১৫ জুন ২০২৫, রবিবার, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইরানে হামলা, বিশ্বজুড়ে পেট্রোপণ্যের দাম বেড়ে চলেছে

চামেলি দাস
  • আপডেট : ১৪ জুন ২০২৫, শনিবার
  • / 61

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ইসরাইল ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর বিশ্বজুড়ে অপরিশোধিত তেলের দাম চড় চড় করে বেড়ে চলেছে। এখনই সবরকম তেলের দাম ৭ শতাংশ করে বেড়ে গিয়েছে। অর্থাৎ ভারতেও পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়বে। অন্যদিকে ইরান-ইসরাইল যুদ্ধের আশঙ্কায় শেয়ার বাজারে সূচকের পতন শুরু হয়েছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, এই তো শুরু, এবার অনেক ঝক্কি সামলাতে হবে ইরানকে। তার মানে ট্রাম্প বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, আগামী দিনে ইরানের উপর হামলা আরও বাড়বে। এই শঙ্কায় বিশ্ব অর্থনীতির হাল টালমাটাল। ডাও জোন্স শেয়ারসূচক এ দিন ৬১২ পয়েন্ট নেমে গিয়েছে। নাসডক, এস পি ৫০০, রাসেল ২০০০ সূচক সবই নিম্নগামী। ফ্রান্স, জার্মানি, ইউরোপ সর্বত্র শেয়ার বাজার কাঁপছে। আমেরিকার অপরিশোধিত তেলের দাম ৭.৪ শতাংশ বেড়েছে। ব্রিটেন, জার্মানি এবং স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশগুলি মিলে যে উৎকৃষ্ট ব্রেন্ট তেল উৎপাদন করে তারও দাম ৭.২ শতাংশ বেড়েছে। ইরানের প্রতিদিন ১২ লক্ষ ব্যারেল তেল উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু আমেরিকা ফরমান জারি করেছে, কোনও দেশ ইরান থেকে তেল কিনলে সেই দেশকে ভাতে মারবে। তাই ২০১৮ সাল থেকে ভারত ইরানের তেল কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। তবু আমেরিকার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে কিছু দেশ ইরানের তেল কেনে। ইরান বলছে, হরমুজ প্রণালী দিয়ে তারা জাহাজে তেল পাঠাত। কিন্তু এখন পাঠানো মুশকিল হয়ে পড়েছে। তেলবাহী জাহাজে ইসরাইল হামলা করতে পারে। আমেরিকা এটাই চায়। ইরানের তেল সরবরাহ যেটুকু হয়, তা বন্ধ করে দিতে পারলে আমেরিকা বেলাগাম দাম বাড়াবে। সোনার দামও ফের বাড়ছে। এই মওকায় আমেরিকার অস্ত্র তৈরির কোম্পানিগুলির শেয়ারের দাম ঊর্ধ্বমুখী। কারণ যুদ্ধ হলে অস্ত্র বিক্রি বাড়বে, লাভ বাড়বে কোম্পানিগুলির। বিশিষ্ট বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন এক অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হল,যা অপ্রয়োজনীয় এবং বিশ্ব অর্থনীতির মেরুদণ্ডে এখনও আঘাত না লাগলেও সেন্টিমেন্টে আঘাত লেগেছে। অন্যদিকে বিমান সংস্থার শেয়ারের দামও নিম্নমুখী। কারণ তেলের দাম বাড়লে বিমানভাড়া বাড়বে, যাত্রী কমবে, লাভ কমবে। এইরকম আশঙ্কার মধ্যে আমেরিকার সরকারি বন্ডে বিনিয়োগ বাড়ে, কারণ ওতে বিনিয়োগ নিরাপদ বলে মনে করা হয়। অথচ সেই বন্ডের বাজারও পড়ছে। কারণ ট্রাম্পকে বিনিয়োগকারীরা বিশ্বাস করতে পারছে না। আমেরিকার শেয়ার বাজার ট্রাম্পের শুল্কবৃদ্ধির কারণে আশা-নিরাশার দোলায় দুলছিল। হালে ট্রাম্প কিছু সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখায় বাজার একটু স্থিতিশীল হচ্ছে। কিন্তু যুদ্ধ সব ওলট-পালট করে দিল।

আরও পড়ুন: ইসরাইলের প্রতিরক্ষা সদর দফতর গুঁড়িয়ে দিল ইরান
Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ইরানে হামলা, বিশ্বজুড়ে পেট্রোপণ্যের দাম বেড়ে চলেছে

আপডেট : ১৪ জুন ২০২৫, শনিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ইসরাইল ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর বিশ্বজুড়ে অপরিশোধিত তেলের দাম চড় চড় করে বেড়ে চলেছে। এখনই সবরকম তেলের দাম ৭ শতাংশ করে বেড়ে গিয়েছে। অর্থাৎ ভারতেও পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়বে। অন্যদিকে ইরান-ইসরাইল যুদ্ধের আশঙ্কায় শেয়ার বাজারে সূচকের পতন শুরু হয়েছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, এই তো শুরু, এবার অনেক ঝক্কি সামলাতে হবে ইরানকে। তার মানে ট্রাম্প বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, আগামী দিনে ইরানের উপর হামলা আরও বাড়বে। এই শঙ্কায় বিশ্ব অর্থনীতির হাল টালমাটাল। ডাও জোন্স শেয়ারসূচক এ দিন ৬১২ পয়েন্ট নেমে গিয়েছে। নাসডক, এস পি ৫০০, রাসেল ২০০০ সূচক সবই নিম্নগামী। ফ্রান্স, জার্মানি, ইউরোপ সর্বত্র শেয়ার বাজার কাঁপছে। আমেরিকার অপরিশোধিত তেলের দাম ৭.৪ শতাংশ বেড়েছে। ব্রিটেন, জার্মানি এবং স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশগুলি মিলে যে উৎকৃষ্ট ব্রেন্ট তেল উৎপাদন করে তারও দাম ৭.২ শতাংশ বেড়েছে। ইরানের প্রতিদিন ১২ লক্ষ ব্যারেল তেল উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু আমেরিকা ফরমান জারি করেছে, কোনও দেশ ইরান থেকে তেল কিনলে সেই দেশকে ভাতে মারবে। তাই ২০১৮ সাল থেকে ভারত ইরানের তেল কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। তবু আমেরিকার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে কিছু দেশ ইরানের তেল কেনে। ইরান বলছে, হরমুজ প্রণালী দিয়ে তারা জাহাজে তেল পাঠাত। কিন্তু এখন পাঠানো মুশকিল হয়ে পড়েছে। তেলবাহী জাহাজে ইসরাইল হামলা করতে পারে। আমেরিকা এটাই চায়। ইরানের তেল সরবরাহ যেটুকু হয়, তা বন্ধ করে দিতে পারলে আমেরিকা বেলাগাম দাম বাড়াবে। সোনার দামও ফের বাড়ছে। এই মওকায় আমেরিকার অস্ত্র তৈরির কোম্পানিগুলির শেয়ারের দাম ঊর্ধ্বমুখী। কারণ যুদ্ধ হলে অস্ত্র বিক্রি বাড়বে, লাভ বাড়বে কোম্পানিগুলির। বিশিষ্ট বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন এক অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হল,যা অপ্রয়োজনীয় এবং বিশ্ব অর্থনীতির মেরুদণ্ডে এখনও আঘাত না লাগলেও সেন্টিমেন্টে আঘাত লেগেছে। অন্যদিকে বিমান সংস্থার শেয়ারের দামও নিম্নমুখী। কারণ তেলের দাম বাড়লে বিমানভাড়া বাড়বে, যাত্রী কমবে, লাভ কমবে। এইরকম আশঙ্কার মধ্যে আমেরিকার সরকারি বন্ডে বিনিয়োগ বাড়ে, কারণ ওতে বিনিয়োগ নিরাপদ বলে মনে করা হয়। অথচ সেই বন্ডের বাজারও পড়ছে। কারণ ট্রাম্পকে বিনিয়োগকারীরা বিশ্বাস করতে পারছে না। আমেরিকার শেয়ার বাজার ট্রাম্পের শুল্কবৃদ্ধির কারণে আশা-নিরাশার দোলায় দুলছিল। হালে ট্রাম্প কিছু সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখায় বাজার একটু স্থিতিশীল হচ্ছে। কিন্তু যুদ্ধ সব ওলট-পালট করে দিল।

আরও পড়ুন: ইসরাইলের প্রতিরক্ষা সদর দফতর গুঁড়িয়ে দিল ইরান