পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: অন্ধবিশ্বাস ও তন্ত্রসাধনার নামে বর্বর ঘটনার সাক্ষী হতে যাচ্ছিল পশ্চিম মেদিনীপুর। তান্ত্রিকের কবলে পড়েও বরাতজোরে প্রাণরক্ষা শিশুর। জেলার গড়বেতা তিন নম্বর ব্লকের সার্দা গ্রামে এক শিশুকে বলি দেওয়ার চেষ্টা। ঘটনায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। অভিযুক্ত ব্যক্তি রঞ্জিত রুইদাস দীর্ঘদিন ধরে তন্ত্রসাধনা করছিল বলে জানা গিয়েছে। অভিযোগ, সে প্রতিবেশীর এক শিশুকে অপহরণ করে নিজের বাড়ির চিলেকোঠায় নিয়ে গিয়ে বলি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। স্থানীয়দের তৎপরতায় শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনার পর রঞ্জিত রুইদাস-সহ তার পরিবারের পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: সমবায় ভোটে তৃণমূলের বিপুল জয় কাঁথিতে

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধৃত রঞ্জিত রুইদাস (৫০) প্রতিবেশী আত্মীয়ের চার বছরের শিশুকে নিজের বাড়ির একটি বন্ধ ঘরে নিয়ে গিয়ে সিঁদুর মেখে তন্ত্রসাধনা করছিল। শিশুটির মা তাকে ঘুম পাড়িয়ে বাইরে গেলে কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে দেখেন, সে বিছানায় নেই। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। এক প্রতিবেশী জানালার ফাঁক দিয়ে শিশুটিকে দেখেন, তখনই গ্রামবাসীরা সেখানে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। শিশুটির সারা শরীরে সিঁদুর মাখানো ছিল, যা দেখে সন্দেহ দানা বাঁধে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সূর্যগ্রহণের দিন তন্ত্রসাধনার জন্যে রঞ্জিত শিশুটিকে অপহরণ করেছিল। দীর্ঘদিন ধরে সে তান্ত্রিক বিদ্যা চর্চা করছিল বলে জানা গিয়েছে। এমনকী তার অস্বাভাবিক আচরণ নিয়ে গ্রামবাসীরা আগে থেকেই সন্দেহ প্রকাশ করছিলেন। ঘটনার পর ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা রঞ্জিতের বাড়িতে চড়াও হন এবং তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

অন্যদিকে, পুলিশ জানিয়েছে গ্রামবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতে রঞ্জিতের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয় এবং সেখানে কিছু তান্ত্রিক উপকরণও পাওয়া গেছে। শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করা হলে পুলিশ রঞ্জিত রুইদাস-সহ তার পরিবারের পাঁচজনকে আটক করে। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, তন্ত্রসাধনার অঙ্গ হিসেবে শিশুটিকে বলির জন্য ব্যবহার করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, রঞ্জিতের সঙ্গে অন্য কোনও তান্ত্রিক গোষ্ঠীর যোগাযোগ আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।