বিশেষ প্রতিবেদন: পাকিস্তান, ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের চালানো হামলা নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। তেহরানের দাবি, ইসরাইলি গুপ্তচর, আইএস ঘাঁটি এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর লক্ষ্যবস্তুতে এসব হামলা চালানো হয়েছে। ইরানের এই কর্মকাণ্ডকে ইসরাইলের জন্য একটি ‘সতর্কবার্তা’ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। পাকিস্তানে ইরানের হামলার পর বৃহস্পতিবার পালটা হামলা চালায় ইসলামাবাদ। এ হামলায় ৯ জন নিহত হন। নজিরবিহীন এ ঘটনার পর ইরান-পাক কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। কয়েকদিন আগে ওমান উপসাগরে মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী একটি তেলবাহী ট্যাঙ্কার আটক করে তেহরান। ট্যাঙ্কারটি আমেরিকান বলে দাবি করে ইরানের নৌবাহিনী। এ নিয়ে সমুদ্রে আমেরিকার সঙ্গেও সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ইরানের। আমেরিকা ও পশ্চিমা দেশগুলোর প্রত্যক্ষ মদদে গাজায় হত্যাযজ্ঞ চললেও, ইসরাইলের বিরুদ্ধে জোরালো কোনও বক্তব্য দিচ্ছে না আরব দেশগুলো। তবে শুরু থেকেই ইসরাইলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে তেহরান। আর বর্তমান পরিস্থিতিতে ইসরাইলের জন্য ইরানের হুমকি সবচেয়ে বেশি বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। ইরানের বিপ্লবী গার্ডের দাবি, মাত্র ৪০০ সেকেন্ডে তেল আবিবকে ধ্বংস করতে সক্ষম হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘ফাত্তাহ’ রয়েছে ইরানের কাছে। ২০২৩ সালের জুন মাসে ক্ষেপণাস্ত্রটি উন্মোচন করা হয়। বলা হচ্ছে, শব্দের চেয়ে ১৫ গুণ দ্রুতগতিতে ১,৪০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে এটি। তবে ইরান এখনই যে ইসরাইলে সরাসরি হামলা করবে তা নয়। কিন্তু ইসরাইল যদি ইরানে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করে থাকে সেক্ষেত্রে বিপদ হতে পারে তেল আবিবের। ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব আলী আকবর আহমাদিয়ান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইসরাইল বিশ্বের যেকোনও দেশ থেকেই অভিযান পরিচালনা করুক না কেন, তা কোনওভাবেই তেহরান সহ্য করবে না।’
ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরানের জবাব সমানুপাতিক, চূড়ান্ত এবং শক্তিশালী হবে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই অঞ্চলে ইরানের সেনাবাহিনীর অভিযান মূলত আমেরিকা ও ইসরাইলকে লক্ষ্য করে, যারা মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তাহীনতা ও সংকট সৃষ্টিতে প্রধান ভূমিকা পালন করে। সম্প্রতি প্রতিবেশী দেশগুলোতে ইরানের এ পদক্ষেপ থেকে বোঝা যায়, তারা যেকোনও আগ্রাসন বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সুস্পষ্ট এবং উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে।