০৮ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতীয় সেনাবাহিনীর মধ্যে দুই পাকিস্থানি!  তদন্তে সিআইডি

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৩ জুন ২০২৩, মঙ্গলবার
  • / 13

পারিজাত মোল্লা:  দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় সেনার অন্দরমহলে পাক নাগরিকের অবাধ বিচরণ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ভেতরে পাক নাগরিক! চক্রান্ত করে আইএসআই ভারতীয় সেনার লোক ঢোকানোর চেষ্টা করছে বলে সন্দেহ ওয়াকিবহাল মহলের।

নাগরিকত্ব এড়িয়ে কিভাবে তাদের নিয়োগ হল?  তাও দেশরক্ষার সেনায়! তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। দুই পাক নাগরিক এই মুহূর্তে ব্যারাকপুরে সেনা ক্যাম্পে কর্মরত বলে জানা গেছে।  ইতিমধ্যেই সেনায় নিয়োগে দুর্নীতি চক্রের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই নিয়োগের নেপথ্যে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের হাত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন খোদ বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার! অবিলম্বে সিআইডি-কে অভিযোগ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।

আরও পড়ুন: ফের আইইডি বিস্ফোরণ, জম্মু-কাশ্মীরে নিহত দুই সেনা-জওয়ান

মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এই অভিযোগ শোনার পরেই বলেন, “মারাত্মক অভিযোগ, দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।” সেই সঙ্গে সিবিআই, জিওসি ইস্টার্ন কমান্ড ও মিলিটারি পুলিশকে মামলার পার্টি করার নির্দেশ দেন তিনি ব্যারাকপুরের সেনা ছাউনিতে কর্মরত ওই দুই পাকিস্তানি নাগরিকের নাম জয়কান্ত কুমার এবং প্রদ্যুম্ন কুমার বলে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: অপহৃত ভারতীয় সেনা জওয়ান, গ্রেফতার সন্দেহভাজন

অভিযোগ, পাকিস্তান থেকে এসে তাঁরা ভারতীয় সেনায় যোগ দিয়েছেন। সরকারি পরীক্ষা দিয়েই নিয়োগ পেয়েছেন। তবে ওই পরীক্ষায় প্রয়োজনীয় নথিপত্র জাল করে চাকরি পেয়েছেন বলেই অভিযোগ।

আরও পড়ুন: সেনায় দুই পাক নাগরিকের চাকরি? এবার এফআইআর চাইছে সিবিআই

এর নেপথ্যে বড়সড় চক্র রয়েছে বলে আদালতে দাবি করেছেন মামলাকারীর আইনজীবী।অভিযোগ, রাজ্য পুলিশ, ভিনরাজ্যের পুলিশ, সেনাতে কর্মরত আধিকারিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। এদিন কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে এই মামলার শুনানি চলে ।এই মামলায় বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, -‘ দেশের নিরাপত্তার প্রেক্ষিতে এই অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই, এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে’।

অভিযোগ, দুই পাকিস্তানি নাগরিক পরীক্ষা দিয়ে ভারতীয় সেনায় ঢুকেছে। চাকরি পাওয়ার জন্য তারা নথিও জাল করেছে। এর পেছনে বড়়সড় কোনও চক্র রয়েছে বলা দাবি অভিযোগকারীর। এমনও দাবি করা হচ্ছে এ রাজ্যের পুলিস, ভিন রাজ্যের পুলিস, সেনাবাহিনীতে কর্মরত আধিকারিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জড়িত রয়েছে। পুলিস প্রশাসন-সহ বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকরা আবাসিক শংসাপত্র, জাতিগত শংসাপত্র বানিয়ে দিয়ে সহযোগিতা করেছে। থানা ও পুরসভার মাধ্যমে এই জালিয়াতি করা হয়েছে বলে বিস্ফোরক অভিযোগ উঠছে। ওই অভিযোগে বলা হয়েছে দুই অভিযুক্ত এখন ব্যারাকপুরে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প কাজ করছেন। বিষয়টি শুনে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বলেন, -‘ আইএসআই ভারতীয় সেনায় লোক ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মারাত্মক অভিযোগ। দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার অভিযোগ উঠছে। সিবিআই, ইস্ট্রার্ন কমান্ডের জিসিও ও মিলিটারি পুলিসকে পার্টি করতে হবে। সিআইডিকে এই অভিযোগ গ্রহণ করতে হবে। তারা প্রাথমিক রিপোর্ট দেবে’। আগামী ২৬ জুন পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে ।

প্রসঙ্গত,  বিভিন্ন সময়ে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের চর সন্দেহে দেশের বিভিন্ন জায়গায় গ্রেফতার হয়েছে একাধিক ব্যক্তি। কেউ সাধারণ নাগিরক, কেউ আবার সেনাবাহিনীর কর্মী। গত ৬ জুন কলকাতা হাইকোর্টে এই সংক্রান্ত মামলাটি দায়ের করেছেন হুগলির বাসিন্দা বিষ্ণু চৌধুরী।

