০১ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে চলছে উদ্ধারকাজ

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৩ জুন ২০২২, বৃহস্পতিবার
  • / 14

পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ বুধবার সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে দক্ষিণ-পূর্ব আফগানিস্তানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মৃতের সংখ্যা হাজার পেরিয়েছে। বহু লাশ এখনও উদ্ধার করা যায়নি। অনেক মানুষের লাশ ভেঙে পড়া ঘরবাড়ির নিচে চাপা পড়ে আছে। এসব বাড়ির বেশিরভাগই রোদে শুকানো কাদায় নির্মিত। স্থানীয়রা হাত লাগিয়েছেন উদ্ধারকাজে।

ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে চলছে উদ্ধারকাজ

তালিবান সরকার ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে উদ্ধারকাজের চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রত্যন্ত এলাকা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিশেষ করে প্রবল বর্ষণের কারণে বাইরের সাহায্য এসে পৌঁছাতে ব্যাপক অসুবিধা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত। ঘটনাস্থলে কী হচ্ছে, তার আপডেট পেতে খুব অসুবিধা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আফগান সরকারের তথ্য বিষয়ক কর্মকর্তা মুহাম্মদ আমিন হুজাইফা। উদ্ধারকৃত লাশগুলিকে দ্রুত কবর দিয়ে দেওয়া হচ্ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে। লাশ দাফনের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে তালিবান সরকার। হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া।

ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে চলছে উদ্ধারকাজ

খোলা আকাশের নিচে তাঁবু খাটিয়ে কেউ কেউ আশ্রয় খোঁজার চেষ্টা করছেন। প্রায় ৩ হাজার মানুষ আহত হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে। তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাসপাতালের বাইরে ভীড় করেছেন স্বজনরা। এই পরিস্থিতিতে দেশটির তালিবান সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সহায়তার আর্জি জানিয়েছে। বুধবার রাতেই সেনাবাহিনীর দুটি বিমানে করে ত্রাণ পাঠিয়েছে ইরান। প্রাথমিক পর্যায়ে ১০০০ খাবার প্যাকেট ও ৪০০টি তাঁবু পাঠানো হয়েছে। সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে ভারত, আমেরিকা, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। সাহায্য করছে পাকিস্তানও।

ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে চলছে উদ্ধারকাজ
৬.১ মাত্রার ভূমিকম্পে আফগানিস্তানে প্রায় ২ হাজার বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ। দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের পাকতিকা প্রদেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। রাষ্ট্রসংঘ সেখানে বাস্তুচ্যুত মানুষদের জন্য জরুরি আশ্রয় ও খাদ্য সহায়তা দেওয়ার জন্য কাজ করছে। তবে প্রবল বর্ষণ ও উপযুক্ত উপকরণের অভাবে উদ্ধার কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। বেঁচে ফিরে আসা মানুষরা জানিয়েছেন, ভূকম্পের কেন্দ্রে অসংখ্য গ্রাম পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। সঙ্গে সড়ক ও মোবাইল ফোনের টাওয়ারও ধসে পড়েছে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, হতাহতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে। গত ২ দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলা তালিবান সরকারের জন্য একটি বড় প্রতিবন্ধকতা হতে পারে বলে ভাবছে ওয়াকিফহাল মহল।

এ মুহূর্তে আফগানিস্তান মানবতা ও অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে। এক সিনিয়র তালিবান কর্মকর্তা আবদুল কাহার বালখি বলেন, সরকার মানুষকে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী আর্থিক সহায়তা দিতে অপারগ। তিনি জানান, দাতা সংস্থা, পার্শ্ববর্তী দেশ ও বিশ্বের অন্যান্য শক্তিশালী রাষ্ট্র সাহায্য করছে। তবে এই সহায়তার পরিমাণ আরও অনেক বাড়াতে হবে, কারণ এ ধরনের ভয়াবহ ভূমিকম্প গত কয়েক দশকে দেখা যায়নি। মানবিকতার খাতিরে আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়ানো উচিত বিশ্বের। রাষ্ট্রসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস জানান, তারা এই দুর্যোগ মোকাবিলায় পুরোপুরি নিয়োজিত।

ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে চলছে উদ্ধারকাজ

রাষ্টসংঘের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন তারা স্বাস্থ্যকর্মীদের দল, মেডিকেল উপকরণ, খাদ্য ও জরুরি আশ্রয় সেবা নিয়ে ভূমিকম্প আক্রান্ত এলাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। চিকিৎসাসেবার সঙ্গে যুক্ত অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন এই ভূমিকম্পে। এক ডাক্তার বলেন, আমি জানি না আমার কতজন সহকর্মী এখনও বেঁচে আছেন। একজন আফগান সাংবাদিক জানান, ‘অসংখ্য মোবাইল ফোন টাওয়ার ধ্বংস হয়ে যাওয়াতে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ফলে মৃতদের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। অনেকে তাদের স্বজনদের খোঁজ নিতে পারছেন না, কারণ মোবাইল ফোন কাজ করছে না। দুর্ঘটনার বেশ কয়েক ঘণ্টা পর আমি জেনেছি আমার ভাই ও তার পরিবারের সদস্যরা নিহত হয়েছেন।’

