১৫ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বর্ষার মরসুমে গঙ্গাবক্ষে দেখা নেই ইলিশের, হতাশ গঙ্গাপাড়ের মৎস্যজীবীরা

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১ অগাস্ট ২০২৫, শুক্রবার
  • / 82

রেজাউল করিম,  বৈষ্ণবনগর: ফারাক্কার ইলিশ মানেই জিভে জল আসার জোগাড়। বাংলাদেশের ইলিশের সঙ্গে স্বাদে অনেকটাই মিল রয়েছে। বাংলাদেশের ইলিশের মতোই সমান চাহিদা গঙ্গার ফারাক্কার ইলিশের। ২২০০ টাকার ওপর কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে এখন ফরাক্কার ইলিশ।

বর্ষার ইলিশ আরও সুস্বাদু। ইলিশপ্রেমীরা সাধরণত এই বর্ষার ইলিশের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। কিন্তু সেই দিক থেকে ইলিশেরই দেখা নেই বললেই চলে। হতাশ ইলিশপ্রেমী থেকে মৎস্যজীবীরাও। এদিকে ইলিশের দেখা না পেয়ে একরকম দুশ্চিন্তায় মৎস্যজীবীরা। এবার কোন কাজ করে সংসার চালানো যায়, তা নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায় তাঁরা। গঙ্গার পাড়ের মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে তাঁদের সংসার। মূলত ইলিশের ওপর নির্ভরশীল বেশি।

আরও পড়ুন: পুজোর আগেই বাংলায় আসছে ৩০০০ মেট্রিক টন ইলিশ

ইলিশের দেখা মিললে কিছুটা হাতে টাকা আসে। সাধারণত মালদাবাসীর কাছে গঙ্গার ইলিশ বলতে ফারাক্কার ইলিশই বোঝায়। আর স্বাদে, গন্ধে ফারাক্কার ইলিশ খানিকটা ওপার বাংলার ইলিশের সমগোত্রীয় প্রায়। সে-দিক থেকে ফারাক্কার ইলিশের চাহিদা ব্যাপক। যদিও দামও থাকে চড়া। সাধারণত বর্ষার মরশুমেই ফারাক্কার ইলিশের দেখা মেলে।

আরও পড়ুন: নামখানার মুড়িগঙ্গায় ডুবে যাওয়া ছাই বোঝাই জাহাজ থেকে দূষিত হচ্ছে নদী

আর এই ইলিশের ওপর ভরসা করে সংসার চলে কালিয়াচক-৩ ব্লকের প্রায় হাজার খানেক জেলের। সংশ্লিষ্ট ব্লকের গঙ্গার পার ঘেঁষা গ্রামগুলি হোসেনপুর, সুজাপুর দিয়ারা, ভাঙাটোলা, চকবাহাদুরপুর, কুলি দিয়ারা, পারলালপুর, গোলাপ-মণ্ডল পাড়া-সহ অন্যান্য গ্রাম। এসব এলাকার সিংহভাগ বাসিন্দাই মৎস্যজীবী। তুলনামূলক ভাঙাটোলা, সুজাপুর দিয়ারায় মৎস্যজীবীর সংখ্যাটা বেশি। আর সব জেলেদের ইলিশের ওপর ভরসা করেই মাছধরা।

আরও পড়ুন: মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার বিএলসি পাস এখনো না পাওয়ায় ক্ষোভ সুন্দরবনের মৎস্যজীবিদের মধ্যে

ভরা বর্ষায় ইলিশের দেখা না পেয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন মৎস্যজীবীরা। উত্তরবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরাম মালদা শাখার সহ সভাপতি ইউনুস আলি জানান, ‘এক সময় বর্ষার সময় ফরাক্কার ইলিশের ভালই দেখা মিলত। কিন্তু এখন ভিন্ন চিত্র। ভরা মরশুমেও ইলিশের দেখা নেই।’  মৎস্যজীবীদের মধ্যে রঞ্জিত হালদার, মিঠু মন্ডল, অরুন হালদাররা  জানান, ‘গঙ্গায় তেমন মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। ইলিশ প্রায় উধাও। দিনের শেষে কোনও উপার্জন নেই। সংসার কী করে চলবে কিছুই বুঝতে পারছি না। ইলিশের ওপর দাঁড়িয়ে আমাদের গোটা বছরের রোজগার। অথচ সেটারই দেখা নেই।’

