০৪ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্যর্থ দাওয়াই! প্রাচীন টোটকা মেনেই সারিয়ে ফেলুন দাঁতের পোকা

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২২, শনিবার
  • / 78

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: দাঁতের ক্ষয় এবং গর্ত হওয়াকে অনেকেই দাঁতে পোকা বলে অভিহিত করে থাকে। তবে শত গবেষণার পরও দাঁতের পোকার অস্তিত্ব এখনও পর্যন্ত খুঁজে পাননি বিজ্ঞানীরা।

 

আরও পড়ুন: বারুইপুর থেকে উদ্ধার ৩৫ কেজি গাঁজা, ধৃত তিন

তবে বিজ্ঞানীদের কথায়, সাধারণত চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাদ্য সেবন করার পর , সঠিকভাবে ব্রাশ না করলে সেই খাবার আমাদের মুখের ভেতরে এক ধরনের জীবাণুর সঙ্গে মিশে গিয়ে অ্যাসিড তৈরি করে।

আরও পড়ুন: ‘মাদককে না বলি, মাদকমুক্ত সমাজ গড়ি’, আন্তর্জাতিক মাদক বিরোধী দিবসে  বার্তা হাওড়া সিটি পুলিশের

 

আরও পড়ুন: গুজরাতে ১৫৭ স্কুলে মাধ্যমিকে সবাই ফেল

এই অ্যাসিড দাঁতের ওপরের শক্ত আবরণ এনামেলকে ক্ষয় করে এবং পরে গর্তের সৃষ্টি করে। এ রোগের নাম ডেন্টাল ক্যারিজ। আর একেই প্রচলিত ভাষ্যে বলা হয় দাঁতের পোকা।

 

তবে শুধু মিষ্টি জাতীয় খাদ্য সেবনে দাঁতে পোকা হয় এমনটা নয়। একাধিক কারণের জন্য দাঁতে পোকা হয়। আর বেশিরভাগ পিছনের দাঁতে এই পোকা গুলি হয়ে থাকে।

 

ডেন্টাল ক্যারিজ প্রাথমিক অবস্থায় খুবই ছোট কালো গর্তের মতো দেখায়। এ অবস্থায় কোনো ব্যথা বা অসুবিধা না থাকায় রোগীরা, বুঝে উঠতে পারে না যে গর্ত তৈরি হচ্ছে। জটিলতা হওয়ার পরই কেবল ধরা পড়ে।

 

মূলত দাঁতের ওপরে একটি কালো, তিলের আকৃতির মত দাগ দেখা যায়। আর এটির জন্য ধীরে ধীরে দাঁত ফাঁপা হতে শুরু করে। সেই সঙ্গে দাঁতে ব্যথা, মুখ থেকে রক্ত ​​পড়া এবং দাঁত হলুদ হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গও দেখা দিতে শুরু করে।

 

ক্যাভিটি হচ্ছে বুঝতে পারলে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসা শুরু করুন। কারণ দাঁতে ব্যথা যেমন যন্ত্রণাদায়ক , দাঁতের চিকিৎসা ঠিক তেমনই কষ্টকর।

 

তবে দাঁতে ‘ ক্যাভিটি হচ্ছে’ প্রাথমিক পর্যায়ে বুঝতে পারলে বাড়িতেই সারিয়ে তুলতে পারবেন।

 

ঘরোয়া উপায়ে ক্যাভিটি থেকে মুক্তি পাবেন কীভাবে, তা দেখে নিন একনজরে…

 

লবঙ্গের তেল:

 

যুগ যুগ ধরে ভারত ও চিনে দাঁতের ব্যথার জন্য লবঙ্গ তেল ব্যবহার করা হয়ে আসছে । এর মধ্যে ইউগোনেল নামের একটি উপাদান থাকে যা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করে। লবঙ্গ খারাপ ব্যাকটেরিয়াকে নষ্ট করে ভাল ব্যাকটেরিয়াদের অক্ষত রাখে।

 

দিনে ২/৩ থেকে বার আক্রান্ত স্থানে লবঙ্গের তেল লাগালে যন্ত্রণাদায়ক এই ব্যথা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। এই তেলের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়ালের মত বিশেষ গুণ রয়েছে যেটি দাঁতের গহ্বর প্রতিরোধে বিশেষ সাহায্য করে।

 

পেয়ারা পাতা:

 

পেয়ারা পাতায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এর বিশেষ গুণ রয়েছে যা ক্যাভিটি প্রতিরোধে উপকারী। এই পাতাকে আপনি মাউথওয়াশ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

এই মাউথওয়াশ বানানোর জন্য প্রথমেই আপনাকে পেয়ারা পাতাকে টুকরো টুকরো করে কেটে নিতে হবে। তারপর ওভেনে রাখা ফুটন্ত জলে এই পাতা গুলো দিতে হবে। ফুটিয়ে নেওয়ার পর যেই জলটা থাকবে সেটি মুখ ধোয়ার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

 

রসুন:

 

মুখের ভিতরের নানান রকমের রোগ জীবাণু থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন খালি পেটে এক টুকরো করে রসুন খাওয়া উচিত। মুখের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য রসুন একটি অপরিহার্য উপাদান। রসুন দাঁতের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে কারণ এটি ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয় রসুন কে টুকরো টুকরো করে কেটে, সেটিকে অল্প বেটে নিয়ে ক্যাভিটি আক্রান্ত দাঁতে লাগিয়ে দিলে যন্ত্রণা থেকে আরাম পাওয়া যায়।

 

ডিমের খোসা:

 

ক্যাভিটি দুর করতে ডিমের খোসার জুড়ি মেলা ভার, এটা হয়তো অনেকেই জানেন না। কিন্তু অবাক করার বিষয় হল এটাই সত্যি। সাধারণত ডিমের খোসাগুলি দাঁতে সমস্ত ক্ষয় দূর করতে সহায়তা করে। তার জন্য বানাতে হবে একটি উপকরণ, সেই উপকরণ হল প্রথমেই ডিমের খোসাগুলি কয়েক মিনিটের জন্য সেদ্ধ করতে হবে এবং তারপরে সেগুলিকে শুকিয়ে নিতে হবে। তারপর এটি শুকিয়ে গেলে এই খোসা গুলিকে পিষে গুঁড়ো গুঁড়ো করে নিন, তারপর এর মধ্যে বেকিং সোডা যোগ করুন, দুটি উপাদান মিশিয়ে একটি পাউডার তৈরি করুন। ডিমের খোসায় থাকা ক্যালসিয়াম এবং খনিজ প্রাকৃতিকভাবে দাঁতের এনামেল পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে।

 

এই ঘরোয়া টোটকা কাজ না করলে আপনাকে অবশ্যই সচেষ্ট হতে হবে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। তিনিই আপনাকে সঠিক পরামর্শ দিতে পারবেন।

 

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ব্যর্থ দাওয়াই! প্রাচীন টোটকা মেনেই সারিয়ে ফেলুন দাঁতের পোকা

আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২২, শনিবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: দাঁতের ক্ষয় এবং গর্ত হওয়াকে অনেকেই দাঁতে পোকা বলে অভিহিত করে থাকে। তবে শত গবেষণার পরও দাঁতের পোকার অস্তিত্ব এখনও পর্যন্ত খুঁজে পাননি বিজ্ঞানীরা।

 

আরও পড়ুন: বারুইপুর থেকে উদ্ধার ৩৫ কেজি গাঁজা, ধৃত তিন

তবে বিজ্ঞানীদের কথায়, সাধারণত চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাদ্য সেবন করার পর , সঠিকভাবে ব্রাশ না করলে সেই খাবার আমাদের মুখের ভেতরে এক ধরনের জীবাণুর সঙ্গে মিশে গিয়ে অ্যাসিড তৈরি করে।

আরও পড়ুন: ‘মাদককে না বলি, মাদকমুক্ত সমাজ গড়ি’, আন্তর্জাতিক মাদক বিরোধী দিবসে  বার্তা হাওড়া সিটি পুলিশের

 

আরও পড়ুন: গুজরাতে ১৫৭ স্কুলে মাধ্যমিকে সবাই ফেল

এই অ্যাসিড দাঁতের ওপরের শক্ত আবরণ এনামেলকে ক্ষয় করে এবং পরে গর্তের সৃষ্টি করে। এ রোগের নাম ডেন্টাল ক্যারিজ। আর একেই প্রচলিত ভাষ্যে বলা হয় দাঁতের পোকা।

 

তবে শুধু মিষ্টি জাতীয় খাদ্য সেবনে দাঁতে পোকা হয় এমনটা নয়। একাধিক কারণের জন্য দাঁতে পোকা হয়। আর বেশিরভাগ পিছনের দাঁতে এই পোকা গুলি হয়ে থাকে।

 

ডেন্টাল ক্যারিজ প্রাথমিক অবস্থায় খুবই ছোট কালো গর্তের মতো দেখায়। এ অবস্থায় কোনো ব্যথা বা অসুবিধা না থাকায় রোগীরা, বুঝে উঠতে পারে না যে গর্ত তৈরি হচ্ছে। জটিলতা হওয়ার পরই কেবল ধরা পড়ে।

 

মূলত দাঁতের ওপরে একটি কালো, তিলের আকৃতির মত দাগ দেখা যায়। আর এটির জন্য ধীরে ধীরে দাঁত ফাঁপা হতে শুরু করে। সেই সঙ্গে দাঁতে ব্যথা, মুখ থেকে রক্ত ​​পড়া এবং দাঁত হলুদ হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গও দেখা দিতে শুরু করে।

 

ক্যাভিটি হচ্ছে বুঝতে পারলে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসা শুরু করুন। কারণ দাঁতে ব্যথা যেমন যন্ত্রণাদায়ক , দাঁতের চিকিৎসা ঠিক তেমনই কষ্টকর।

 

তবে দাঁতে ‘ ক্যাভিটি হচ্ছে’ প্রাথমিক পর্যায়ে বুঝতে পারলে বাড়িতেই সারিয়ে তুলতে পারবেন।

 

ঘরোয়া উপায়ে ক্যাভিটি থেকে মুক্তি পাবেন কীভাবে, তা দেখে নিন একনজরে…

 

লবঙ্গের তেল:

 

যুগ যুগ ধরে ভারত ও চিনে দাঁতের ব্যথার জন্য লবঙ্গ তেল ব্যবহার করা হয়ে আসছে । এর মধ্যে ইউগোনেল নামের একটি উপাদান থাকে যা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করে। লবঙ্গ খারাপ ব্যাকটেরিয়াকে নষ্ট করে ভাল ব্যাকটেরিয়াদের অক্ষত রাখে।

 

দিনে ২/৩ থেকে বার আক্রান্ত স্থানে লবঙ্গের তেল লাগালে যন্ত্রণাদায়ক এই ব্যথা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। এই তেলের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়ালের মত বিশেষ গুণ রয়েছে যেটি দাঁতের গহ্বর প্রতিরোধে বিশেষ সাহায্য করে।

 

পেয়ারা পাতা:

 

পেয়ারা পাতায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এর বিশেষ গুণ রয়েছে যা ক্যাভিটি প্রতিরোধে উপকারী। এই পাতাকে আপনি মাউথওয়াশ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

এই মাউথওয়াশ বানানোর জন্য প্রথমেই আপনাকে পেয়ারা পাতাকে টুকরো টুকরো করে কেটে নিতে হবে। তারপর ওভেনে রাখা ফুটন্ত জলে এই পাতা গুলো দিতে হবে। ফুটিয়ে নেওয়ার পর যেই জলটা থাকবে সেটি মুখ ধোয়ার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

 

রসুন:

 

মুখের ভিতরের নানান রকমের রোগ জীবাণু থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন খালি পেটে এক টুকরো করে রসুন খাওয়া উচিত। মুখের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য রসুন একটি অপরিহার্য উপাদান। রসুন দাঁতের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে কারণ এটি ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয় রসুন কে টুকরো টুকরো করে কেটে, সেটিকে অল্প বেটে নিয়ে ক্যাভিটি আক্রান্ত দাঁতে লাগিয়ে দিলে যন্ত্রণা থেকে আরাম পাওয়া যায়।

 

ডিমের খোসা:

 

ক্যাভিটি দুর করতে ডিমের খোসার জুড়ি মেলা ভার, এটা হয়তো অনেকেই জানেন না। কিন্তু অবাক করার বিষয় হল এটাই সত্যি। সাধারণত ডিমের খোসাগুলি দাঁতে সমস্ত ক্ষয় দূর করতে সহায়তা করে। তার জন্য বানাতে হবে একটি উপকরণ, সেই উপকরণ হল প্রথমেই ডিমের খোসাগুলি কয়েক মিনিটের জন্য সেদ্ধ করতে হবে এবং তারপরে সেগুলিকে শুকিয়ে নিতে হবে। তারপর এটি শুকিয়ে গেলে এই খোসা গুলিকে পিষে গুঁড়ো গুঁড়ো করে নিন, তারপর এর মধ্যে বেকিং সোডা যোগ করুন, দুটি উপাদান মিশিয়ে একটি পাউডার তৈরি করুন। ডিমের খোসায় থাকা ক্যালসিয়াম এবং খনিজ প্রাকৃতিকভাবে দাঁতের এনামেল পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে।

 

এই ঘরোয়া টোটকা কাজ না করলে আপনাকে অবশ্যই সচেষ্ট হতে হবে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। তিনিই আপনাকে সঠিক পরামর্শ দিতে পারবেন।