১০ মে ২০২৫, শনিবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ছেলেরা ফিরবে কবে? রাঁচির গ্রামে হতাশা

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ২৬ নভেম্বর ২০২৩, রবিবার
  • / 32

রাঁচি, ২৬ নভেম্বর: খিরাবেদায় রাঁচির একটি প্রত্যন্ত গ্রাম। সেই গ্রামেও এখন প্রবল উৎকণ্ঠা। এই গ্রামেরই ৩ শ্রমিক উত্তরাখণ্ডের ধসে পড়া সিল্কইয়ারা সুড়ঙ্গে আটকে রয়েছে। আমেরিকার অগার মেশিন ভেঙে যাওয়ায় সুড়ঙ্গে উদ্ধার অভিযান থমকে গিয়েছে। এই খবর শোনার পর থেকে আরও ভেঙে পড়েছেন ৫৫ বছরের শ্রাবণ বেদিয়া। বেদিয়া পক্ষাঘাতগ্রস্ত। তাঁর একমাত্র ছেলে রাজেন্দ্র (২২) সুড়ঙ্গে বন্দি। শয্যাশায়ী বেদিয়া ছেলের কথা ভেবে চোখের জল ফেলে চলেছেন। ছেলের কিছু হয়ে গেলে সংসার চলবে কি করে? এসব ভেবে মানসিকভাবে প্রচণ্ড ভেঙে পড়েছেন।

রাজেন্দ্র ছাড়াও, গ্রামের আরও ২ যুবক সুখরাম ও অনিল টানেলে আটকে। তাদেরও বয়স ২০-র আশপাশে। সুখরামের মা পার্বতীও পক্ষাঘাতগ্রস্ত। উত্তরকাশীতে ঘটে যাওয়া বিপর্যয়ের কথা শোনার পর থেকে মুখে কিছু তুলছেন না। ছেলের কথা ভেবে তাঁর চোখের জল বাঁধ মানছে না। ছেলে সুড়ঙ্গে আটকে পড়ার খবর শোনার পর থেকে ঘরে আর হাঁড়ি চড়েনি অনিলের বাড়িতে। ছেলের চিন্তায় উদ্বিগ্ন মা গত দুই সপ্তাহ ধরে কিছুতেই রান্নাঘরে ঢুকতে পারেননি। প্রতিবেশীরাই রান্না করে তাঁদের বাড়িতে দিয়ে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন: Pahalgam Terror Attack: কাশ্মীরি পড়ুয়াদের বেছে বেছে মারধর-হেনস্থা

রাঁচি থেকে ঘটনাস্থলে আসা অনিলের ভাই সুনীল জানান, ‘প্রতিদিন আমাদের বলা হচ্ছে, আর ২ ঘণ্টা, আর ৩ ঘণ্টা বা আর একটা দিন। তারপরই সুড়ঙ্গের সবাইকে উদ্ধার করে আনা হবে। রোজই আমরা এইসব শুনি। আমরা জানি না উদ্ধারকাজ শেষ হতে আর কত সময় লাগবে। সুখরামের বোন খুশবু জানান, উদ্ধারের ব্যাপারে জানতে গ্রামের সবাই ফোনে খবর নিচ্ছে। রাম কুমার বেদিয়া নামে এক গ্রামবাসী জানান, ১৩ জনের একটি দল, যাদের বয়স ১৮ থেকে ২৩ বছরের মধ্যে, তারা ১ নভেম্বর উত্তরকাশী টানেলে কাজ করার জন্য খিরাবেদা ছেড়েছিল। যখন বিপর্যয় ঘটে, তাদের মধ্যে তিনজন সুড়ঙ্গের ভিতরে কাজ করছিল। তারা সবাই এখন সুড়ঙ্গে এতদিন ধরে আটকে রয়েছে। উদ্ধার করা যাচ্ছে না তাদের। কি খাচ্ছে তারা? শরীর কেমন আছে? কীভাবে বেঁচে রয়েছে? এসব ভেবে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। আর এক গ্রামবাসী বলেন, সরকার এখনও কাউকে উদ্ধার করতে পারেনি। তারমধ্যে আবার খবর পেলাম হাওয়া অফিস বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। ঠান্ডাও পড়বে খুব। তখন কী হবে? আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না কবে আমাদের ছেলেরা ঘরে ফিরবে।

আরও পড়ুন: বিহারে নিহত আরও এক মাওবাদী কমান্ডার

আরও পড়ুন: হোলি উৎসব: দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের উত্তপ্ত ঝাড়খণ্ডের গিরিডি

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ছেলেরা ফিরবে কবে? রাঁচির গ্রামে হতাশা

আপডেট : ২৬ নভেম্বর ২০২৩, রবিবার

রাঁচি, ২৬ নভেম্বর: খিরাবেদায় রাঁচির একটি প্রত্যন্ত গ্রাম। সেই গ্রামেও এখন প্রবল উৎকণ্ঠা। এই গ্রামেরই ৩ শ্রমিক উত্তরাখণ্ডের ধসে পড়া সিল্কইয়ারা সুড়ঙ্গে আটকে রয়েছে। আমেরিকার অগার মেশিন ভেঙে যাওয়ায় সুড়ঙ্গে উদ্ধার অভিযান থমকে গিয়েছে। এই খবর শোনার পর থেকে আরও ভেঙে পড়েছেন ৫৫ বছরের শ্রাবণ বেদিয়া। বেদিয়া পক্ষাঘাতগ্রস্ত। তাঁর একমাত্র ছেলে রাজেন্দ্র (২২) সুড়ঙ্গে বন্দি। শয্যাশায়ী বেদিয়া ছেলের কথা ভেবে চোখের জল ফেলে চলেছেন। ছেলের কিছু হয়ে গেলে সংসার চলবে কি করে? এসব ভেবে মানসিকভাবে প্রচণ্ড ভেঙে পড়েছেন।

রাজেন্দ্র ছাড়াও, গ্রামের আরও ২ যুবক সুখরাম ও অনিল টানেলে আটকে। তাদেরও বয়স ২০-র আশপাশে। সুখরামের মা পার্বতীও পক্ষাঘাতগ্রস্ত। উত্তরকাশীতে ঘটে যাওয়া বিপর্যয়ের কথা শোনার পর থেকে মুখে কিছু তুলছেন না। ছেলের কথা ভেবে তাঁর চোখের জল বাঁধ মানছে না। ছেলে সুড়ঙ্গে আটকে পড়ার খবর শোনার পর থেকে ঘরে আর হাঁড়ি চড়েনি অনিলের বাড়িতে। ছেলের চিন্তায় উদ্বিগ্ন মা গত দুই সপ্তাহ ধরে কিছুতেই রান্নাঘরে ঢুকতে পারেননি। প্রতিবেশীরাই রান্না করে তাঁদের বাড়িতে দিয়ে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন: Pahalgam Terror Attack: কাশ্মীরি পড়ুয়াদের বেছে বেছে মারধর-হেনস্থা

রাঁচি থেকে ঘটনাস্থলে আসা অনিলের ভাই সুনীল জানান, ‘প্রতিদিন আমাদের বলা হচ্ছে, আর ২ ঘণ্টা, আর ৩ ঘণ্টা বা আর একটা দিন। তারপরই সুড়ঙ্গের সবাইকে উদ্ধার করে আনা হবে। রোজই আমরা এইসব শুনি। আমরা জানি না উদ্ধারকাজ শেষ হতে আর কত সময় লাগবে। সুখরামের বোন খুশবু জানান, উদ্ধারের ব্যাপারে জানতে গ্রামের সবাই ফোনে খবর নিচ্ছে। রাম কুমার বেদিয়া নামে এক গ্রামবাসী জানান, ১৩ জনের একটি দল, যাদের বয়স ১৮ থেকে ২৩ বছরের মধ্যে, তারা ১ নভেম্বর উত্তরকাশী টানেলে কাজ করার জন্য খিরাবেদা ছেড়েছিল। যখন বিপর্যয় ঘটে, তাদের মধ্যে তিনজন সুড়ঙ্গের ভিতরে কাজ করছিল। তারা সবাই এখন সুড়ঙ্গে এতদিন ধরে আটকে রয়েছে। উদ্ধার করা যাচ্ছে না তাদের। কি খাচ্ছে তারা? শরীর কেমন আছে? কীভাবে বেঁচে রয়েছে? এসব ভেবে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। আর এক গ্রামবাসী বলেন, সরকার এখনও কাউকে উদ্ধার করতে পারেনি। তারমধ্যে আবার খবর পেলাম হাওয়া অফিস বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। ঠান্ডাও পড়বে খুব। তখন কী হবে? আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না কবে আমাদের ছেলেরা ঘরে ফিরবে।

আরও পড়ুন: বিহারে নিহত আরও এক মাওবাদী কমান্ডার

আরও পড়ুন: হোলি উৎসব: দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের উত্তপ্ত ঝাড়খণ্ডের গিরিডি