০১ ডিসেম্বর ২০২৫, সোমবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দিল্লি বিস্ফোরণ: উপত্যকাজুড়ে মসজিদ-মাদ্রাসায় তল্লাশি অভিযান পুলিশ-গোয়ান্দাদের

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ১ ডিসেম্বর ২০২৫, সোমবার
  • / 54

পুবের কলম, শ্রীনগর: দিল্লি বিস্ফোরণের পর জঙ্গি যোগের সন্দেহে উপত্যকাজুড়ে শুরু হয়েছে নির্মম পুলিশী নিপীড়ন। জম্মু ও কাশ্মীরের মসজিদ এবং মাদ্রাসাশ ব্যাপক তল্লাশি ও নজরদারি শুরু করেছে কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণাধীন পুলিশ। সিআইডি ও জেলা গোয়েন্দা ইউনিটের পুলিশ দল একের পর এক মসজিদ পরিদর্শন করেছে বলে অভিযোগ। পর্যটকদের আনাগোনাতেও বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে। জম্মু ও কাশ্মীরের সাতটি জেলা এবং রাজধানী শ্রীনগরে নিষিদ্ধ জামায়াত-ই-ইসলামির সদস্যদের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে। পুলিশের দাবি, জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে ব্যক্তি এবং জঙ্গি নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়া এবং উপত্যকাকে সন্ত্রাসবাদমুক্ত করার প্রচেষ্টাতেই এই অভিযান।

সোমবার জঙ্গিযোগের সন্দেহে কাশ্মীরের দশটি এলাকায় ম্যারাথন তল্লাশিতে নামল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। বড় কোনও সূত্রের খোঁজে এ দিনের তল্লাশি অভিযান চালায় কেন্দ্রের তদন্তকারী সংস্থা। সূত্রের খবর, মৌলবী ইরফান আহমেদ ওয়াগে, চিকিৎসক আদিল রাঠের, চিকিৎসক মুজাম্মিল গনাই, আমির রশিদ, দিল্লি বিস্ফোরণের ‘সুইসাইড বম্বার’ উমরের সহযোগী জসির বিলাল ওয়ানি এবং আরও কয়েকজন সন্দেহভাজনের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

আরও পড়ুন: দিল্লি বিস্ফারণের চার অভিযুক্তকে ১০ দিনের এনআইএ হেফাজতের নির্দেশ আদালতের

উল্লেখ্য, দিল্লি বিস্ফোরণ ও ফরিদাবাদে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় একের পর এক জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দার নাম উঠে এসেছে এবং তারা সকলেই ‘হোয়াইট কলার টেররিস্ট’ সদস্য সন্দেহে বেশ কিছুদিন থেকে এই অভিযান চালানো হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে খবর, সোপিয়ান, অনন্তনাগ, অবন্তীপোরা, সোপিয়ান, কুলগাম, হান্দওয়ারা, বুদগাম ও পুলওয়ামায় তল্লাশি চালানো হয়। এমনকি মসজিদ এবং মাদ্রাসাতেও তল্লাশি চালানো হয়েছে। শ্রীনগর পুলিশ জানিয়েছেন, শ্রীনগরে সন্ত্রাসবাদী সহায়তা বাস্তুতন্ত্রকে ধ্বংস করতে এবং শান্তি ও জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার লক্ষ্যে যে কোনও কর্মকাণ্ড রোধ করার অব্যাহত প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে এই তল্লাশি চালানো হয়েছে। বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে সন্ত্রাস বা উগ্রবাদী কার্যকলাপের সাথে যুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানে অভিযান অব্যাহত থাকবে। পুলিশের এক কর্তা বলেন, “সন্দেহজনক বেআইনি কার্যকলাপ এবং জেইআইয়ের সাথে সম্ভাব্য যোগসূত্র সম্পর্কে বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে হান্দওয়াড়া পুলিশ হান্দওয়াড়ার ওয়ারিপোরায় জামিয়া ইসলামিয়া ইনস্টিটিউটে অভিযান চালায়। অভিযানে উদ্ধার হওয়া ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলি জব্দ করা হয়েছে এবং সেগুলি পরীক্ষা করা হচ্ছে।”

আরও পড়ুন: দিল্লি বিস্ফোরণ: কাশ্মীরি ডাক্তারি পড়ুয়াকে আটক করল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ

১০ নভেম্বর দিল্লির লাল কেল্লার কাছে বিস্ফোরণের পর থেকে বিভিন্ন রাজ্য জুড়ে যে ব্যাপক তদন্ত চলছে। তার অংশ হিসেবেই এ দিন শ্রীনগরের বিভিন্ন মসজিদ ও মাদ্রাসায় তল্লাশি চালানো হয়। পুলিশ ইঙ্গিত দিয়েছে, আগামী কয়েকদিনে এই ধরনের আরও তল্লাশি অভিযান চলবে। যেখানেই সন্ত্রাসবাদী বা মৌলবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি বা উপকরণের উপস্থিতির বিশ্বাসযোগ্য তথ্য মিলবে, সেখানেই তল্লাশি চলবে। শ্রীনগরে শান্তি-শৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটানোর লক্ষ্যে যে কোনও ষড়যন্ত্র বা বেআইনি কাজ প্রতিরোধ করাই এই অভিযানের লক্ষ্য। শাহের পুলিশ বলেছে, “নিষিদ্ধ সংস্থাগুলির কার্যক্রম গোপনে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করা নেটওয়ার্কগুলি সনাক্ত করতে অভিযান চালানো হচ্ছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত গোষ্ঠীর সঙ্গে অতীত বা বর্তমানের যে কোনও সম্পর্ক রয়েছে এমন সমস্ত ব্যক্তিকে তল্লাশির আওতায় আনা হয়েছে।”

আরও পড়ুন: দিল্লি বিস্ফোরণ: সামাজিক মাধ্যমে পোস্টের অভিযোগে গ্রেফতার মুসলিম স্কুল শিক্ষক

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

দিল্লি বিস্ফোরণ: উপত্যকাজুড়ে মসজিদ-মাদ্রাসায় তল্লাশি অভিযান পুলিশ-গোয়ান্দাদের

আপডেট : ১ ডিসেম্বর ২০২৫, সোমবার

পুবের কলম, শ্রীনগর: দিল্লি বিস্ফোরণের পর জঙ্গি যোগের সন্দেহে উপত্যকাজুড়ে শুরু হয়েছে নির্মম পুলিশী নিপীড়ন। জম্মু ও কাশ্মীরের মসজিদ এবং মাদ্রাসাশ ব্যাপক তল্লাশি ও নজরদারি শুরু করেছে কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণাধীন পুলিশ। সিআইডি ও জেলা গোয়েন্দা ইউনিটের পুলিশ দল একের পর এক মসজিদ পরিদর্শন করেছে বলে অভিযোগ। পর্যটকদের আনাগোনাতেও বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে। জম্মু ও কাশ্মীরের সাতটি জেলা এবং রাজধানী শ্রীনগরে নিষিদ্ধ জামায়াত-ই-ইসলামির সদস্যদের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে। পুলিশের দাবি, জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে ব্যক্তি এবং জঙ্গি নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়া এবং উপত্যকাকে সন্ত্রাসবাদমুক্ত করার প্রচেষ্টাতেই এই অভিযান।

সোমবার জঙ্গিযোগের সন্দেহে কাশ্মীরের দশটি এলাকায় ম্যারাথন তল্লাশিতে নামল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। বড় কোনও সূত্রের খোঁজে এ দিনের তল্লাশি অভিযান চালায় কেন্দ্রের তদন্তকারী সংস্থা। সূত্রের খবর, মৌলবী ইরফান আহমেদ ওয়াগে, চিকিৎসক আদিল রাঠের, চিকিৎসক মুজাম্মিল গনাই, আমির রশিদ, দিল্লি বিস্ফোরণের ‘সুইসাইড বম্বার’ উমরের সহযোগী জসির বিলাল ওয়ানি এবং আরও কয়েকজন সন্দেহভাজনের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

