১৫ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইন্দোনেশিয়ায় লাউডস্পিকারের তাণ্ডব থামাতে ফতোয়া জারি

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৪ অগাস্ট ২০২৫, রবিবার
  • / 529

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাভায় চলছে এক অদ্ভুত তাণ্ডব। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন লাউডস্পিকারের বিকট শব্দে শুধু রাতের ঘুম হারাম হচ্ছে না, ঘরের দেওয়াল ফেটে যাচ্ছে, ছাদ থেকে টাইলস খসে  পড়ছে! মানুষের শ্রবণশক্তিরও মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এই ভীতিজনক ঘটনার নাম ‘সাউন্ড হরেগ’, যা স্থানীয় জাভানিজ ভাষায় ‘কাঁপা’ বা ‘থরথর করা’ বোঝায়। ‘সাউন্ড হরেগ’ হল ট্রাকের উপর বিশাল আকারের লাউডস্পিকারের টাওয়ার বসিয়ে রাস্তা জুড়ে উচ্চ শধে গান বাজানোর এক উন্মাদনা। যেন ডিজে পার্টি।

এই পার্টিগুলো এতটাই বিকট যে এর কম্পনে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িতে ফাটল ধরছে, ছাদের টাইলস ভেঙে পড়ছে এবং দোকানেও ক্ষতি হচ্ছে। অনেক সময় দুপুর ১টা থেকে শুরু হয়ে ভোর ৩টা পর্যন্ত এই ভয়াবহ শব্দ  চলতে থাকে।

এই প্রথা স্থানীয় অর্থনীতিতে কিছুটা কর্মসংস্থান তৈরি করলেও, এর ফলে সামাজিক সংঘাত বেড়েছে। বিকট শব্দের  বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে কিছু লাউডস্পিকার মালিক প্রতিশোধ হিসেবে অভিযোগকারীর বাড়ির সামনে আরও জোরে গান বাজিয়ে হুমকি দেয়। এর ফলে অনেকেই প্রতিবাদ করতে ভয় পান। ‘সাউন্ড হরেগ’-এর পার্টিতে উপস্থিত অনেক মানুষ শ্রবণশক্তির সমস্যায় ভুগছেন। এর চেয়েও মর্মান্তিক একটি ঘটনা হল, বিকট শব্দের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় বাড়ছে বিক্ষোভ, রাজধানীতে সেনা মোতায়েন

এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ লাউডস্পিকারের ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কিন্তু সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপটি এসেছে স্থানীয় একটি ইসলামিক কাউন্সিল থেকে। তারা একটি ধর্মীয় ফতোয়া জারি করে ঘোষণা করেছে যে, এই ধরনের বিকট শব্দ সৃষ্টিকারী পার্টিগুলো ‘হারাম’ বা ইসলামে নিষিদ্ধ।

আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় সংসদ ভবনে আগুন দিল বিক্ষোভকারীরা, নিহত ৩

 

আরও পড়ুন: Indonesia earthquake: ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ইন্দোনেশিয়া, আহত ২৯

কাউন্সিলের মতে, এই শব্দ মানুষের ক্ষতি করছে, শান্তি নষ্ট করছে এবং ধর্মীয় কর্তব্য পালনে বাধা দিচ্ছে। এই ফতোয়াকে স্থানীয় জনগণ ব্যাপকভাবে সমর্থন করেছে এবং এর ফলে ‘সাউন্ড হরেগ’-এর বিরুদ্ধে আইনি ও ধর্মীয় উভয় পক্ষ থেকেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ইন্দোনেশিয়ায় লাউডস্পিকারের তাণ্ডব থামাতে ফতোয়া জারি

আপডেট : ২৪ অগাস্ট ২০২৫, রবিবার

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাভায় চলছে এক অদ্ভুত তাণ্ডব। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন লাউডস্পিকারের বিকট শব্দে শুধু রাতের ঘুম হারাম হচ্ছে না, ঘরের দেওয়াল ফেটে যাচ্ছে, ছাদ থেকে টাইলস খসে  পড়ছে! মানুষের শ্রবণশক্তিরও মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এই ভীতিজনক ঘটনার নাম ‘সাউন্ড হরেগ’, যা স্থানীয় জাভানিজ ভাষায় ‘কাঁপা’ বা ‘থরথর করা’ বোঝায়। ‘সাউন্ড হরেগ’ হল ট্রাকের উপর বিশাল আকারের লাউডস্পিকারের টাওয়ার বসিয়ে রাস্তা জুড়ে উচ্চ শধে গান বাজানোর এক উন্মাদনা। যেন ডিজে পার্টি।

এই পার্টিগুলো এতটাই বিকট যে এর কম্পনে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িতে ফাটল ধরছে, ছাদের টাইলস ভেঙে পড়ছে এবং দোকানেও ক্ষতি হচ্ছে। অনেক সময় দুপুর ১টা থেকে শুরু হয়ে ভোর ৩টা পর্যন্ত এই ভয়াবহ শব্দ  চলতে থাকে।

এই প্রথা স্থানীয় অর্থনীতিতে কিছুটা কর্মসংস্থান তৈরি করলেও, এর ফলে সামাজিক সংঘাত বেড়েছে। বিকট শব্দের  বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে কিছু লাউডস্পিকার মালিক প্রতিশোধ হিসেবে অভিযোগকারীর বাড়ির সামনে আরও জোরে গান বাজিয়ে হুমকি দেয়। এর ফলে অনেকেই প্রতিবাদ করতে ভয় পান। ‘সাউন্ড হরেগ’-এর পার্টিতে উপস্থিত অনেক মানুষ শ্রবণশক্তির সমস্যায় ভুগছেন। এর চেয়েও মর্মান্তিক একটি ঘটনা হল, বিকট শব্দের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় বাড়ছে বিক্ষোভ, রাজধানীতে সেনা মোতায়েন

এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ লাউডস্পিকারের ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কিন্তু সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপটি এসেছে স্থানীয় একটি ইসলামিক কাউন্সিল থেকে। তারা একটি ধর্মীয় ফতোয়া জারি করে ঘোষণা করেছে যে, এই ধরনের বিকট শব্দ সৃষ্টিকারী পার্টিগুলো ‘হারাম’ বা ইসলামে নিষিদ্ধ।

আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় সংসদ ভবনে আগুন দিল বিক্ষোভকারীরা, নিহত ৩

 

আরও পড়ুন: Indonesia earthquake: ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ইন্দোনেশিয়া, আহত ২৯

কাউন্সিলের মতে, এই শব্দ মানুষের ক্ষতি করছে, শান্তি নষ্ট করছে এবং ধর্মীয় কর্তব্য পালনে বাধা দিচ্ছে। এই ফতোয়াকে স্থানীয় জনগণ ব্যাপকভাবে সমর্থন করেছে এবং এর ফলে ‘সাউন্ড হরেগ’-এর বিরুদ্ধে আইনি ও ধর্মীয় উভয় পক্ষ থেকেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে।