০১ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আবুধাবির শেখ জায়েদ মসজিদে ট্রাম্প

সুস্মিতা
  • আপডেট : ১৬ মে ২০২৫, শুক্রবার
  • / 230

মধ্য এশিয়ায় নয়া কূটনৈতিক সমীকরণ!

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে জোর দিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গাল্ফ সফরকে বেছে নিয়েছেন, যা মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক সমীকরণে এক নতুন বার্তা নিয়ে আসছে। সউদি আরব ও কাতার সফরের পর বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের আরব আমিরশাহী সফর মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন কূটনৈতিক তৎপরতার নতুন অধ্যায়ের সূচনা বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এই সফরের অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা ছিল ট্রাম্পের ঐতিহাসিক শেখ জায়েদ মসজিদ পরিদর্শন। বিশ্বের অন্যতম সুন্দর ও বৃহৎ এই মসজিদে একজন মার্কিন প্রেসিডেন্টের পদার্পণ কেবল সৌজন্য সফরই নয়, বরং এটি মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের প্রতীক হিসেবেও ধরা হচ্ছে। মসজিদ পরিদর্শনের সময় ট্রাম্প ইসলামি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন এবং বলেন, শান্তি, সৌহার্দ্য ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাই মানব জাতির প্রকৃত শক্তি।

আরও পড়ুন: লস অ্যাঞ্জেলেসে জারি কারফিউ, বিক্ষোভ থামাতে গণগ্রেফতার

আবুধাবির শেখ জায়েদ মসজিদে ট্রাম্প

আরও পড়ুন: ট্রাম্প-মাস্ক দ্বন্দ্বে বিপাকে নাসা!

আবুধাবিতে পৌঁছানোর পরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শেখ জায়েদ মসজিদ পরিদর্শন করেন। তিনি আমিরাতের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই মসজিদ পরিদর্শন করতে দেওয়ার জন্য ‘কৃতজ্ঞতা’ প্রকাশ করেন। ট্রাম্প বলেন, এটা কি সুন্দর নয়? এটা খুব সুন্দর। আমার বন্ধুদের জন্য খুব গর্বিত, তাদের সংস্কৃতি অসাধারণ।

আরও পড়ুন: শুল্কনীতি অবৈধ, মার্কিন আদালতে ধাক্কা খেলেন ট্রাম্প

মসজিদ পরিদর্র্শনের পাশাপাশি, ট্রাম্পের মূল কূটনৈতিক কর্মসূচি ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মুহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে বৈঠক। এতে গাজা, সিরিয়া, ইয়েমেনসহ মধ্যপ্রাচ্যের জ্বলন্ত সংকটগুলোর পাশাপাশি নিরাপত্তা ও সামরিক সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা হয়।

আবুধাবির শেখ জায়েদ মসজিদে ট্রাম্প

শেখ মুহাম্মদ বলেন, আজকের বৈঠক আমাদের অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করার সুযোগ করে দিয়েছে। আমরা চাই শান্তি, কিন্তু প্রয়োজন হলে আমরা আমাদের জনগণকে রক্ষা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এছাড়া, আমিরাতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শেখ তাহনুন বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, প্রযুক্তি, অবকাঠামো ও স্বাস্থ্যসেবায় যৌথ বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়েও আলাপ করেন।

এই সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে নতুন একটি বাণিজ্য চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়। এতে কাস্টমস সহযোগিতা এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানোর লক্ষ্যে বেশ কিছু উদ্যোগ গৃহীত হয়েছে। উল্লেখযোগ্য যে, ২০২৩ সালে আমিরাতের মার্কিন রফতানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩.৯ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২১ শতাংশ বেশি।

আবুধাবির শেখ জায়েদ মসজিদে ট্রাম্প

এই সফরের মাধ্যমে ট্রাম্প শুধু অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার করছেন না, বরং ইসলামি বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠন ও ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টাও করছেন। বিশ্লেষকদের মতে, এই সফর মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ভূরাজনৈতিক অবস্থানকে নতুনভাবে দৃঢ় করছে। গাজা যুদ্ধ, ইরান পারমাণবিক চুক্তি ও হুথি বিদ্রোহের পটভূমিতে ট্রাম্পের এই সফর শুধু তাৎক্ষণিক নয়, বরং ভবিষ্যতের কৌশলগত পরিকল্পনার দিকেও ইঙ্গিত দিচ্ছে।

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

আবুধাবির শেখ জায়েদ মসজিদে ট্রাম্প

আপডেট : ১৬ মে ২০২৫, শুক্রবার

মধ্য এশিয়ায় নয়া কূটনৈতিক সমীকরণ!

