৩০ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিট বছরে দু’বার? আলোচনা চলছে

পুবের কলম
  • আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২১, বৃহস্পতিবার
  • / 78


পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ মেডিক্যালে ভর্তির সারা ভারত অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা ‘নিট’ বছরে দু’বার করা নিয়ে আলোচনা চলছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মধ্যে। গত বছরই তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরায়েল প্রথমে এই বিষয়টির উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু তখন কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বর্তমানে বিভিন্ন রাজ্য ও বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিট নিয়ে যেসব পরামর্শ আসছে– তাতে নিট বছরে দু’বার করার পক্ষে যুক্তি আরও মজবুত হয়েছে। দক্ষিণ ভারতে বেশ কয়েকজন নিট পরীক্ষার্থী অসফল হয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

‘হয় বিজয় নয় কুপোকাত’ বছরে একদিনের এই ধরনের পরীক্ষা নিয়ে বিশিষ্টদের অভিমত– দু’বার সুযোগ থাকলে পরীক্ষার্থীরা মনের জোর পাবে। এছাড়াও দেখা গিয়েছে মাত্র একটি বার টিক মারার পরীক্ষায় সফল হচ্ছেন বহু পরীক্ষার্থী– যারা উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষায় কম মেধার পরিচয় দিয়েছিলেন। এরপর প্রশ্ন উঠেছে– উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা কোচিং সেন্টারের সুবিধা নিচ্ছে নিট পরীক্ষার জন্য। সেখানে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের ও দরিদ্র পরিবারের পরীক্ষার্থীদের কাছে কোচিং-এর সেই সুযোগ নেই। সেকারণে মেধাবীদের জন্য অল্প সময়ের মধ্যেই আরও একবার পরীক্ষার সুযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা হলে তারা নিট-এ প্রথমবার ব্যর্থ হয়েও হতাশায় ভেঙে পড়বেন না। তাদের অপেক্ষাকাল ১২ মাস থেকে কমিয়ে ৬ মাস আনার চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন: হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে জাকারিয়ার নজরকাড়া সাফল্য, নিট পরীক্ষায় কাঁপিয়ে দিল কালিয়াচক

কেন্দ্রের দুইটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক এই বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। তাদের সামনে রয়েছে তামিলনাড়ু সরকার ও আদালত নির্দিষ্ট কমিটির রিপোর্টও। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছিল নিট যেন সম্পূর্ণ কোচিং সেন্টার নির্ভর পরীক্ষা না হয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন: কোটায় নিট পরীক্ষার্থীর দেহ উদ্ধার! আত্মহত্যা না খুন খতিয়ে দেখছে পুলিশ

উল্লেখ্য– নিট-এ ১৫ লক্ষ পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশকে মেধাতালিকায় স্থান দেওয়া হয়েছে। যাদের প্রাপ্ত নম্বর ৫০ শতাংশেরও কম– তারাও রয়েছেন এই তালিকায়। কম নম্বর পাওয়া পরীক্ষার্থীরা অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন মেধা তালিকায় থাকার ফলে। এই বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘ সময় প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন– কিন্তু এই পদ্ধতিতে কোনও পরিবর্তন হয়নি। ৯০ শতাংশ নম্বর পাওয়া পরীক্ষার্থীর পাশে ৪৫ শতাংশ নম্বর পাওয়া কিংবা বায়োলজিতে খুব কম নম্বর পাওয়া পড়ুয়া অ্যাপ্রণ পরে ডাক্তারি শিখছে। সেই কারণে অনেকে মনে করছেন বছরে দু’বার নিট পরীক্ষার ব্যবস্থা হলে মেধাবীরা হয়তো প্রথমবার ব্যর্থ হয়েও পরের বার সুযোগ পেতে পারেন।

আরও পড়ুন: নিট প্রবেশিকায় নজরকাড়া ফল তুফানগঞ্জের ইরফান হাবিবের 

মন্ত্রক সূত্রের খবর– আগামী ২০২২ সাল থেকেই দু’বার নিট পরীক্ষার ব্যবস্থা হতে চলেছে। যদিও শিক্ষামন্ত্রক সমর্থন দিলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সরকারিভাবে এখনও জানানো হয়নি। সরকারের মূল উদ্দেশ্য এই পরীক্ষাটিকে আরও স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন উপায়ে গ্রহণ করা।

মেডিক্যাল শিক্ষা ব্যবস্থার চূড়ান্ত দায়িত্ব রয়েছে এখন এনএমসি বা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের উপর। অপরদিকে আর্থিক অনগ্রসরদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা নিয়ে মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে।

শীর্ষকোট জানতে চায়– এ ক্ষেত্রে ৮ লক্ষ টাকা বার্ষিক আয় কিসের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের সলিসিটার জেনারেল আদালত থেকে আরও চার সপ্তাহ সময় চেয়ে নিয়েছেন। আর সেজন্য ২০২১ নিট-এর ফল প্রকাশ হলেও কাউন্সিলিং চার সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই কোটা রুল চ্যালেঞ্জ করা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় দেওয়ার পরই কাউন্সিলিং শুরু হতে পারে।



Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

নিট বছরে দু’বার? আলোচনা চলছে

আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২১, বৃহস্পতিবার


পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ মেডিক্যালে ভর্তির সারা ভারত অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা ‘নিট’ বছরে দু’বার করা নিয়ে আলোচনা চলছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মধ্যে। গত বছরই তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরায়েল প্রথমে এই বিষয়টির উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু তখন কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বর্তমানে বিভিন্ন রাজ্য ও বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিট নিয়ে যেসব পরামর্শ আসছে– তাতে নিট বছরে দু’বার করার পক্ষে যুক্তি আরও মজবুত হয়েছে। দক্ষিণ ভারতে বেশ কয়েকজন নিট পরীক্ষার্থী অসফল হয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

‘হয় বিজয় নয় কুপোকাত’ বছরে একদিনের এই ধরনের পরীক্ষা নিয়ে বিশিষ্টদের অভিমত– দু’বার সুযোগ থাকলে পরীক্ষার্থীরা মনের জোর পাবে। এছাড়াও দেখা গিয়েছে মাত্র একটি বার টিক মারার পরীক্ষায় সফল হচ্ছেন বহু পরীক্ষার্থী– যারা উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষায় কম মেধার পরিচয় দিয়েছিলেন। এরপর প্রশ্ন উঠেছে– উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা কোচিং সেন্টারের সুবিধা নিচ্ছে নিট পরীক্ষার জন্য। সেখানে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের ও দরিদ্র পরিবারের পরীক্ষার্থীদের কাছে কোচিং-এর সেই সুযোগ নেই। সেকারণে মেধাবীদের জন্য অল্প সময়ের মধ্যেই আরও একবার পরীক্ষার সুযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা হলে তারা নিট-এ প্রথমবার ব্যর্থ হয়েও হতাশায় ভেঙে পড়বেন না। তাদের অপেক্ষাকাল ১২ মাস থেকে কমিয়ে ৬ মাস আনার চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন: হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে জাকারিয়ার নজরকাড়া সাফল্য, নিট পরীক্ষায় কাঁপিয়ে দিল কালিয়াচক

কেন্দ্রের দুইটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক এই বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। তাদের সামনে রয়েছে তামিলনাড়ু সরকার ও আদালত নির্দিষ্ট কমিটির রিপোর্টও। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছিল নিট যেন সম্পূর্ণ কোচিং সেন্টার নির্ভর পরীক্ষা না হয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন: কোটায় নিট পরীক্ষার্থীর দেহ উদ্ধার! আত্মহত্যা না খুন খতিয়ে দেখছে পুলিশ

উল্লেখ্য– নিট-এ ১৫ লক্ষ পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশকে মেধাতালিকায় স্থান দেওয়া হয়েছে। যাদের প্রাপ্ত নম্বর ৫০ শতাংশেরও কম– তারাও রয়েছেন এই তালিকায়। কম নম্বর পাওয়া পরীক্ষার্থীরা অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন মেধা তালিকায় থাকার ফলে। এই বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘ সময় প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন– কিন্তু এই পদ্ধতিতে কোনও পরিবর্তন হয়নি। ৯০ শতাংশ নম্বর পাওয়া পরীক্ষার্থীর পাশে ৪৫ শতাংশ নম্বর পাওয়া কিংবা বায়োলজিতে খুব কম নম্বর পাওয়া পড়ুয়া অ্যাপ্রণ পরে ডাক্তারি শিখছে। সেই কারণে অনেকে মনে করছেন বছরে দু’বার নিট পরীক্ষার ব্যবস্থা হলে মেধাবীরা হয়তো প্রথমবার ব্যর্থ হয়েও পরের বার সুযোগ পেতে পারেন।

আরও পড়ুন: নিট প্রবেশিকায় নজরকাড়া ফল তুফানগঞ্জের ইরফান হাবিবের 

মন্ত্রক সূত্রের খবর– আগামী ২০২২ সাল থেকেই দু’বার নিট পরীক্ষার ব্যবস্থা হতে চলেছে। যদিও শিক্ষামন্ত্রক সমর্থন দিলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সরকারিভাবে এখনও জানানো হয়নি। সরকারের মূল উদ্দেশ্য এই পরীক্ষাটিকে আরও স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন উপায়ে গ্রহণ করা।

মেডিক্যাল শিক্ষা ব্যবস্থার চূড়ান্ত দায়িত্ব রয়েছে এখন এনএমসি বা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের উপর। অপরদিকে আর্থিক অনগ্রসরদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা নিয়ে মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে।

শীর্ষকোট জানতে চায়– এ ক্ষেত্রে ৮ লক্ষ টাকা বার্ষিক আয় কিসের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের সলিসিটার জেনারেল আদালত থেকে আরও চার সপ্তাহ সময় চেয়ে নিয়েছেন। আর সেজন্য ২০২১ নিট-এর ফল প্রকাশ হলেও কাউন্সিলিং চার সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই কোটা রুল চ্যালেঞ্জ করা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় দেওয়ার পরই কাউন্সিলিং শুরু হতে পারে।