অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের পদোন্নতি মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকার

- আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২৫, শনিবার
- / 13
মোল্লা জসিমউদ্দিন : এবার সুপ্রিম কোর্টের দরবারে রাজ্য অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের পদোন্নতি সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকার। চলতি বছরের ২৫শে জানুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ ‘বঞ্চিত’ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের পক্ষেই রায় দিয়েছিল।
সেই রায়েই বিরুদ্ধে রাজ্য এবার বিশেষ অনুমতি পিটিশন (এসএলপি) দায়ের করল সুপ্রিম কোর্টে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন মমতা পারিহার-সহ ৪১৫ জন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। তাঁদের অভিযোগ, -‘রাজ্য সরকার কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য করে সুপারভাইজার পদে সরাসরি নিয়োগ করছে। দীর্ঘ প্রায় দুই দশক ধরে পদোন্নতির সুযোগ না পেয়ে তারা কার্যত বঞ্চিত। অথচ রাজ্যের নানা প্রকল্প বাস্তবায়নে তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছেন’।
২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশিকা জারি করে জানায়, -‘সুপারভাইজার পদে নিয়োগের ৫০ শতাংশ শূন্যপদে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মধ্যে থেকেই পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করতে হবে’। অভিযোগ ২০১৯ সালে রাজ্য সরকার কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য করে ৩৪৫৮টি শূন্যপদের মধ্যে মাত্র ৪২২টি পদ অঙ্গনওয়াড়িদের জন্য রাখে। বাকি ৩০৩৬টি পদে সরাসরি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে থাকে।
এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হলে বিচারপতি লপিতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রায়ে জানিয়েছেন , -‘কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে ৫০ শতাংশ পদে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের থেকেই পদোন্নতির ভিত্তিতে নিয়োগ করতে হবে’। কিন্তু হাইকোর্টের সেই নির্দেশ অমান্য করে রাজ্য সরকার নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে থাকে বলেই অভিযোগ।
অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদেরপক্ষের আইনজীবী আশিস কুমার চৌধুরীর দাবি, ‘সর্বশেষ সুপারভাইজার নিয়োগ হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। তারপর ২০১৫ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে থাকে। সেখানে জানায় সুপারভাইজার পদে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী থেকে ৫০ শতাংশ এবং বাইরে থেকে ৫০ শতাংশ কর্মী মোট শূন্যপদে নিয়োগ করতে পারবে রাজ্য।
নিয়োগ প্রক্রিয়ার শুরু হওয়ার পর দেখা যায় কেন্দ্রীয় নির্দেশ অগ্রাহ্য করে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী থেকে পঁচিশ শতাংশ বাইরে থেকে ৭৫ শতাংশ কর্মী নিয়োগ করছে রাজ্য সরকার। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কর্মীদের পদোন্নতির অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।’ এর পাশাপাশি আইনজীবীর প্রশ্ন, ‘যাঁরা বছরের পর বছর রাজ্যের প্রকল্পে যুক্ত, কাজের সময়ে সরকারি কর্মীর মতোই ব্যবহার করা হয়, অথচ পদোন্নতির সময় তাঁদের অবহেলা কেন?’
যেখানে কেন্দ্র ৫০ শতাংশ পদে নিয়োগে বাধ্যতামূলক করেছে, তার পরেও রাজ্য সরকার নিয়োগ করতে চাইছে না। যাতে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা সুপারভাইজার পদে পদোন্নতি না হয় সেই শূন্য পদে রাজ্য সরকার চাইছে বাইরে থেকে কর্মী নিয়োগ করতে, বলে অভিযোগ। ১১৫২ মেধা জন তালিকাভুক্ত হলেও তাঁদের বঞ্চিত করা হয়েছে এই বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের কাছে তুলে ধরবেন বলে জানান ওই আইনজীবী। রাজ্যের দাখিল মামলায় সুপ্রিম কোর্টে খুব তাড়াতাড়ি শুনানি হবে বলে জানা গেছে।