বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি নিয়োগ মামলায় সিবিআই – ইডি তদন্তে সাময়িক স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট

- আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২৩, বৃহস্পতিবার
- / 7
পারিজাত মোল্লা: বুধবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে সাময়িক স্বস্তি পেলেন জেল হেফাজতে থাকা মানিক ভট্টাচার্য এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির একটি নির্দিষ্ট মামলায় তদন্ত করতে পারবে না দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি এবং সিবিআই। গত ২ মার্চ কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী এবং সঞ্জয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে।
সু্প্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, -‘ একই মামলায় সিবিআই এবং ইডিকে কেন যৌথ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হল?’ এর পাশাপাশি একই সঙ্গে দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়ার কী প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, তা-ও জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট । আগামী শুনানিতে সিবিআই এবং ইডিকে এ বিষয়ে হলফনামা জমা করতে হবে বলে আদালত নির্দেশ জারি করে জানিয়েছে ।
আদালত সুত্রে প্রকাশ, টিনা মণ্ডল এবং ১৮৬ জন প্রার্থী প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন। সেই মামলার প্রেক্ষিতে গত ২ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সিবিআই এবং ইডির যৌথ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সিঙ্গেল বেঞ্চ জানিয়েছিল, -‘ ২০১৪ সালের টেটের ভিত্তিতে ২০২০ সালের নিয়োগপ্রক্রিয়া নিয়ে তদন্ত করবে সিবিআই এবং ইডি। নতুন এফআইআর দায়ের করতে হবে ‘। কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই সুপ্রিম কোর্ট বুধবার জানিয়েছে, -‘ আপাতত ওই নির্দেশে স্থগিতাদেশ থাকছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে, তদন্তের শুরুতেই দুই সংস্থার একসঙ্গে কাজ করার প্রয়োজনীতা কী রয়েছে?’ গত ২০২০ সালে প্রাথমিকে যে শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল সেখানে পর্ষদের নম্বর বিভাজন তালিকায় গরমিলের অভিযোগ ছিল। গত ২ মার্চ ওই মামলার শুনানিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়। বুধবার সেই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে। অর্থাত্ আপাতত এই মামলায় সিবিআই তদন্ত স্থগিত থাকবে।২০২০ সালে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ জনের নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কীভাবে? মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য বরাদ্দ ছিল ৫ নম্বর, কিন্তু সেখানে ৬-এর বেশি নম্বর দেওয়া হয়েছে। উচ্চমাধ্যমিকের ক্ষেত্রে বরাদ্দ ১০ নম্বরের বদলে তাঁদের দেওয়া হয়েছে ১৫। প্রশিক্ষণে বরাদ্দ ১৫ নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ২৩! আরও অভিযোগ, এই নম্বর বিভাজন পুরোটাই করেছে পর্ষদের কনফিডেন্সশিয়াল বিভাগের অধীনে এস বসু রয় অ্যান্ড কোম্পানি।ওই মামলার শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছিলেন, কীভাবে একটি বাইরের কোম্পানি পর্ষদের কনফিডেন্সশিয়াল বিভাগে কাজ করতে পারে? বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি।সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী শুনানিতে সিবিআই – ইডি কি জানায়,তার দিকে তাকিয়ে অনেকেই।