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ভারতীয় সেনাবাহিনীর মধ্যে দুই পাকিস্থানি!  তদন্তে সিআইডি

আপডেট : ১৩ জুন ২০২৩, মঙ্গলবার

পারিজাত মোল্লা:  দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় সেনার অন্দরমহলে পাক নাগরিকের অবাধ বিচরণ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ভেতরে পাক নাগরিক! চক্রান্ত করে আইএসআই ভারতীয় সেনার লোক ঢোকানোর চেষ্টা করছে বলে সন্দেহ ওয়াকিবহাল মহলের।

নাগরিকত্ব এড়িয়ে কিভাবে তাদের নিয়োগ হল?  তাও দেশরক্ষার সেনায়! তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। দুই পাক নাগরিক এই মুহূর্তে ব্যারাকপুরে সেনা ক্যাম্পে কর্মরত বলে জানা গেছে।  ইতিমধ্যেই সেনায় নিয়োগে দুর্নীতি চক্রের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই নিয়োগের নেপথ্যে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের হাত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন খোদ বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার! অবিলম্বে সিআইডি-কে অভিযোগ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।

আরও পড়ুন: ফের আইইডি বিস্ফোরণ, জম্মু-কাশ্মীরে নিহত দুই সেনা-জওয়ান

মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এই অভিযোগ শোনার পরেই বলেন, “মারাত্মক অভিযোগ, দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।” সেই সঙ্গে সিবিআই, জিওসি ইস্টার্ন কমান্ড ও মিলিটারি পুলিশকে মামলার পার্টি করার নির্দেশ দেন তিনি ব্যারাকপুরের সেনা ছাউনিতে কর্মরত ওই দুই পাকিস্তানি নাগরিকের নাম জয়কান্ত কুমার এবং প্রদ্যুম্ন কুমার বলে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: অপহৃত ভারতীয় সেনা জওয়ান, গ্রেফতার সন্দেহভাজন

অভিযোগ, পাকিস্তান থেকে এসে তাঁরা ভারতীয় সেনায় যোগ দিয়েছেন। সরকারি পরীক্ষা দিয়েই নিয়োগ পেয়েছেন। তবে ওই পরীক্ষায় প্রয়োজনীয় নথিপত্র জাল করে চাকরি পেয়েছেন বলেই অভিযোগ।

আরও পড়ুন: সেনায় দুই পাক নাগরিকের চাকরি? এবার এফআইআর চাইছে সিবিআই

এর নেপথ্যে বড়সড় চক্র রয়েছে বলে আদালতে দাবি করেছেন মামলাকারীর আইনজীবী।অভিযোগ, রাজ্য পুলিশ, ভিনরাজ্যের পুলিশ, সেনাতে কর্মরত আধিকারিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। এদিন কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে এই মামলার শুনানি চলে ।এই মামলায় বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, -‘ দেশের নিরাপত্তার প্রেক্ষিতে এই অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই, এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে’।

অভিযোগ, দুই পাকিস্তানি নাগরিক পরীক্ষা দিয়ে ভারতীয় সেনায় ঢুকেছে। চাকরি পাওয়ার জন্য তারা নথিও জাল করেছে। এর পেছনে বড়়সড় কোনও চক্র রয়েছে বলা দাবি অভিযোগকারীর। এমনও দাবি করা হচ্ছে এ রাজ্যের পুলিস, ভিন রাজ্যের পুলিস, সেনাবাহিনীতে কর্মরত আধিকারিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জড়িত রয়েছে। পুলিস প্রশাসন-সহ বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকরা আবাসিক শংসাপত্র, জাতিগত শংসাপত্র বানিয়ে দিয়ে সহযোগিতা করেছে। থানা ও পুরসভার মাধ্যমে এই জালিয়াতি করা হয়েছে বলে বিস্ফোরক অভিযোগ উঠছে। ওই অভিযোগে বলা হয়েছে দুই অভিযুক্ত এখন ব্যারাকপুরে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প কাজ করছেন। বিষয়টি শুনে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বলেন, -‘ আইএসআই ভারতীয় সেনায় লোক ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মারাত্মক অভিযোগ। দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার অভিযোগ উঠছে। সিবিআই, ইস্ট্রার্ন কমান্ডের জিসিও ও মিলিটারি পুলিসকে পার্টি করতে হবে। সিআইডিকে এই অভিযোগ গ্রহণ করতে হবে। তারা প্রাথমিক রিপোর্ট দেবে’। আগামী ২৬ জুন পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে ।

প্রসঙ্গত,  বিভিন্ন সময়ে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের চর সন্দেহে দেশের বিভিন্ন জায়গায় গ্রেফতার হয়েছে একাধিক ব্যক্তি। কেউ সাধারণ নাগিরক, কেউ আবার সেনাবাহিনীর কর্মী। গত ৬ জুন কলকাতা হাইকোর্টে এই সংক্রান্ত মামলাটি দায়ের করেছেন হুগলির বাসিন্দা বিষ্ণু চৌধুরী।