সিনেমায় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম বিকৃতির প্রতিবাদে এফআইআর, সরব মুখ্যমন্ত্রী
- আপডেট : ১৯ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 42
পুবের কলম প্রতিবেদকঃ শিল্পের নামে ‘এজেন্ডা’ প্রচার সাম্প্রতিককালে নতুন নয়। তবে এবার দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর বিপ্লবীদের গরিমা ম্লান করার অপচেষ্টা দেখা গেল সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া একটি হিন্দি সিনেমায়।
এই তথ্য বিকৃতির বিরুদ্ধে জিও হটস্টারে স্ট্রিমিং হওয়া ‘কেশরী চ্যাপ্টার ২’-এর প্রতিবাদে বিধাননগর দক্ষিণ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন সল্টলেক সেক্টর ৪-এর নবপল্লীর বাসিন্দা রণজিৎ বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি। বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের এই অবমাননার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে সংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বাংলাকে অসম্মান করলে সহ্য করব না। মানুষ উত্তর দিতে তৈরি হচ্ছে।’
রণজিতের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস)-এর ধারা ৩৫২ (ইচ্ছাকৃত অপমান), ৩৫৩(১) (সি) ( জনসাধারণের জন্য অপকীর্তি ), এবং ৩৫৩(২) (মিথ্যা বিবৃতি বা তথ্য প্রচার) এর অধীনে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, মুজফফরপুর ষড়যন্ত্র মামলায় একটি আদালত কক্ষের দৃশ্য দেখানো হয়েছে সিনেমাটিতে।
সেখানে একটা দৃশ্যে ক্ষুদিরাম বোস বদলে ক্ষুদিরাম সিং হয়ে গিয়েছে। একইসঙ্গে বিপ্লবী প্রফুল্ল চাকির সেখানে কোন উল্লেখই নেই। এখানেই শেষ নয়। বিখ্যাত স্বাধীনতা সংগ্রামী অরবিন্দ ঘোষের ছোট ভাই বারীন্দ্র কুমার ঘোষ তিনিও বিপ্লবী ছিলেন। তাঁর নাম বদলে বারীন কুমার করা হয়েছে। শুধুমাত্র ঐতিহাসিক তথ্যগুলোকে বিকৃত করা হয়নি, পাশাপাশি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নামটাকে বিকৃত করে তাঁদের গরিমা ম্লান করার চেষ্টা হয়েছে। ওই সিনেমায় আরও দেখানো হয়েছে ক্ষুদিরাম বোস এবং বারীন্দ্র ঘোষ ওনারা অমৃতসরের ছাত্র ছিলেন। এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন অক্ষয় কুমার, আর মহাদেবন, ভিকি কৌশল, অনন্যা পান্ডে।
দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে পাতায় জ্বলজ্বল করছে বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বোস ও প্রফুল্ল চাকীর নাম। দেশের শত শত যুবক ক্ষুদিরাম প্রফুল্ল চাকীর পথে দেশের স্বাধীনতার শপথ নিয়েছিলেন। আমরা মরব দেশ জাগবে-এই ছিল তাঁদের মন্ত্র। এপ্রিল মাসে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমায় তাঁদের সেই সংগ্রামকে বিকৃত করা হয়েছে।
‘কেরালা স্টোরি’, ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস্’-এর মত প্রোপাগান্ডা ছবির পাশাপাশি বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গকে নিয়ে ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলসঃ রাইট টু লাইফ’ মুক্তি পেতে চলেছে। যে সিনেমাকে রাজনৈতিক লক্ষ্যে নির্মিত বিভাজনমূলক সিনেমা বলে উল্লেখ করছেন সংশ্লিষ্টমহল। এরই পাশাপাশি দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম ব্যবহার করে এই ধরনের বিকৃত সিনেমার বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেছেন, “সিনেমা তৈরি করে ক্ষুদিরামকে বলছেন ক্ষুদিরাম সিং। লজ্জা করে না স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অসম্মান করতে? জেনে রাখুন অন্য রাজ্যের কাউকে আমরা অসম্মান করি না। আসল সত্যকে বিকৃত করে যদি মনে করেন বিজেপির নকল ধর্ম, যদি ভাবেন বাংলার ব্রেন ক্যাপচার করবেন, জানবেন বাংলার মানুষ এর প্রত্যুত্তর দিতে তৈরি হচ্ছে।”