০২ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তুরস্ককে রুশ ‘এস-৪০০’ ইউক্রেনে পাঠাতে ‘আবদার’ যুক্তরাষ্ট্রের

মাসুদ আলি
  • আপডেট : ২০ মার্চ ২০২২, রবিবার
  • / 36

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : একসময় যে ‘এস-৪০০’ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার দীর্ঘদিনের মিত্র তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটিয়েছিল, এখন সেই ‘ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা’কে ইউক্রেনে চলমান রুশ হামলা মোকাবিলায় ‘কাজে লাগাতে চাচ্ছে’ বাইডেন প্রশাসন।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের জুলাইয়ে আঙ্কারার হাতে যখন ‘এস-৪০০’র প্রথম আসে, তখন থেকে ওয়াশিংটন এই রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থেকে তুরস্ককে সরে যাওয়া অনুরোধ করে আসছে। তুরস্ক তা না মানায় দেশটির প্রতিরক্ষা শিল্পের ওপর অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দিয়েছিল আমেরিকা। পাশাপাশি ন্যাটো সদস্য হওয়া সত্ত্বেও তুরস্ককে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান তৈরির যৌথ কর্মসূচি থেকে সরিয়ে দেওয়া  হয়। অথচ এখন তুরস্কের কাছে থাকা এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ইউক্রেনের রণক্ষেত্রে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যায় কি না, সেই সম্ভাবনা সামনে আনছে বাইডেন প্রশাসন।

আরও পড়ুন: দাবানলে জ্বলছে তুরস্কের ইজমির, গ্রাম খালি, বিমানবন্দর বন্ধ

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া প্রতিবেশী ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর পর থেকে বাইডেন প্রশাসন আক্রান্ত দেশটিকে রক্ষায় রাশিয়ার তৈরি ‘এস-৩০০’ ও ‘এস-৪০০’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য মিত্রদের অনুরোধ করে আসছে।তুরস্কের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যান ইউক্রেনের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা কীভাবে কাজ করতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কীভাবে উন্নত করা যায়, সেসব বিষয়ে কথা বলেছেন। তবে এস-৪০০ ইউক্রেনে ব্যবহারের বিষয়ে তুরস্কের কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে রয়টার্সের কাছে কোনো মন্তব্য করেননি।

আরও পড়ুন: তুরস্কের ‘কান’ যুদ্ধবিমান কিনছে ইন্দোনেশিয়া, প্রথম আন্তর্জাতিক চুক্তি

তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেদাত ওনালের সাথে মার্কিন পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যান গত ৫ মার্চ  তুর্কি সংবাদমাধ্যম হাবেরতুর্ককে বলেন, ‘এটা সবাই জানেন যে, তুরস্কের সাথে এস-৪০০ নিয়ে আমেরিকার মতবিরোধ আছে। তবে এ সমস্যা সমাধানে নতুন পথ বের করা যেতে পারে।’ ফেলাডেলফিয়ার পররাষ্ট্রনীতি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অ্যারন স্টেইন রয়টার্সকে বলেন, ‘তুরস্ক যেন ধারালো ছুরির ওপর দিয়ে হাঁটছে। যদি এস-৪০০ ইউক্রেনে পাঠানো হয়, তাহলে নিঃসন্দেহে তারা মস্কোর রোষানলে পড়বে।’ তাঁর মতে, এরদোগানের কাছে রাশিয়ার ‘এস-৪০০’ তুরস্কের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তাই এটি হস্তান্তর আঙ্কারার জন্য সহজ হবে না।

আরও পড়ুন: তুরস্ক বয়কট, মামলা গেল দিল্লি হাইকোর্টে

আমেরিকার তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও ২০১৯ সালের জুলাই মাসে রাশিয়ার কাছ থেকে প্রথম দফা এস-৪০০ ব্যবস্থা গ্রহণ করে তুরস্ক। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যে এই ব্যবস্থা কেনার ব্যাপারে চুক্তি সই হয়। এস-৪০০ ব্যবস্থায় পাঁচ থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরত্বে শত্রুর যেকোনো লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করে তাতে একযোগে ৭২টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার ব্যবস্থা রয়েছে।তুরস্ক যদি আমেরিকার চাপে ইউক্রেনে এস-৪০০ মোতায়েন করে তাহলে রাশিয়া থেকে ‘এস-৪০০’র দ্বিতীয় চালান নেয়ার প্রক্রিয়াও যে সাথে সাথে থেমে যাবে তা বলাই বাহুল্য।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

তুরস্ককে রুশ ‘এস-৪০০’ ইউক্রেনে পাঠাতে ‘আবদার’ যুক্তরাষ্ট্রের

আপডেট : ২০ মার্চ ২০২২, রবিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : একসময় যে ‘এস-৪০০’ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার দীর্ঘদিনের মিত্র তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটিয়েছিল, এখন সেই ‘ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা’কে ইউক্রেনে চলমান রুশ হামলা মোকাবিলায় ‘কাজে লাগাতে চাচ্ছে’ বাইডেন প্রশাসন।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের জুলাইয়ে আঙ্কারার হাতে যখন ‘এস-৪০০’র প্রথম আসে, তখন থেকে ওয়াশিংটন এই রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থেকে তুরস্ককে সরে যাওয়া অনুরোধ করে আসছে। তুরস্ক তা না মানায় দেশটির প্রতিরক্ষা শিল্পের ওপর অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দিয়েছিল আমেরিকা। পাশাপাশি ন্যাটো সদস্য হওয়া সত্ত্বেও তুরস্ককে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান তৈরির যৌথ কর্মসূচি থেকে সরিয়ে দেওয়া  হয়। অথচ এখন তুরস্কের কাছে থাকা এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ইউক্রেনের রণক্ষেত্রে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যায় কি না, সেই সম্ভাবনা সামনে আনছে বাইডেন প্রশাসন।

আরও পড়ুন: দাবানলে জ্বলছে তুরস্কের ইজমির, গ্রাম খালি, বিমানবন্দর বন্ধ

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া প্রতিবেশী ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর পর থেকে বাইডেন প্রশাসন আক্রান্ত দেশটিকে রক্ষায় রাশিয়ার তৈরি ‘এস-৩০০’ ও ‘এস-৪০০’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য মিত্রদের অনুরোধ করে আসছে।তুরস্কের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যান ইউক্রেনের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা কীভাবে কাজ করতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কীভাবে উন্নত করা যায়, সেসব বিষয়ে কথা বলেছেন। তবে এস-৪০০ ইউক্রেনে ব্যবহারের বিষয়ে তুরস্কের কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে রয়টার্সের কাছে কোনো মন্তব্য করেননি।

আরও পড়ুন: তুরস্কের ‘কান’ যুদ্ধবিমান কিনছে ইন্দোনেশিয়া, প্রথম আন্তর্জাতিক চুক্তি

তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেদাত ওনালের সাথে মার্কিন পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যান গত ৫ মার্চ  তুর্কি সংবাদমাধ্যম হাবেরতুর্ককে বলেন, ‘এটা সবাই জানেন যে, তুরস্কের সাথে এস-৪০০ নিয়ে আমেরিকার মতবিরোধ আছে। তবে এ সমস্যা সমাধানে নতুন পথ বের করা যেতে পারে।’ ফেলাডেলফিয়ার পররাষ্ট্রনীতি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অ্যারন স্টেইন রয়টার্সকে বলেন, ‘তুরস্ক যেন ধারালো ছুরির ওপর দিয়ে হাঁটছে। যদি এস-৪০০ ইউক্রেনে পাঠানো হয়, তাহলে নিঃসন্দেহে তারা মস্কোর রোষানলে পড়বে।’ তাঁর মতে, এরদোগানের কাছে রাশিয়ার ‘এস-৪০০’ তুরস্কের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তাই এটি হস্তান্তর আঙ্কারার জন্য সহজ হবে না।

আরও পড়ুন: তুরস্ক বয়কট, মামলা গেল দিল্লি হাইকোর্টে

আমেরিকার তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও ২০১৯ সালের জুলাই মাসে রাশিয়ার কাছ থেকে প্রথম দফা এস-৪০০ ব্যবস্থা গ্রহণ করে তুরস্ক। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যে এই ব্যবস্থা কেনার ব্যাপারে চুক্তি সই হয়। এস-৪০০ ব্যবস্থায় পাঁচ থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরত্বে শত্রুর যেকোনো লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করে তাতে একযোগে ৭২টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার ব্যবস্থা রয়েছে।তুরস্ক যদি আমেরিকার চাপে ইউক্রেনে এস-৪০০ মোতায়েন করে তাহলে রাশিয়া থেকে ‘এস-৪০০’র দ্বিতীয় চালান নেয়ার প্রক্রিয়াও যে সাথে সাথে থেমে যাবে তা বলাই বাহুল্য।