আরও সহায়তা চায় পাকিস্তান, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১,৩০০

- আপডেট : ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, রবিবার
- / 14
‘ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক এবং ৩ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষের জন্য একটি বিপুল মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। এর জন্য আমি আমার পাকিস্তানি ভাই, পাকিস্তান প্রবাসী এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে পাকিস্তানকে সহায়তার আবেদন জানাচ্ছি।’ কেন্দ্রীয় পরিকল্পনামন্ত্রী, আহসান ইকবাল।
পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ১,৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে ৪১৬ শিশু। দেশজুড়ে ত্রাণ কার্যক্রম চালু রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এই বন্যায় দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দেশ পুনর্গঠনে প্রয়োজন বিরাট অর্থ। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সিন্ধু প্রদেশের বেশ কিছু এলাকায় নদ-নদীর পানি বেড়েই চলেছে।
বন্যাকবলিত মানুষের পর্যাপ্ত ত্রাণের জন্য ১৬ কোটি ডলারের আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ। পাকিস্তানে বন্যাকবলিতদের মধ্যে সাড়ে ৬ লক্ষ অন্তঃসত্ত্বা নারী রয়েছেন। তাদেরই একজন হলেন শামসাদ গুল। বন্যায় ঘরবাড়ি হারিয়ে ৪২ বছর বয়সী এই নারী এখন পঞ্জাব প্রদেশের ফজলপুর এলাকার একটি আশ্রয়কেন্দ্রে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বর্তমানে তিনি ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
শামসাদ জানান, গ্রামে বন্যার পানি ঢুকলেও সেখানেই পরিবার নিয়ে থাকার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তবে পানি বাড়তে থাকায় শেষপর্যন্ত ৫ সন্তান নিয়ে ফজলপুরের আশ্রয়কেন্দ্রে এসে ওঠেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আশ্রয়কেন্দ্রে আমার মতো অনেকেই আছেন। এখানে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। চিকিৎসক না হলেও, এখানে অন্তত একজন নারী নার্স প্রয়োজন। জানি না কীভাবে এ অবস্থায় থাকব। এরপর কোথায় যাব, তাও বলতে পারছি না।’ রাষ্ট্রসংঘ জানায়, পাকিস্তানে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা ৭৩ হাজারেরও বেশি নারীর আগামী মাসে সন্তান প্রসবের সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের জন্য চিকিৎসক, নার্স এবং ওষুধপত্র প্রয়োজন। সিন্ধু প্রদেশের ১ হাজারেরও বেশি স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র পুরোপুরি কিংবা আংশিক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় সংকট আরও তীব্র হয়েছে।
এরই মধ্যে রাষ্ট্রসংঘের ডাকে সাড়া দিয়ে চিন, সউদি আরব, কাতার, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ও উজবেকিস্তান বন্যাদুর্গতদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে। এই বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাকিস্তানের কৃষি খাত। দেশটির এক–তৃতীয়াংশ ডুবে যাওয়ায় বেহিসেব ক্ষতি হয়েছে চাষিদের। দেশটির সিন্ধু প্রদেশের কৃষক আশরাফ আলি এবার ২,৫০০ একর জমিতে তুলা ও আখ চাষ করেছিলেন। কিন্তু সেই ফসল ঘরে তুলতে পারেননি। তার আগেই বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে তাঁর খেত ও ফসল। হতাশ কণ্ঠে আশরাফ বলেন, ‘এবারের বন্যা আমাদের ৫০ বছর পিছিয়ে দিয়েছে।’