পাকিস্তানি রক্ষন্দাকে তাঁর সংসারে ফেরাতে ট্যুরিস্ট ভিসা দেবে কেন্দ্র

- আপডেট : ২ অগাস্ট ২০২৫, শনিবার
- / 103
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : এক লহমায় স্বামী, সন্তান নিয়ে ৩৬ বছরের ভরা সংসার ফেলে পাকিস্তানে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন বছর তেষট্টির জম্মুর গৃহবধূ রক্ষন্দা রশিদ। পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার ফলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত ছিল। কিন্তু জম্মু-কাশ্মীর-লাদাখ হাইকোর্টের নির্দেশে তাঁকে ফের ভারতে বসবাস করার জন্য ভিজিটর ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। রক্ষন্দা ভবিষ্যতে তাঁর দীর্ঘমেয়াদি ভিসা এবং ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য তাঁর বিচারাধীন আবেদন প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার মেহতা।
রক্ষন্দার স্বামী-সন্তানরা চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁকে ফিরিয়ে আনার জন্য। আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। অবশেষে মিলল সুখবর, আদালত দশ দিনের মধ্যে ওই পাকিস্তানি মহিলাকে ভারতে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেয়। আদালত বলে, মহিলা এদেশে ঘর-সংসার করছেন জেনেও সরকার ৩৮ বছর ধরে তাঁর ভিসার মেয়াদ ক্রমাগতভাবে বাড়িয়েছে। এখন এই বয়সে তিনি সংসার ছেড়ে থাকবেন কী করে?
বিচারপতি রাহুল ভারতী কেন্দ্র সরকারকে রশিদকে ভারতে ফিরিয়ে আনতে বলেন। আদালত বলে যে তার দীর্ঘমেয়াদী ভিসা ছিল এবং এই বিষয়ে যথাযথ তদন্ত ছাড়াই তাকে জোরপূর্বক ভারত থেকে নির্বাসিত করা বোধগম্য নয়। বিচারপতি ভারতী কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে রশিদকে নির্বাসন থেকে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেয়। শুনানির সময়, আদালত বলে, এই ধরনের সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র এই মামলায় প্রযোজ্য। অন্য কোনও মামলায় নজির স্থাপন করা যাবে না।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার পর দীর্ঘমেয়াদি ভিসায় ভারতে থাকা বিপুল সংখ্যক মানুষকে পাকিস্তানে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র সরকার। তাঁদের কাছে ভারতীয় নাগরিকত্ব ছিল না। তাঁদেরই মধ্যে একজন রক্ষন্দা রশিদ। জম্মুর তালাব খতিকান এলাকার বাসিন্দা রক্ষন্দা। ২৯ এপ্রিল আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে রশিদকে পাকিস্তানে পাঠানো হয়েছিল। তাঁর স্বামী সরকারি চাকুরে শেখ জহুর আহমেদ এবং চার সন্তান জম্মু ও কাশ্মীরে থাকেন। তাঁদের ভারতীয় নাগরিকত্ব রয়েছে।
রশিদ পাকিস্তানের ইসলামাবাদের বাসিন্দা ছিলেন এবং ১৯৯০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ১৪ দিনের ভিজিটর ভিসায় আটারি হয়ে ভারতে আসেন, কিন্তু এর পরে তিনি ক্রমাগত দীর্ঘমেয়াদী ভিসা পেতে থাকেন। তারপর তিনি এখানেই থেকে যান। ভারতীয় নাগরিক শেখ জহুর আহমেদের সঙ্গে বিয়ে হয়। তাঁর চারটি সন্তানও রয়েছে।
এরই মাঝে ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যুর পর পরিস্থিতি বদলে যায়। এরপর শুরু হয় তোড়জোড় কারা স্বল্পমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি ভিসা ভারতে আছেন যাঁদের ভারতীয় নাগরিকত্ব নেই। তাদের খুঁজে বের করতে কেন্দ্রের তরফে তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেই তালিকাতে অন্যদের মতো নাম ছিল বছর তেষট্টির রক্ষন্দা রশিদেরও। রশিদের কাছে পৌঁছে যায় ভারত ছাড়ার নোটিশ। তাঁর ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ায় ২৮ এপ্রিল পুলিশ বাড়িতে এসে তুলে নিয়ে যায়। ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে তাঁকে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
রশিদের ভিসার মেয়াদ ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত বৈধ ছিল। ভিসার মেয়াদ বাড়াতে ৪ জানুয়ারি তিনি আবেদন করেছিলেন। কিন্তু ভিসার মেয়াদ বাড়ানোয় অনুমোদন দেওয়া হয়নি।