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে চলছে উদ্ধারকাজ

আপডেট : ২৩ জুন ২০২২, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ বুধবার সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে দক্ষিণ-পূর্ব আফগানিস্তানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মৃতের সংখ্যা হাজার পেরিয়েছে। বহু লাশ এখনও উদ্ধার করা যায়নি। অনেক মানুষের লাশ ভেঙে পড়া ঘরবাড়ির নিচে চাপা পড়ে আছে। এসব বাড়ির বেশিরভাগই রোদে শুকানো কাদায় নির্মিত। স্থানীয়রা হাত লাগিয়েছেন উদ্ধারকাজে।

ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে চলছে উদ্ধারকাজ

তালিবান সরকার ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে উদ্ধারকাজের চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রত্যন্ত এলাকা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিশেষ করে প্রবল বর্ষণের কারণে বাইরের সাহায্য এসে পৌঁছাতে ব্যাপক অসুবিধা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত। ঘটনাস্থলে কী হচ্ছে, তার আপডেট পেতে খুব অসুবিধা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আফগান সরকারের তথ্য বিষয়ক কর্মকর্তা মুহাম্মদ আমিন হুজাইফা। উদ্ধারকৃত লাশগুলিকে দ্রুত কবর দিয়ে দেওয়া হচ্ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে। লাশ দাফনের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে তালিবান সরকার। হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া।

ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে চলছে উদ্ধারকাজ

খোলা আকাশের নিচে তাঁবু খাটিয়ে কেউ কেউ আশ্রয় খোঁজার চেষ্টা করছেন। প্রায় ৩ হাজার মানুষ আহত হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে। তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাসপাতালের বাইরে ভীড় করেছেন স্বজনরা। এই পরিস্থিতিতে দেশটির তালিবান সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সহায়তার আর্জি জানিয়েছে। বুধবার রাতেই সেনাবাহিনীর দুটি বিমানে করে ত্রাণ পাঠিয়েছে ইরান। প্রাথমিক পর্যায়ে ১০০০ খাবার প্যাকেট ও ৪০০টি তাঁবু পাঠানো হয়েছে। সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে ভারত, আমেরিকা, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। সাহায্য করছে পাকিস্তানও।

ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে চলছে উদ্ধারকাজ
৬.১ মাত্রার ভূমিকম্পে আফগানিস্তানে প্রায় ২ হাজার বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ। দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের পাকতিকা প্রদেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। রাষ্ট্রসংঘ সেখানে বাস্তুচ্যুত মানুষদের জন্য জরুরি আশ্রয় ও খাদ্য সহায়তা দেওয়ার জন্য কাজ করছে। তবে প্রবল বর্ষণ ও উপযুক্ত উপকরণের অভাবে উদ্ধার কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। বেঁচে ফিরে আসা মানুষরা জানিয়েছেন, ভূকম্পের কেন্দ্রে অসংখ্য গ্রাম পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। সঙ্গে সড়ক ও মোবাইল ফোনের টাওয়ারও ধসে পড়েছে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, হতাহতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে। গত ২ দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলা তালিবান সরকারের জন্য একটি বড় প্রতিবন্ধকতা হতে পারে বলে ভাবছে ওয়াকিফহাল মহল।

এ মুহূর্তে আফগানিস্তান মানবতা ও অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে। এক সিনিয়র তালিবান কর্মকর্তা আবদুল কাহার বালখি বলেন, সরকার মানুষকে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী আর্থিক সহায়তা দিতে অপারগ। তিনি জানান, দাতা সংস্থা, পার্শ্ববর্তী দেশ ও বিশ্বের অন্যান্য শক্তিশালী রাষ্ট্র সাহায্য করছে। তবে এই সহায়তার পরিমাণ আরও অনেক বাড়াতে হবে, কারণ এ ধরনের ভয়াবহ ভূমিকম্প গত কয়েক দশকে দেখা যায়নি। মানবিকতার খাতিরে আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়ানো উচিত বিশ্বের। রাষ্ট্রসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস জানান, তারা এই দুর্যোগ মোকাবিলায় পুরোপুরি নিয়োজিত।

ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে চলছে উদ্ধারকাজ

রাষ্টসংঘের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন তারা স্বাস্থ্যকর্মীদের দল, মেডিকেল উপকরণ, খাদ্য ও জরুরি আশ্রয় সেবা নিয়ে ভূমিকম্প আক্রান্ত এলাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। চিকিৎসাসেবার সঙ্গে যুক্ত অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন এই ভূমিকম্পে। এক ডাক্তার বলেন, আমি জানি না আমার কতজন সহকর্মী এখনও বেঁচে আছেন। একজন আফগান সাংবাদিক জানান, ‘অসংখ্য মোবাইল ফোন টাওয়ার ধ্বংস হয়ে যাওয়াতে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ফলে মৃতদের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। অনেকে তাদের স্বজনদের খোঁজ নিতে পারছেন না, কারণ মোবাইল ফোন কাজ করছে না। দুর্ঘটনার বেশ কয়েক ঘণ্টা পর আমি জেনেছি আমার ভাই ও তার পরিবারের সদস্যরা নিহত হয়েছেন।’