সময়সীমা এবং তারপর ওই মিশন আর চালানো সম্ভব নাও হতে পারে। এভাবে উইলমোর এবং উইলিয়ামসকে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে নাসার জন্য একাধিক চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।
গত বছরের ৫ জুন মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের তৈরি স্টারলাইনার মহাকাশযানে চড়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গিয়েছিলেন নাসার দুই নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর। মাত্র আট দিন মহাকাশ স্টেশনে থাকার কথা থাকলেও নিজেদের মহাকাশযান ফুটো হয়ে হিলিয়াম গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি ইঞ্জিনে গোলযোগ দেখা দেওয়ায় প্রায় আট মাস ধরে পৃথিবীতে ফিরতে পারছেন না তাঁরা।

আরও পড়ুন: ভারত ও চিনের উপর ১০০% শুল্ক আরোপের জন্য ইইউ-কে চাপ ট্রাম্পের

আরও পড়ুন: Ukraine War: শান্তি না হলে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার হুমকি ট্রাম্পের

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

মহাকাশে আটকে পড়া নভোচারীদের ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব মাস্ককে দিলেন ট্রাম্প!

আপডেট : ৩০ জানুয়ারী ২০২৫, বৃহস্পতিবার

প্রায় আট মাস ধরে পৃথিবীতে ফিরতে পারছেন না বাচ উইলমোর এবং সুনিতা উইলিয়ামস

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: মহাকাশ স্টেশনে আটকে পড়া নভোচারী বাচ উইলমোর এবং সুনিতা উইলিয়ামসকে দ্রুত ফিরিয়ে আনতে ইলন মাস্ককে নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ এ কথা জানান মাস্ক। তবে এই ঘোষণার ফলে নাসার সামনে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে। এক্স-এর এক পোস্টে মাস্ক বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দুই বোয়িং স্টারলাইনার-এর নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোরকে ফিরিয়ে আনতে বলেছেন। তাঁরা ২০২৪ সালের জুন থেকে মহাকাশ স্টেশনে রয়েছেন। জো বাইডেনের প্রশাসন দুই নভোচারীকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে এতদিন সেখানে রেখেছে তা দুর্ভাগ্যজনক। বিষয়টি নিয়ে মাস্ক কেবল ব্যঙ্গ করেছেন বলে অনেকেই মনে করেন। তবে, এই মন্তব্য নাসার জন্য বেশকিছু জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। কারণ নাসা অনেক আগেই বলেছে যে, বাচ উইলমোর এবং সুনিতা উইলিয়ামস মহাকাশ স্টেশনে আটকে পড়েননি। তাদের জন্য একটি সুরক্ষিত ব্যবস্থা রয়েছে।
নতুন ঘোষণাটি ট্রাম্প ও মাস্কের রাজনৈতিক কৌশল হতে পারে। কারণ, প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেনকে ব্যর্থ প্রমাণিত করতে চান ট্রাম্প। তবে, নাসা এবং স্পেস এক্স এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। নভোচারীদের কিছুটা দেরিতে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কোনও ঝুঁকি দেখতে পাচ্ছে না নাসা। কারণ উইলমোর এবং উইলিয়ামস সুস্থ আছেন এবং তাদের কাছে পর্যাপ্ত খাবার এবং কাপড় রয়েছে।
নাসার নভোচারীদের দ্রুত ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিলে ত্রু«-৯ মিশনে একাধিক পরিবর্তন আসতে পারে। উল্লেখ্য, ত্রু«-৯ হল স্পেস এক্স-এর একটি মিশন যা নাসার মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এটি স্পেস এক্স-এর ফ্যালকন ৯ রকেট এবং ড্রাগন ক্যাপসুল ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে নভোচারীদের পাঠায়।

তবে এই দুই নভোচারী দ্রুত ফিরে এলে মহাকাশ স্টেশনটি পরিচালনায় বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেখানে শুধু ডন পেটিট নামের একজন মহাকাশচারী থাকবেন। তিনি বেশ অভিজ্ঞ হলেও তার ওপর এত দায়িত্ব চাপানো ঠিক হবে না। এই মিশনটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এতে মহাকাশে একটি স্পেসওয়াক (মহাকাশে বাইরে কাজ) এবং কিছু জরুরি প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পরিকল্পনা ছিল।
নভোচারীদের ফেরার তারিখ এখন ত্রু-১০ মিশনের ওপর নির্ভর করছে। এই মিশনে নতুন একটি ড্রাগন স্পেসক্রাফট ব্যবহার হবে। আরও প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে ২৫ মার্চ উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করেছে স্পেস এক্স। যদি ২৫ মার্চে উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা মেনে চলে, তবে স্পেসএক্স-কে একটি পুরোনো ড্রাগন স্পেসক্রাফট ব্যবহার করতে হতে পারে। এই মহাকাশযানটি মূলত অন্য একটি মিশন ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’ এর জন্য তৈরি হয়েছিল। এই মিশনে স্পেস এক্স একটি নতুন ড্রাগন স্পেসক্রাফট ব্যবহার করতে চায়। তবে স্পেস এক্স আরও কিছু সময় চেয়েছে যাতে তারা এই নতুন স্পেসক্রাফটটি সঠিকভাবে প্রস্তুত করতে পারে।’

আরও পড়ুন: মোদির বজ্রকন্ঠ কেড়ে নিয়েছেন Donald Trump: জয়রাম রমেশ

আবার মার্চের শেষের ত্রু«-১০ মিশনটি উৎক্ষেপণের তারিখ থেকে পিছিয়ে গেলে আরও সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। কারণ, পেটিট রাশিয়ার সয়ুজ যান দিয়ে মহাকাশ স্টেশনে গিয়েছিলেন এবং তার ফেরার তারিখ ২০ এপ্রিল। সয়ুজ স্পেসক্রাফটটি ২১০ দিন পর্যন্ত মহাকাশে থাকতে পারবে, কিন্তু ২০ এপ্রিল তাদের যাত্রার ২২১ দিন পূর্ণ হবে। তাই, ২০ এপ্রিল সম্ভবত সয়ুজ মিশনের শেষ সময়সীমা এবং তারপর ওই মিশন আর চালানো সম্ভব নাও হতে পারে। এভাবে উইলমোর এবং উইলিয়ামসকে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে নাসার জন্য একাধিক চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।
গত বছরের ৫ জুন মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের তৈরি স্টারলাইনার মহাকাশযানে চড়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গিয়েছিলেন নাসার দুই নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর। মাত্র আট দিন মহাকাশ স্টেশনে থাকার কথা থাকলেও নিজেদের মহাকাশযান ফুটো হয়ে হিলিয়াম গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি ইঞ্জিনে গোলযোগ দেখা দেওয়ায় প্রায় আট মাস ধরে পৃথিবীতে ফিরতে পারছেন না তাঁরা।

আরও পড়ুন: ভারত ও চিনের উপর ১০০% শুল্ক আরোপের জন্য ইইউ-কে চাপ ট্রাম্পের

আরও পড়ুন: Ukraine War: শান্তি না হলে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার হুমকি ট্রাম্পের