 

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বর্ষার মরসুমে গঙ্গাবক্ষে দেখা নেই ইলিশের, হতাশ গঙ্গাপাড়ের মৎস্যজীবীরা

আপডেট : ১ অগাস্ট ২০২৫, শুক্রবার

রেজাউল করিম,  বৈষ্ণবনগর: ফারাক্কার ইলিশ মানেই জিভে জল আসার জোগাড়। বাংলাদেশের ইলিশের সঙ্গে স্বাদে অনেকটাই মিল রয়েছে। বাংলাদেশের ইলিশের মতোই সমান চাহিদা গঙ্গার ফারাক্কার ইলিশের। ২২০০ টাকার ওপর কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে এখন ফরাক্কার ইলিশ।

বর্ষার ইলিশ আরও সুস্বাদু। ইলিশপ্রেমীরা সাধরণত এই বর্ষার ইলিশের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। কিন্তু সেই দিক থেকে ইলিশেরই দেখা নেই বললেই চলে। হতাশ ইলিশপ্রেমী থেকে মৎস্যজীবীরাও। এদিকে ইলিশের দেখা না পেয়ে একরকম দুশ্চিন্তায় মৎস্যজীবীরা। এবার কোন কাজ করে সংসার চালানো যায়, তা নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায় তাঁরা। গঙ্গার পাড়ের মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে তাঁদের সংসার। মূলত ইলিশের ওপর নির্ভরশীল বেশি।

আরও পড়ুন: পুজোর আগেই বাংলায় আসছে ৩০০০ মেট্রিক টন ইলিশ

ইলিশের দেখা মিললে কিছুটা হাতে টাকা আসে। সাধারণত মালদাবাসীর কাছে গঙ্গার ইলিশ বলতে ফারাক্কার ইলিশই বোঝায়। আর স্বাদে, গন্ধে ফারাক্কার ইলিশ খানিকটা ওপার বাংলার ইলিশের সমগোত্রীয় প্রায়। সে-দিক থেকে ফারাক্কার ইলিশের চাহিদা ব্যাপক। যদিও দামও থাকে চড়া। সাধারণত বর্ষার মরশুমেই ফারাক্কার ইলিশের দেখা মেলে।

আরও পড়ুন: নামখানার মুড়িগঙ্গায় ডুবে যাওয়া ছাই বোঝাই জাহাজ থেকে দূষিত হচ্ছে নদী

আর এই ইলিশের ওপর ভরসা করে সংসার চলে কালিয়াচক-৩ ব্লকের প্রায় হাজার খানেক জেলের। সংশ্লিষ্ট ব্লকের গঙ্গার পার ঘেঁষা গ্রামগুলি হোসেনপুর, সুজাপুর দিয়ারা, ভাঙাটোলা, চকবাহাদুরপুর, কুলি দিয়ারা, পারলালপুর, গোলাপ-মণ্ডল পাড়া-সহ অন্যান্য গ্রাম। এসব এলাকার সিংহভাগ বাসিন্দাই মৎস্যজীবী। তুলনামূলক ভাঙাটোলা, সুজাপুর দিয়ারায় মৎস্যজীবীর সংখ্যাটা বেশি। আর সব জেলেদের ইলিশের ওপর ভরসা করেই মাছধরা।

আরও পড়ুন: মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার বিএলসি পাস এখনো না পাওয়ায় ক্ষোভ সুন্দরবনের মৎস্যজীবিদের মধ্যে

ভরা বর্ষায় ইলিশের দেখা না পেয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন মৎস্যজীবীরা। উত্তরবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরাম মালদা শাখার সহ সভাপতি ইউনুস আলি জানান, ‘এক সময় বর্ষার সময় ফরাক্কার ইলিশের ভালই দেখা মিলত। কিন্তু এখন ভিন্ন চিত্র। ভরা মরশুমেও ইলিশের দেখা নেই।’  মৎস্যজীবীদের মধ্যে রঞ্জিত হালদার, মিঠু মন্ডল, অরুন হালদাররা  জানান, ‘গঙ্গায় তেমন মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। ইলিশ প্রায় উধাও। দিনের শেষে কোনও উপার্জন নেই। সংসার কী করে চলবে কিছুই বুঝতে পারছি না। ইলিশের ওপর দাঁড়িয়ে আমাদের গোটা বছরের রোজগার। অথচ সেটারই দেখা নেই।’