আমেরিকার আমদানি নীতিতে বড় সিদ্ধান্ত: তামার উপর ৫০% শুল্ক, ওষুধে ২০০% কর আরোপের হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের -চিন্তায় ভারত!

- আপডেট : ৯ জুলাই ২০২৫, বুধবার
- / 209
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের একবার আক্রমণাত্মক বাণিজ্য নীতি গ্রহণ করলেন। অ্যালুমিনিয়াম ও ইস্পাতজাত পণ্যের পর এ বার আমদানি করা তামার উপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলেন তিনি। একই সঙ্গে জানালেন, ভবিষ্যতে আমদানিকৃত ওষুধের উপর শুল্কের হার ২০০% পর্যন্ত বাড়তে পারে। তবে আপাতত ওষুধে শুল্ক কার্যকর করছে না ট্রাম্প প্রশাসন।
এই সিদ্ধান্ত ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ভারত তামা ও তামাজাত পণ্য এবং ওষুধ শিল্প— দুই ক্ষেত্রেই মার্কিন বাজারের ওপর নির্ভরশীল।
মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) ওয়াশিংটনে একটি ক্যাবিনেট বৈঠকে তামার উপর শুল্ক আরোপের প্রস্তাব অনুমোদন করেন ট্রাম্প। বৈঠকের পরে তিনি বলেন, “আমরা তামার উপর আমদানি শুল্ক আরোপ করছি। এটি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে।” মার্কিন বাণিজ্য সচিব হওয়ার্ড লুটনিক ‘CNBC’-কে জানিয়েছেন, এই নতুন শুল্ক জুলাইয়ের শেষে অথবা ১ অগস্ট থেকে কার্যকর হতে পারে।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, ওষুধ শিল্পে আমদানিকৃত পণ্যের উপর ২০০% পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ভাবনা রয়েছে। তবে এখনও তা কার্যকর হচ্ছে না। ট্রাম্প বলেছেন, “আমরা এক থেকে দেড় বছর সময় দেব। তারপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করা হবে।”
ভারত দীর্ঘদিন ধরেই আমেরিকার বড় ওষুধ সরবরাহকারী দেশ। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ভারত আমেরিকায় ২৭৯০ কোটি মার্কিন ডলারের ওষুধ রফতানি করেছে। পাশাপাশি, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ৩৬ কোটি মার্কিন ডলারের তামা ও তামাজাত পণ্য রফতানি করেছে। এই দুটি ক্ষেত্রেই ভারতের রফতানি বাণিজ্য ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
তামা ও ওষুধ ছাড়াও ট্রাম্পের আক্রমণের নিশানায় এসেছে ব্রিকস জোট। তাঁর অভিযোগ, “ব্রিকস্ জোট আমেরিকার ক্ষতি করার উদ্দেশ্যেই গঠিত।” তাই খুব শীঘ্রই ব্রিকসের সদস্য দেশগুলির উপর ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের হুমকি দেন তিনি।
ট্রাম্প বলেন, “কেউ যদি ডলারকে চ্যালেঞ্জ করতে চায়, তবে তার মূল্য চোকাতে হবে।” তাঁর মন্তব্য, “যদি তারা সেই খেলা খেলতে চায়, আমিও খেলতে প্রস্তুত!”
এই ঘোষণাগুলি শুধু ভারত নয়, বিশ্বের বহু দেশকেই চিন্তায় ফেলেছে। একদিকে বাড়তে থাকা শুল্ক, অন্যদিকে বৈশ্বিক বাণিজ্য সংস্থাগুলির প্রতি ট্রাম্পের অবিশ্বাস — সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে অনিশ্চয়তা বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের এই ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি আবারও মাথাচাড়া দিচ্ছে। আর তার প্রভাব পড়তে চলেছে ভারত-সহ বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতিতে।