০২ মে ২০২৫, শুক্রবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজসভাতেও পাশ Waqf Amendment Bill

সুস্মিতা
  • আপডেট : ৪ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার
  • / 91

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বৃহস্পতিবার রাতে রাজ্যসভাতেও পাশ হল ওয়াকফ সংশোধনী বিল (Waqf Amendment Bill)। লোকসভার মতো রাজসভাতেও ধ্বনি ভোটে পাশ হয় এই বিল।পক্ষে ভোট দিয়েছেন ১২৮ জন সাংসদ ও বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৯৫ জন সাংসদ। রাজ্যসভাতেও এই বিলের বিরোধিতা করেন তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলের সাংসদরা। আলোচনার পরে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। তারপর রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় ঘোষণা করেন, ধ্বনি ভোটে পাশ হয়েছে ওয়াকফ সংশোধনী বিল (Waqf Amendment Bill)।

আরও পড়ুন: পার্লামেন্টে পাশ ওয়াকফ বিল: বিরোধিতায় গর্জে উঠল কলকাতা

উল্লেখ্য, বুধবার মধ্যরাতে ধ্বনি ভোটে লোকসভায় পাশ হয়েছে ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল (Waqf Amendment Bill)। মোদি সরকারের দুই শরিক দল ঢেলে ভোট দিয়েছে বিলের পক্ষে। বুধবার এই বিল নিয়ে ৮ ঘণ্টা আলোচনার জন্য বরাদ্দ থাকলেও ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আলোচনা চলতে থাকে। শেষপর্যন্ত ধ্বনি ভোটে বিল পাস হয়ে যায় লোকসভায়। লোকসভায় ওয়াকফ বিল নিয়ে ভোটাভুটিতে মোট ৫২০ জন সাংসদ যোগ দিয়েছিলেন। বিলের পক্ষে ২৮৮ এবং বিপক্ষে ২৩২ জন সাংসদ ভোট দেন। ব্যবধান ৫৬ ভোটের। লোকসভায় বিল পাশ করানোর পর বৃহস্পতিবার বিলটি পেশ হয় রাজ্যসভায়। সেখানে এনডিএ’র যে আসন তাতে এই বিল পাশ করাতে তাদের বিশেষ বেগ পেতে হবে না। ফলে বলাই যায়, ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল আইনে পরিণত হওয়া এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা।

এদিন বেলা ১টা নাগাদ রাজ্যসভায় পেশ হয় ওয়াকফ বিল (Waqf Amendment Bill)। লোকসভার পর রাজ্যসভাতেও বিলটি পেশ করেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। এদিন বিল পেশের আগে খোদ কংগ্রেস সুপ্রিমো সোনিয়া গান্ধি ও লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা সোনিয়া-পুত্র রাহুল গান্ধি দলীয় সাংসদদের বলেন, ওয়াকফের বিরুদ্ধে সংসদের উচ্চকক্ষে সরব হওয়ার জন্য। সোনিয়া-রাহুল দু’জনেই বলেন, এই বিল সংবিধানের উপর বড় আঘাত। রাজ্যসভায় বিলটি পেশ করার পর রিজিজু দাবি করতে থাকেন, এই বিল মুসলিমদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করবে না। নতুন সংশোধনী পাশ হয়ে গেলে ওয়াকফ সম্পত্তি থেকে রোজগার বাড়বে বোর্ডের। তিনি দাবি করেন, ২০০৬ সালে সাচার কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী দেশে ৪.৯ লক্ষ ওয়াকফ সম্পত্তি ছিল। এ থেকে আয় হওয়া উচিত ছিল ১২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু সেবার মাত্র ১৬৩ কোটি টাকা আয় হয় সরকারের। ২০১৩ সালে ইউপিএ সরকার ওয়াকফ আইন সংশোধন করেও আয় বাড়নি। সেসময় ৮.৭২ লক্ষ ওয়াকফ সম্পত্তি থেকে আয় ছিল মাত্র ১৬৬ কোটি টাকা। রিজিজুর দাবি, নতুন আইনে সেই রাজস্বই বাড়বে। বিরোধীদের কাছেও সমর্থন প্রার্থনা করেছেন তিনি। বিগত ইউপিএ সরকারকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ২০১৩ সালে তৎকালীন সরকার একটি সংশোধনী এনেছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, অন্য আইন থাকলেও ওয়াকফ আইন-ই মান্যতা পাবে। এটা হতে পারে না। রিজিজুর কথায়, কিছু রাজনৈতিক দল এই বিল নিয়ে অপপ্রচার করছে। কিন্তু, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, এই বিল মুসলিমদের বিরুদ্ধে নয়।এদিন জিরো আওয়ারে প্রশ্নোত্তর পর্বের পর শুরু হয় এই বিল নিয়ে আলোচনাপর্ব। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যসভায় এই বিলের প্রতিবাদ করেন। ঘাসফুল সাংসদ নাদিমুল হক বলেন, ওয়াকফ শুধু ধর্মীয় ইস্যু নয়, এটি একটি সাংবিধানিক বিষয়ও। শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠীর সাংসদ সঞ্জয় রাউত কটাক্ষ করে বলেন, বিজেপি মুসলিমদের জন্য যতটা ভাবছে মুহাম্মদ আলি জিন্নাও মুসলিমদের জন্য এতটা ভাবেননি। কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক মনু সিংভি দাবি করেন, এই বিল অসাংবিধানিক। সমাজবাদী সাংসদ রামগোপাল যাদব বলেন, বিজেপি নিজেদের হাতে থাকা সব সম্পত্তি বেচে দেওয়ার পর এখন ওয়াকফ সম্পত্তির উপর নজর দিয়েছে। সাংসদ কপিল সিব্বাল বলেন, ওয়াকফ সম্মত্তি আল্লাহর সম্পত্তি। এটা বিক্রি করা যায় না। কিন্তু, ট্রাস্ট গঠন হলে তারা জমি বিক্রি করতে পারে। রিজিজিুর ‘সরকার পরিচালিত ট্রাস্ট’ মন্তব্যের জবাবে এমনটা বলেন সিব্বল। কংগ্রেস সাংসদ ইমরান প্রতাপগড়ি রাজ্যসভায় বলেন, এই ধরনের বিল এনে আসলে মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ-প্রচার করা হচ্ছে। মুসলিমদের অপমান করতেই এই বিল আনা হয়েছে।
আর এক তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব বলেন, বিজেপি এই ধরনের বিল এনে দেশকে সেই দেশভাগের দিনগুলিতে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে। সব মানুষের মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। তাঁর দাবি, কেন্দ্র থেকে বিজেপি সরকার ক্ষমতাচূত হলে তাঁরা প্রথমেই যেটা করবেন তা হল—ওয়াকফ বিলে আনা সমস্ত অসাংবিধানিক বিধিগুলিকে মুছে দেওয়া হবে। এদিন, তৃণমূল ছাড়াও কংগ্রেস, এনসিপি (শরদ পাওয়ার গোষ্ঠী), সপা, শিবসেনা (উদ্ধব), আপ, জেএমএম, বিআরএস, ডিএমকে, এআইএডিএমকে, এমডিএমকে, এসডিপিআই, আরজেডি-র মতো বিরোধী দলগুলি একযোগে এই বিলের বিরোধিতা করেছে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয হল, বুধবার নবীন পট্টনায়কের বিজেডির তরফে দলীয় সাংসদদের উদ্দেশ্যে হুইপ জারি করে বলেছিল, লোকসভায় উপস্থিত থেকে বিলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার জন্য। বৃহস্পতিবার অবশ্য তারা তাদের অবস্থান বদল করেছে। তারা বলেছে, আর কোনও হুইপ নেই। বিজেডি সাংসদরা নিজেদের পছ¨ মতো বিলের পক্ষে-বিপক্ষে ভোট দিতে পারবেন।
রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্যসভায় এই বিল পাশ করাতে মোদি সরকারের কোনও অসুবিধা হবে না। কারণ, রাজ্যসভায় এনডিএ-র মোট ১২৫ জন সাংসদ রয়েছেন। ছ’টি আসন শূন্য রয়েছে। ফলে ১১৮ জন সাংসদের সমর্থন পেলেই সংসদের উচ্চ কক্ষে বিলটি পাশ করাতে পারবে বিজেপি। রাজ্যসভায় বিজেপির ৯৮ জন, জেডিইউ-এর ৪জন, অজিত পওয়ারের এনসিপির ৩জন এবং টিডিপির ২জন সাংসদ রয়েছেন। বিজেপির আশা, অসম গণ পরিষদ এবং তামিল মানিলা কংগ্রেসের এক জন সাংসদের সমর্থন তারা পাবে। একই ভাবে মনোনীত ৬জন সদস্যও বিলের পক্ষে ভোট দেবেন। এর বাইরে ওয়াইএসআর কংগ্রেস (৭), বিআরএস (৪), এআইএডিএমকে (৩), বিএসপি (১) এবং মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট (১) নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট না করলেও অধিকাংশের সমর্থন যে এনডিএর দিকেই যাবে, সেটা মোটামুটি স্পষ্ট। ফলে বৃহস্পতিবার রাতে এই বিল পাশ করাতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় পদ্ম শিবিরের কাছে। সংসদের দুই কক্ষে পাশ হওয়ার পরে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সই করলেই তা আইনে পরিণত হবে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রাজসভাতেও পাশ Waqf Amendment Bill