আরও পড়ুন: দিল্লি বিস্ফারণের চার অভিযুক্তকে ১০ দিনের এনআইএ হেফাজতের নির্দেশ আদালতের

উল্লেখ্য, দিল্লি বিস্ফোরণ ও ফরিদাবাদে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় একের পর এক জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দার নাম উঠে এসেছে এবং তারা সকলেই ‘হোয়াইট কলার টেররিস্ট’ সদস্য সন্দেহে বেশ কিছুদিন থেকে এই অভিযান চালানো হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে খবর, সোপিয়ান, অনন্তনাগ, অবন্তীপোরা, সোপিয়ান, কুলগাম, হান্দওয়ারা, বুদগাম ও পুলওয়ামায় তল্লাশি চালানো হয়। এমনকি মসজিদ এবং মাদ্রাসাতেও তল্লাশি চালানো হয়েছে। শ্রীনগর পুলিশ জানিয়েছেন, শ্রীনগরে সন্ত্রাসবাদী সহায়তা বাস্তুতন্ত্রকে ধ্বংস করতে এবং শান্তি ও জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার লক্ষ্যে যে কোনও কর্মকাণ্ড রোধ করার অব্যাহত প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে এই তল্লাশি চালানো হয়েছে। বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে সন্ত্রাস বা উগ্রবাদী কার্যকলাপের সাথে যুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানে অভিযান অব্যাহত থাকবে। পুলিশের এক কর্তা বলেন, “সন্দেহজনক বেআইনি কার্যকলাপ এবং জেইআইয়ের সাথে সম্ভাব্য যোগসূত্র সম্পর্কে বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে হান্দওয়াড়া পুলিশ হান্দওয়াড়ার ওয়ারিপোরায় জামিয়া ইসলামিয়া ইনস্টিটিউটে অভিযান চালায়। অভিযানে উদ্ধার হওয়া ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলি জব্দ করা হয়েছে এবং সেগুলি পরীক্ষা করা হচ্ছে।”

আরও পড়ুন: দিল্লি বিস্ফোরণ: কাশ্মীরি ডাক্তারি পড়ুয়াকে আটক করল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ

১০ নভেম্বর দিল্লির লাল কেল্লার কাছে বিস্ফোরণের পর থেকে বিভিন্ন রাজ্য জুড়ে যে ব্যাপক তদন্ত চলছে। তার অংশ হিসেবেই এ দিন শ্রীনগরের বিভিন্ন মসজিদ ও মাদ্রাসায় তল্লাশি চালানো হয়। পুলিশ ইঙ্গিত দিয়েছে, আগামী কয়েকদিনে এই ধরনের আরও তল্লাশি অভিযান চলবে। যেখানেই সন্ত্রাসবাদী বা মৌলবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি বা উপকরণের উপস্থিতির বিশ্বাসযোগ্য তথ্য মিলবে, সেখানেই তল্লাশি চলবে। শ্রীনগরে শান্তি-শৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটানোর লক্ষ্যে যে কোনও ষড়যন্ত্র বা বেআইনি কাজ প্রতিরোধ করাই এই অভিযানের লক্ষ্য। শাহের পুলিশ বলেছে, “নিষিদ্ধ সংস্থাগুলির কার্যক্রম গোপনে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করা নেটওয়ার্কগুলি সনাক্ত করতে অভিযান চালানো হচ্ছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত গোষ্ঠীর সঙ্গে অতীত বা বর্তমানের যে কোনও সম্পর্ক রয়েছে এমন সমস্ত ব্যক্তিকে তল্লাশির আওতায় আনা হয়েছে।”

আরও পড়ুন: দিল্লি বিস্ফোরণ: সামাজিক মাধ্যমে পোস্টের অভিযোগে গ্রেফতার মুসলিম স্কুল শিক্ষক