পুবের কলম প্রতিবেদক: ২৫ হাজার ৭৫৩ জন স্কুল শিক্ষকের চাকরি বহাল রা’ল সুপ্রিম কোর্ট। হাইকোর্টের রায়ের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়ে মঙ্গলবার শীর্ষ আদালত জানায়, এসএসসি মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১৬ জুলাই। পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত শিক্ষকতা করতে পারবেন শিক্ষকরা। তাই স্বাভাবিক ভাবে বেতনও পাবেন তাঁরা। হাইকোর্ট সুদ-সহ বেতন ফেরত দেওয়ার যে নির্দেশ দিয়েছিল, তাতে অন্তর্র্বতী স্থগিতাদেশ দিল শীর্ষ আদালত। গত সপ্তাহেই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ এই মামলায় মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তে অন্তর্র্বতী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল।
এরপরই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছেন, ‘সুপ্রিম কোর্টে ন্যায় প্রাপ্তির পর আমি বাস্তবিকই খুব খুশি এবং মানসিক ভাবে তৃপ্ত। সমগ্র শিক্ষক সমাজকে জানাই আমার অভিনন্দন এবং মাননীয় সুপ্রিম কোর্টকে জানাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা।’
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছেন, বাংলার ভাবমূর্তি ধ্বংসের ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে নড়বড়ে করে দেওয়ার যে ঘৃণ্য চক্রান্ত বিজেপি করেছিল, সেই বিস্ফোরক কার্যকলাপকে নিষ্ক্রিয় করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। সত্যের জয় হল। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আমরা মানুষের পাশে থাকব।’
এদিন শীর্ষ আদালত কী রায় দেয়, সে দিকে নজর ছিল চাকরিপ্রার্থী এবং শিক্ষক মহল-সহ গোটা রাজ্যের। ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ার ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশে আপাতত স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি জানালেন, এখনই চাকরি বাতিল করা হচ্ছে না। কেন স্থগিতাদেশ তার ব্যাখ্যা দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বললেন, যদি যোগ্য এবং অযোগ্য আলাদা করা সম্ভব হয়, তা হলে গোটা প্যানেল বাতিল করা ন্যায্য হবে না। তবে এই নির্দেশ চূড়ান্ত নয়। এই স্থগিতাদেশ অন্তর্র্বতীকালীন। ১৬ জুলাই এই মামলার চূড়ান্ত নির্দেশ ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আপাতত কাউকে বেতন ফেরত দিতে হবে না। তবে এসএসসির ২০১৬ সালের প্যানেলে যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন তাঁদের মুচলেকা দিতে হবে। পরে তাঁদের নিয়োগ ‘অবৈধ’ বলে প্রমাণিত হলে অযোগ্যদের টাকা ফেরত দিতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, সিবিআই যেমন অবৈধ নিয়োগ নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছিল, সেভাবেই তদন্ত চালিয়ে যাবে। তবে সুপারনিউমেরারি পদ তৈরি নিয়ে মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে তদন্তে স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। তবে এই নির্দেশ চূড়ান্ত নয়। এই স্থগিতাদেশ অন্তর্বর্তিকালীন।
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে আবার ‘সত্যের জয়’ বলেই দেখছে তৃণমূল। বিজেপির মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য আবার একে রাজ্য সরকারের জয় বলে মানতে চাননি। তিনি এও মনে করেন, দুর্নীতির আশঙ্কা শেষ হচ্ছে না।