আপডেট : ৪ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বৃহস্পতিবার রাতে রাজ্যসভাতেও পাশ হল ওয়াকফ সংশোধনী বিল (Waqf Amendment Bill)। লোকসভার মতো রাজসভাতেও ধ্বনি ভোটে পাশ হয় এই বিল।পক্ষে ভোট দিয়েছেন ১২৮ জন সাংসদ ও বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৯৫ জন সাংসদ। রাজ্যসভাতেও এই বিলের বিরোধিতা করেন তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলের সাংসদরা। আলোচনার পরে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। তারপর রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় ঘোষণা করেন, ধ্বনি ভোটে পাশ হয়েছে ওয়াকফ সংশোধনী বিল (Waqf Amendment Bill)।

আরও পড়ুন: পার্লামেন্টে পাশ ওয়াকফ বিল: বিরোধিতায় গর্জে উঠল কলকাতা

উল্লেখ্য, বুধবার মধ্যরাতে ধ্বনি ভোটে লোকসভায় পাশ হয়েছে ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল (Waqf Amendment Bill)। মোদি সরকারের দুই শরিক দল ঢেলে ভোট দিয়েছে বিলের পক্ষে। বুধবার এই বিল নিয়ে ৮ ঘণ্টা আলোচনার জন্য বরাদ্দ থাকলেও ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আলোচনা চলতে থাকে। শেষপর্যন্ত ধ্বনি ভোটে বিল পাস হয়ে যায় লোকসভায়। লোকসভায় ওয়াকফ বিল নিয়ে ভোটাভুটিতে মোট ৫২০ জন সাংসদ যোগ দিয়েছিলেন। বিলের পক্ষে ২৮৮ এবং বিপক্ষে ২৩২ জন সাংসদ ভোট দেন। ব্যবধান ৫৬ ভোটের। লোকসভায় বিল পাশ করানোর পর বৃহস্পতিবার বিলটি পেশ হয় রাজ্যসভায়। সেখানে এনডিএ’র যে আসন তাতে এই বিল পাশ করাতে তাদের বিশেষ বেগ পেতে হবে না। ফলে বলাই যায়, ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল আইনে পরিণত হওয়া এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা।

এদিন বেলা ১টা নাগাদ রাজ্যসভায় পেশ হয় ওয়াকফ বিল (Waqf Amendment Bill)। লোকসভার পর রাজ্যসভাতেও বিলটি পেশ করেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। এদিন বিল পেশের আগে খোদ কংগ্রেস সুপ্রিমো সোনিয়া গান্ধি ও লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা সোনিয়া-পুত্র রাহুল গান্ধি দলীয় সাংসদদের বলেন, ওয়াকফের বিরুদ্ধে সংসদের উচ্চকক্ষে সরব হওয়ার জন্য। সোনিয়া-রাহুল দু’জনেই বলেন, এই বিল সংবিধানের উপর বড় আঘাত। রাজ্যসভায় বিলটি পেশ করার পর রিজিজু দাবি করতে থাকেন, এই বিল মুসলিমদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করবে না। নতুন সংশোধনী পাশ হয়ে গেলে ওয়াকফ সম্পত্তি থেকে রোজগার বাড়বে বোর্ডের। তিনি দাবি করেন, ২০০৬ সালে সাচার কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী দেশে ৪.৯ লক্ষ ওয়াকফ সম্পত্তি ছিল। এ থেকে আয় হওয়া উচিত ছিল ১২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু সেবার মাত্র ১৬৩ কোটি টাকা আয় হয় সরকারের। ২০১৩ সালে ইউপিএ সরকার ওয়াকফ আইন সংশোধন করেও আয় বাড়নি। সেসময় ৮.৭২ লক্ষ ওয়াকফ সম্পত্তি থেকে আয় ছিল মাত্র ১৬৬ কোটি টাকা। রিজিজুর দাবি, নতুন আইনে সেই রাজস্বই বাড়বে। বিরোধীদের কাছেও সমর্থন প্রার্থনা করেছেন তিনি। বিগত ইউপিএ সরকারকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ২০১৩ সালে তৎকালীন সরকার একটি সংশোধনী এনেছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, অন্য আইন থাকলেও ওয়াকফ আইন-ই মান্যতা পাবে। এটা হতে পারে না। রিজিজুর কথায়, কিছু রাজনৈতিক দল এই বিল নিয়ে অপপ্রচার করছে। কিন্তু, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, এই বিল মুসলিমদের বিরুদ্ধে নয়।এদিন জিরো আওয়ারে প্রশ্নোত্তর পর্বের পর শুরু হয় এই বিল নিয়ে আলোচনাপর্ব। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যসভায় এই বিলের প্রতিবাদ করেন। ঘাসফুল সাংসদ নাদিমুল হক বলেন, ওয়াকফ শুধু ধর্মীয় ইস্যু নয়, এটি একটি সাংবিধানিক বিষয়ও। শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠীর সাংসদ সঞ্জয় রাউত কটাক্ষ করে বলেন, বিজেপি মুসলিমদের জন্য যতটা ভাবছে মুহাম্মদ আলি জিন্নাও মুসলিমদের জন্য এতটা ভাবেননি। কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক মনু সিংভি দাবি করেন, এই বিল অসাংবিধানিক। সমাজবাদী সাংসদ রামগোপাল যাদব বলেন, বিজেপি নিজেদের হাতে থাকা সব সম্পত্তি বেচে দেওয়ার পর এখন ওয়াকফ সম্পত্তির উপর নজর দিয়েছে। সাংসদ কপিল সিব্বাল বলেন, ওয়াকফ সম্মত্তি আল্লাহর সম্পত্তি। এটা বিক্রি করা যায় না। কিন্তু, ট্রাস্ট গঠন হলে তারা জমি বিক্রি করতে পারে। রিজিজিুর ‘সরকার পরিচালিত ট্রাস্ট’ মন্তব্যের জবাবে এমনটা বলেন সিব্বল। কংগ্রেস সাংসদ ইমরান প্রতাপগড়ি রাজ্যসভায় বলেন, এই ধরনের বিল এনে আসলে মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ-প্রচার করা হচ্ছে। মুসলিমদের অপমান করতেই এই বিল আনা হয়েছে।
আর এক তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব বলেন, বিজেপি এই ধরনের বিল এনে দেশকে সেই দেশভাগের দিনগুলিতে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে। সব মানুষের মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। তাঁর দাবি, কেন্দ্র থেকে বিজেপি সরকার ক্ষমতাচূত হলে তাঁরা প্রথমেই যেটা করবেন তা হল—ওয়াকফ বিলে আনা সমস্ত অসাংবিধানিক বিধিগুলিকে মুছে দেওয়া হবে। এদিন, তৃণমূল ছাড়াও কংগ্রেস, এনসিপি (শরদ পাওয়ার গোষ্ঠী), সপা, শিবসেনা (উদ্ধব), আপ, জেএমএম, বিআরএস, ডিএমকে, এআইএডিএমকে, এমডিএমকে, এসডিপিআই, আরজেডি-র মতো বিরোধী দলগুলি একযোগে এই বিলের বিরোধিতা করেছে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয হল, বুধবার নবীন পট্টনায়কের বিজেডির তরফে দলীয় সাংসদদের উদ্দেশ্যে হুইপ জারি করে বলেছিল, লোকসভায় উপস্থিত থেকে বিলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার জন্য। বৃহস্পতিবার অবশ্য তারা তাদের অবস্থান বদল করেছে। তারা বলেছে, আর কোনও হুইপ নেই। বিজেডি সাংসদরা নিজেদের পছ¨ মতো বিলের পক্ষে-বিপক্ষে ভোট দিতে পারবেন।
রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্যসভায় এই বিল পাশ করাতে মোদি সরকারের কোনও অসুবিধা হবে না। কারণ, রাজ্যসভায় এনডিএ-র মোট ১২৫ জন সাংসদ রয়েছেন। ছ’টি আসন শূন্য রয়েছে। ফলে ১১৮ জন সাংসদের সমর্থন পেলেই সংসদের উচ্চ কক্ষে বিলটি পাশ করাতে পারবে বিজেপি। রাজ্যসভায় বিজেপির ৯৮ জন, জেডিইউ-এর ৪জন, অজিত পওয়ারের এনসিপির ৩জন এবং টিডিপির ২জন সাংসদ রয়েছেন। বিজেপির আশা, অসম গণ পরিষদ এবং তামিল মানিলা কংগ্রেসের এক জন সাংসদের সমর্থন তারা পাবে। একই ভাবে মনোনীত ৬জন সদস্যও বিলের পক্ষে ভোট দেবেন। এর বাইরে ওয়াইএসআর কংগ্রেস (৭), বিআরএস (৪), এআইএডিএমকে (৩), বিএসপি (১) এবং মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট (১) নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট না করলেও অধিকাংশের সমর্থন যে এনডিএর দিকেই যাবে, সেটা মোটামুটি স্পষ্ট। ফলে বৃহস্পতিবার রাতে এই বিল পাশ করাতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় পদ্ম শিবিরের কাছে। সংসদের দুই কক্ষে পাশ হওয়ার পরে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সই করলেই তা আইনে পরিণত হবে।