গরমের ছুটিতেও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে বিশেষ উদ্যোগ মাদ্রাসা পর্যদের, ১৫ ধরনের অ্যাসাইনমেন্ট পড়ুয়াদের

- আপডেট : ১৬ মে ২০২৩, মঙ্গলবার
- / 10
আবদুল ওদুদ: গরমের ছুটিতে মাদ্রাসা পড়ুয়াদের যাতে পড়াশুনার মধ্যে থাকে তার জন্য বিশেষ অ্যাসাইনমেন্টের ব্যবস্থা করছে পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ। বাড়িতে পড়ুয়ারা যাতে অমনোযোগী না হয় তার জন্য কিছু গাউড লাইন তৈরি করেছে মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ। এই গাইড লাইন বা নির্দেশিকায় উপকৃত হবে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়ারা। পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ পারিচালিত ৬১৪টি মাদ্রাসা সরকারি মডেল মাদ্রাসা
অ- অনুমোদিত আন-এডেড এবং এডেড মাদ্রাসাগুলিকে এই নির্দেশিকা পালন করতে হবে। আর এই নির্দেশ প্রতিটি মাদ্রাসা প্রধানদের কার্যকর করতে হবে। পর্ষদের পক্ষ থেকে ছাত্রছাত্রীদের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ, উদ্বেগ এবং পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতিকে কিভাবে শিক্ষা ক্ষেত্রে এগিয়ে যাবে সেগুলি এই সব অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে। সমীক্ষা রিপোর্ট, প্রকৃতি অধ্যায়ন, কেস স্টাডি, সৃজনশীল লেখা মডেল তৈরি, পাঠ্য বই মূল্যায়ণ।
কেন এই সমস্ত প্রোগ্রাম? এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে মাদ্রাসা শিক্ষা পর্যদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কার্যকলাপ ভিত্তিক শিখন প্রদ্ধতি এবং উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে উৎসাহিত করার জন্য পড়ুয়াদের নানাভাবে সহযোগিতা করা হবে। ছুটির সময়ও পড়ুয়াদের পঠন পাঠনের সঙ্গে সংযুক্ত থাকা এবং অধ্যায়ন করার যে প্রবণতা সে ব্যাপারে উৎসাহিত থাকবে পড়ুয়ারা। শিক্ষক শিক্ষিকাদের একটা রুটিন তৈরি করতে হবে। পড়ুয়াদের মধ্যে উদ্বেগ, মানসিক চাপ এবং পড়াশুনায় অনিশ্চয়তা যাতে তৈরি না হয় সে বিষয়ে ধারণা দেবেন শিক্ষকরা। গ্রীষ্মকালীন ছুটির মধ্যে পড়ুয়াদের আত্মবিশ্বাস, নিজেরা যাতে পড়াশোনায় দক্ষতা অর্জন করতে পারে সে ব্যাপারে পড়ুয়াদের উৎসাহিত করতে হবে।
মাদ্রাসা পর্ষদ পড়ুয়াদের ৪টি বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের জন্য গুরুত্ব দিতে বলেছেন। এই চারটি বিষয় হল, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা, সৃজনশীলতা, সহযোগিতা, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ। পর্ষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শিক্ষকদের শ্রেণী ভিত্তিক অ্যাসাইমেন্ট দিতে হবে।
প্রত্যেক পড়ুয়াদের জন্য আলাদা আলাদা অ্যাসাইমেন্ট হবে। তার জন্য একটি নির্দেশিকা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। ক্লাস ওয়ান থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত কবে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে। পড়ুয়াদের কবে জমা দিতে হবে সে তারিখ ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। সিনিয়ার মাদাসাগুলির জন্য এক ধরনের, আবার জুনিয়ার হাই এবং হাই মাদ্রাসা গুলির জন্য ভিন্ন অ্যাসাইনমেন্ট রয়েছে।
পড়ুয়াদের ১৫ ধরনের অ্যাসাইনমেন্ট দিতে পারবেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এর জন্য অতন্ত ১ দিন স্কুলে যেতে হবে। অ্যাসাইনমেন্ট বিষয়গুলি হবে —সমীক্ষা প্রতিবেদন, প্রকৃতি অধ্যায়ন, কেস স্টাডি, সৃজনশীল লেখা মডেল তৈরি, পাঠ্যবই মূল্যায়ন, আর্থিক সাক্ষরতা, জীবন দক্ষতা ভিত্তিক কার্যক্রম, সাইবার অপরাধ, সেলফ ডিফেন্স, বৃষ্টির জল সংরক্ষণ, পরিশ্রুত পানীয় জল, বাল্য বিবাহ রোধ, শিশু পাচার, দূষণ প্রতিরোধ।
পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মীদের সহায়তায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে শ্রেণী ভিত্তিক অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করবেন এবং অ্যাসাইনমেন্টগুলি পড়ুয়াদের বিতরণের ব্যবস্থা করবে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই কাজ সম্পন্ন করবেন। যে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে তার মধ্যেই অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করে স্কুলে জমা নিতে হবে।
বিশেষ প্রয়োজনে অনলাইন কিংবা হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যান্যভাবেও এই অ্যাসাইমেন্টগুলি জমা নিতে পারবেন। এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষ পর্ষদের সভাপতি ড. আবু তাহের কমরুদ্দিন বলেন, গ্রীষ্মের ছুটিতে পড়ুয়ারা যাতে নিজেদেরকে পড়াশোনার মধ্যে রা’তে পারে সেই জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাড়িতে থেকেও তাঁরা বিভিন্নভাবে পড়াশোনার মধ্যে সংযুক্ত থাকতে পারবে। মাদ্রাসা পড়ুয়ারা যে পিছিয়ে নেই, সে বিষয়টিও অনুধাবন করবে।
মাদ্রাসা পর্ষদের ডেপুটি সচিব ড. আজিজার রহমান বলেন, আমরা চেষ্টা করছি ছুটির মধ্যেও পড়ুয়ারা যাতে পড়াশোনার মধ্যে থাকে। মাদ্রাসা পর্ষদই উদ্যোগ প্রথম উদ্যোগ নিয়েছে।