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে জোর দিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গাল্ফ সফরকে বেছে নিয়েছেন, যা মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক সমীকরণে এক নতুন বার্তা নিয়ে আসছে। সউদি আরব ও কাতার সফরের পর বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের আরব আমিরশাহী সফর মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন কূটনৈতিক তৎপরতার নতুন অধ্যায়ের সূচনা বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এই সফরের অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা ছিল ট্রাম্পের ঐতিহাসিক শেখ জায়েদ মসজিদ পরিদর্শন। বিশ্বের অন্যতম সুন্দর ও বৃহৎ এই মসজিদে একজন মার্কিন প্রেসিডেন্টের পদার্পণ কেবল সৌজন্য সফরই নয়, বরং এটি মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের প্রতীক হিসেবেও ধরা হচ্ছে। মসজিদ পরিদর্শনের সময় ট্রাম্প ইসলামি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন এবং বলেন, শান্তি, সৌহার্দ্য ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাই মানব জাতির প্রকৃত শক্তি।

আরও পড়ুন: লস অ্যাঞ্জেলেসে জারি কারফিউ, বিক্ষোভ থামাতে গণগ্রেফতার

আবুধাবির শেখ জায়েদ মসজিদে ট্রাম্প

আরও পড়ুন: ট্রাম্প-মাস্ক দ্বন্দ্বে বিপাকে নাসা!

আবুধাবিতে পৌঁছানোর পরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শেখ জায়েদ মসজিদ পরিদর্শন করেন। তিনি আমিরাতের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই মসজিদ পরিদর্শন করতে দেওয়ার জন্য ‘কৃতজ্ঞতা’ প্রকাশ করেন। ট্রাম্প বলেন, এটা কি সুন্দর নয়? এটা খুব সুন্দর। আমার বন্ধুদের জন্য খুব গর্বিত, তাদের সংস্কৃতি অসাধারণ।

আরও পড়ুন: শুল্কনীতি অবৈধ, মার্কিন আদালতে ধাক্কা খেলেন ট্রাম্প

মসজিদ পরিদর্র্শনের পাশাপাশি, ট্রাম্পের মূল কূটনৈতিক কর্মসূচি ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মুহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে বৈঠক। এতে গাজা, সিরিয়া, ইয়েমেনসহ মধ্যপ্রাচ্যের জ্বলন্ত সংকটগুলোর পাশাপাশি নিরাপত্তা ও সামরিক সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা হয়।

আবুধাবির শেখ জায়েদ মসজিদে ট্রাম্প

শেখ মুহাম্মদ বলেন, আজকের বৈঠক আমাদের অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করার সুযোগ করে দিয়েছে। আমরা চাই শান্তি, কিন্তু প্রয়োজন হলে আমরা আমাদের জনগণকে রক্ষা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এছাড়া, আমিরাতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শেখ তাহনুন বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, প্রযুক্তি, অবকাঠামো ও স্বাস্থ্যসেবায় যৌথ বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়েও আলাপ করেন।

এই সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে নতুন একটি বাণিজ্য চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়। এতে কাস্টমস সহযোগিতা এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানোর লক্ষ্যে বেশ কিছু উদ্যোগ গৃহীত হয়েছে। উল্লেখযোগ্য যে, ২০২৩ সালে আমিরাতের মার্কিন রফতানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩.৯ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২১ শতাংশ বেশি।

আবুধাবির শেখ জায়েদ মসজিদে ট্রাম্প

এই সফরের মাধ্যমে ট্রাম্প শুধু অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার করছেন না, বরং ইসলামি বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠন ও ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টাও করছেন। বিশ্লেষকদের মতে, এই সফর মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ভূরাজনৈতিক অবস্থানকে নতুনভাবে দৃঢ় করছে। গাজা যুদ্ধ, ইরান পারমাণবিক চুক্তি ও হুথি বিদ্রোহের পটভূমিতে ট্রাম্পের এই সফর শুধু তাৎক্ষণিক নয়, বরং ভবিষ্যতের কৌশলগত পরিকল্পনার দিকেও ইঙ্গিত দিচ্ছে।