০২ মে ২০২৫, শুক্রবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পঞ্চায়েতে ৭০ শতাংশ আসনে প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ঝাঁপাচ্ছে বিজেপি

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২৭ জানুয়ারী ২০২৩, শুক্রবার
  • / 5

নিজস্ব প্রতিবেদক: গ্রাম বাংলার ভোটযুদ্ধ ক্রমশই এগিয়ে আসছে। হম্বিতম্বি করলেও সব আসনে প্রার্থী দেওয়া যাবে কিনা,  তা নিয়ে বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতারা যথেষ্টই সংশয়ে।

সূত্রের খবর, মুখরক্ষার ক্ষেত্রে আপাতত ৭০ শতাংশ আসনে যাতে প্রার্থী দেওয়া যায়, সেই চেষ্টা চালাচ্ছেন সুকান্ত মজুমদাররা। উত্তরবঙ্গে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ আসনে এবং দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ আসনে যাতে প্রার্থী দেওয়া যায় তার জন্য এখন থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য জেলা নেতৃত্বকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রাজ্য বিজেপির এক মুখপাত্রের কথায়, ‘সংগঠনের যে বেহাল দশা তাতে ৭০ শতাংশ আসনে প্রার্থী দিতে পারলে সেটাই যথেষ্ট হবে।’

কত আসনে প্রার্থী দিতে পারবে দল তা নিয়ে মুখ না খুললেও বঙ্গ বিজেপির মুখিয়া দাবি করেছেন, ‘গতবারের চেয়ে বেশি আসনে জিতবে দল। বেশ কয়েকটি জেলা পরিষদও দখল করবে।’

পাঁচ বছর আগে পঞ্চায়েতের তিন স্তর মিলিয়ে ৫৮,৬৯২ আসনের মধ্যে ২০,০৭৬টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিলেন বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা। সিংহভাগই ছিলেন শাসকদলের। সব মিলিয়ে বিজেপি প্রার্থী দিয়েছিল ২৮ হাজার ১৬২ আসনে। অর্থা‍ৎ ৪৮ শতাংশ আসনে প্রার্থী দিতে সফল হয়েছিল পদ্ম শিবির। তার মধ্যে জেলা পরিষদের ৫৭৫টি, পঞ্চায়েত সমিতির ৪ হাজার ৯৫০টি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের ২২ হাজার ৬৩৭টি আসনে প্রার্থী দিতে সক্ষম হয়েছিল।

তার মধ্যে জেলা ওপরিষদের ২২ আসন, গ্রাম পঞ্চায়েতে ৫ হাজারের সামান্য বেশি আসনে জয়ী হয়েছিল। আলিপুরদুয়ার, জলপাউগুড়ি, ও ঝাড়গ্রামে চমকপ্রদ ফল করেছিল পদ্ম প্রার্থীরা।

আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে পুনর্বিন্যাসের পরে তিন স্তরেই আসন সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৮ সালে রাজ্যে গ্রাম পঞ্চায়েত আসন ছিল যেখানে ৪৮ হাজার ৬৫০, এ বার তা বেড়ে হচ্ছে ৬২ হাজার ৩৬২। পঞ্চায়েত সমিতির আসন ৯ হাজার ২১৭ থেকে বেড়ে হয়েছে ৯ হাজার ৪৯৮। জেলা পরিষদের আসন ৮২৫ থেকে বেড়ে হচ্ছে ৯২৮। অর্থা‍ৎ এক লাফে ১৪ হাজারের বেশি আসন বেড়েছে। মোট আসন সংক্যা দাঁড়িয়েছে ৭২ হাজার ৭৮৮। এই বিপুল সংখ্যক আসনে প্রার্থী জোগাড় করতে গিয়ে কালঘাম ছুটেছে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের।

দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে প্রতিটি বুথে কমিটি গঠন করতেই পারেনি বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব। অভিযোগ উঠেছে,  সাংগঠনিক বুথ কমিটি গঠন নিয়ে প্রচুর পরিমাণ জল মেশানো হয়েছিল। ভুয়ো পরিসংখ্যান পেশ করা হয়েছে জেপি নাড্ডা-বিএল সন্তোষদের কাছে। সেই কারচুপি ধরাও পড়েছে। অধিকাংশ বুথে যেখানে দল করার মতো কর্মী কিংবা সমর্থক খুঁজে পাওয়া যায়নি, সেখানে পঞ্চায়েতে প্রার্থী যে পাওয়া যাবে না, তা কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক হয়ে আসা সুনীল বনশল, মঙ্গল পাণ্ডেরা ভালভাবেই বুঝেছেন। তাই যাতে মুখরক্ষা করা যায়, তার জন্য অন্তত ৭০ শতাংশ আসনে প্রার্থী খুঁজে বের করতে কোমর কষে ঝাঁপানো হয়েছে।

প্রয়োজনে তৃণমূলের হয়ে যাঁরা মনোনয়ন পাবেন না তাঁদেরও প্রার্থী করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় সিপিএম ও কংগ্রেস নেতা ও কর্মীদেরও প্রার্থী করার লক্ষ্য নিয়ে এগনো হচ্ছে। দলের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘উত্তরবঙ্গে প্রার্থী খোঁজার কাজ মুশকিলের না হলেও দক্ষিণবঙ্গের অন্তত নয়টি জেলায় দলীয় প্রার্থী খুঁজে বের করাটা বড় চ্যালেঞ্জের। কীভাবে ওই চ্যালেঞ্জ উতরনো যাবে, তা বুঝে পারা যাচ্ছে না।’

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

পঞ্চায়েতে ৭০ শতাংশ আসনে প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ঝাঁপাচ্ছে বিজেপি

আপডেট : ২৭ জানুয়ারী ২০২৩, শুক্রবার

নিজস্ব প্রতিবেদক: গ্রাম বাংলার ভোটযুদ্ধ ক্রমশই এগিয়ে আসছে। হম্বিতম্বি করলেও সব আসনে প্রার্থী দেওয়া যাবে কিনা,  তা নিয়ে বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতারা যথেষ্টই সংশয়ে।

সূত্রের খবর, মুখরক্ষার ক্ষেত্রে আপাতত ৭০ শতাংশ আসনে যাতে প্রার্থী দেওয়া যায়, সেই চেষ্টা চালাচ্ছেন সুকান্ত মজুমদাররা। উত্তরবঙ্গে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ আসনে এবং দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ আসনে যাতে প্রার্থী দেওয়া যায় তার জন্য এখন থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য জেলা নেতৃত্বকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রাজ্য বিজেপির এক মুখপাত্রের কথায়, ‘সংগঠনের যে বেহাল দশা তাতে ৭০ শতাংশ আসনে প্রার্থী দিতে পারলে সেটাই যথেষ্ট হবে।’

কত আসনে প্রার্থী দিতে পারবে দল তা নিয়ে মুখ না খুললেও বঙ্গ বিজেপির মুখিয়া দাবি করেছেন, ‘গতবারের চেয়ে বেশি আসনে জিতবে দল। বেশ কয়েকটি জেলা পরিষদও দখল করবে।’

পাঁচ বছর আগে পঞ্চায়েতের তিন স্তর মিলিয়ে ৫৮,৬৯২ আসনের মধ্যে ২০,০৭৬টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিলেন বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা। সিংহভাগই ছিলেন শাসকদলের। সব মিলিয়ে বিজেপি প্রার্থী দিয়েছিল ২৮ হাজার ১৬২ আসনে। অর্থা‍ৎ ৪৮ শতাংশ আসনে প্রার্থী দিতে সফল হয়েছিল পদ্ম শিবির। তার মধ্যে জেলা পরিষদের ৫৭৫টি, পঞ্চায়েত সমিতির ৪ হাজার ৯৫০টি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের ২২ হাজার ৬৩৭টি আসনে প্রার্থী দিতে সক্ষম হয়েছিল।

তার মধ্যে জেলা ওপরিষদের ২২ আসন, গ্রাম পঞ্চায়েতে ৫ হাজারের সামান্য বেশি আসনে জয়ী হয়েছিল। আলিপুরদুয়ার, জলপাউগুড়ি, ও ঝাড়গ্রামে চমকপ্রদ ফল করেছিল পদ্ম প্রার্থীরা।

আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে পুনর্বিন্যাসের পরে তিন স্তরেই আসন সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৮ সালে রাজ্যে গ্রাম পঞ্চায়েত আসন ছিল যেখানে ৪৮ হাজার ৬৫০, এ বার তা বেড়ে হচ্ছে ৬২ হাজার ৩৬২। পঞ্চায়েত সমিতির আসন ৯ হাজার ২১৭ থেকে বেড়ে হয়েছে ৯ হাজার ৪৯৮। জেলা পরিষদের আসন ৮২৫ থেকে বেড়ে হচ্ছে ৯২৮। অর্থা‍ৎ এক লাফে ১৪ হাজারের বেশি আসন বেড়েছে। মোট আসন সংক্যা দাঁড়িয়েছে ৭২ হাজার ৭৮৮। এই বিপুল সংখ্যক আসনে প্রার্থী জোগাড় করতে গিয়ে কালঘাম ছুটেছে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের।

দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে প্রতিটি বুথে কমিটি গঠন করতেই পারেনি বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব। অভিযোগ উঠেছে,  সাংগঠনিক বুথ কমিটি গঠন নিয়ে প্রচুর পরিমাণ জল মেশানো হয়েছিল। ভুয়ো পরিসংখ্যান পেশ করা হয়েছে জেপি নাড্ডা-বিএল সন্তোষদের কাছে। সেই কারচুপি ধরাও পড়েছে। অধিকাংশ বুথে যেখানে দল করার মতো কর্মী কিংবা সমর্থক খুঁজে পাওয়া যায়নি, সেখানে পঞ্চায়েতে প্রার্থী যে পাওয়া যাবে না, তা কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক হয়ে আসা সুনীল বনশল, মঙ্গল পাণ্ডেরা ভালভাবেই বুঝেছেন। তাই যাতে মুখরক্ষা করা যায়, তার জন্য অন্তত ৭০ শতাংশ আসনে প্রার্থী খুঁজে বের করতে কোমর কষে ঝাঁপানো হয়েছে।

প্রয়োজনে তৃণমূলের হয়ে যাঁরা মনোনয়ন পাবেন না তাঁদেরও প্রার্থী করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় সিপিএম ও কংগ্রেস নেতা ও কর্মীদেরও প্রার্থী করার লক্ষ্য নিয়ে এগনো হচ্ছে। দলের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘উত্তরবঙ্গে প্রার্থী খোঁজার কাজ মুশকিলের না হলেও দক্ষিণবঙ্গের অন্তত নয়টি জেলায় দলীয় প্রার্থী খুঁজে বের করাটা বড় চ্যালেঞ্জের। কীভাবে ওই চ্যালেঞ্জ উতরনো যাবে, তা বুঝে পারা যাচ্ছে না।’