পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: নির্বাচনী বন্ড ইস্যুতে যখন মোদি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীরা এককাট্টা হয়ে সুর চড়াচ্ছে, ঠিক তখনই কংগ্রেসের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা নিয়ে চরমে রাজনৈতিক তরজা। কিন্তু আয়কর দফতর জানালো কংগ্রেসের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়নি। ১৪ লক্ষ টাকা হিসেবের গড়মিলে জরিমানা হিসেবে ১৩৫ কোটি টাকা কাটা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৪-১৫ থেকে ২০২০-২১ পর্যন্ত সাত বছরের আয়কর সংক্রান্ত রিটার্ন পর্যালোচনা করেই এই পদক্ষেপ বলে আয়কর বিভাগ সূত্রে খবর।
আয়কর আইনের ১৩(১) ধারা লঙ্ঘনের প্রমাণ মেলার পরেই পদক্ষেপ করা হয়েছে। কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ অজয় মাকেনের অভিযোগ, কংগ্রেসের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে আয়কর দফতর জোর করে ১১৫ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা তুলে নিয়েছে। ১১টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আইন অনুযায়ী কোনও রাজনৈতিক দলকে আয়কর দিতে হয় না। কিন্তু কংগ্রেসের চারটি ব্যাংকে ১১টি অ্যাকাউন্টে ২১০ কোটি টাকার জরিমানা ধার্য হয়েছে! যুক্তি সরূপ দেখানো হচ্ছে, কংগ্রেসের অ্যাকাউন্টে ১৯৯ কোটি টাকার মধ্যে ১৪.৪৯ লক্ষ টাকা নগদে জমা পড়েছিল। কংগ্রেসের সাংসদেরা ওই চাঁদা দিয়েছিলেন। মাত্র ০.০৭% নগদে লেনদেনের জেরে ১০৬% জরিমানা করা হয়েছে।
চাঁদা মিলেছিল ২০১৭-১৮-তে। তার সাত বছর পরে, ভোটঘোষণার মাত্র তিন সপ্তাহ আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি ওই পুরনো কারণে ২১০ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তার পরে ১১৫ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা জোর করে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সূত্রের খবর, স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহ্যবাদী শতাব্দীপ্রাচীন রাজনৈতিক দলটির বিরুদ্ধে মোট তিনটি কর সংক্রান্ত মামলার কারণে এই পদক্ষেপ।
উল্লেখ্য, রাজনৈতিক মহলের খবর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কংগ্রেসের প্রধান ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেয় আয়কর দফতর। অভিযোগ ছিল, ২০১৮-১৯ সালের আর্থিক বছরে অনিয়ম করেছে করেছে কংগ্রেস।
কংগ্রেসের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা নিয়ে বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দফতরে বৈঠকে বসেন সোনিয়া গান্ধি। ভোটের মুখে কংগ্রেসের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা নিয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ান তিনি। তার সঙ্গে সরব হন কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, রাহুল গান্ধি, অজয় মাকেন সহ কেসি বেণুগোপাল। কংগ্রেসের সেই বেনজির আক্রমণের মুখে এবার আয়কর দফতর সূত্রে সাফাই, কংগ্রেসের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয় হয়নি। তবে জরিমানা হিসেবে সরূপ ১৩৫ কোটি টাকা কাটা হয়েছে।
কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ, দেশে গণতন্ত্র নেই। তাই লোকসভা ভোটের দুমাস আগে থেকে কংগ্রেসের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। আসল পরিকল্পনা কংগ্রেসকে গুঁড়িয়ে দেওয়া। নানা ইস্যুতে কংগ্রেসকে পঙ্গু করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মোদি সরকার।