১৩ মে ২০২৫, মঙ্গলবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শীর্ষ আদালতের নির্দেশে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল, চাকরিহারাদের সঙ্গে দেখা করবেন মুখ্যমন্ত্রী

চামেলি দাস
  • আপডেট : ৩ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 96

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  বৃহস্পতিবার ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। এক ধাক্কায় চাকরি গেল ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীর। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চ এই রায় দেন।শীর্ষ আদালতের রায় মানবিকতার স্বার্থে মানতে পারছেন না বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে স্কুলগুলির ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। কিছু মানুষের ভুলে কেন সবাইকে খেসারত দিতে হবে সে নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মমতা। সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী তিনমাসের মধ্যেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।

গত বছর স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের রায়কেই বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। বাতিল হল স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২০১৬ সালের ২৬ হাজারের প্যানেল। সেইসঙ্গে অযোগ্যদের বেতন ফেরতের নির্দেশও দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে মানবিকতার খাতিরে মানতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “বিচারব্যবস্থার প্রতি আমাদের পূর্ণ সম্মান আছে। সমস্ত বিচারপতির প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে। আমরা প্রত্যেককে সম্মান করি। দয়া করে আমার মন্তব্য বিকৃত করবেন না।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের হাতে কোনও নথি ছিল না। নথি থাকলে  আমরা খুঁজে দেখতে পারতাম। আত্মরক্ষার জন্য একটা সুযোগ দেওয়া যেত!”

আরও পড়ুন: ২৮ এপ্রিল প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি মামলার শুনানি

আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয় ধনী ইলন মাস্ক, ফোর্বসের তালিকায় ১০ থেকে ১৮-তে নেমে এলেন মুকেশ আম্বানি

আরও পড়ুন: SSC-র পর বড় ধাক্কা সঞ্জীব খন্নার, সাত বিচারপতিকে বদলির সুপারিশ

একসঙ্গে ২৫ হাজার ৫৭২ জন শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের চাকরি যাওয়ায় কর্মী সংকটে পড়বে স্কুলগুলি। সে কথা মনে করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এঁরা স্কুলে পড়ান। স্কুলগুলির কী হবে? বাংলাকে আর কত টার্গেট করবেন? বাংলার পুরো সিস্টেমটা কোলাপস করাই কি বিজেপির লক্ষ্য?” তাঁর প্রশ্ন, “দু-চারজনের জন্য সবাইকে কেন শাস্তি দেওয়া হবে? আমরা জানলে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতাম। কিন্তু আমাদের তো নথিই দেওয়া হয়নি।”  মমতার তোপ, ”বিকাশবাবু মামলা করেছিলেন। তাঁর জন্যই আজ এতগুলো চাকরি গেল। উনি তো বিশ্বের বৃহত্তম আইনজীবী। কেন যে নোবেল প্রাইজ পাচ্ছেন না এখনও… আমি ভাবছি, একটা রেকমেন্ড করব।”  একযোগে সিপিএম ও বিজেপিকে নিশানা করে বলেছেন, “মনে রাখবেন, তাঁরা অচল হয়ে গেলে বিজেপি-সিপিএমও সচল থাকবে না। কোনও ঘটনা ঘটলে, দায়িত্ব আপনাদের হবে। আর এসবের জবাব আপনারা পাবেন।”

আরও পড়ুন: ‘ইন্ডিয়া জাস্টিসে’র রিপোর্টে দেশের ১৭ নং অবস্থানে কলকাতা হাইকোর্ট!

চাকরিহারাদের পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আদালতের নির্দেশ মেনে আগামী তিনমাসের মধ্যে নিয়োগ সম্পন্ন করার কথাও জানিয়েছেন তিনি। ৭ এপ্রিল নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে চাকরিহারাদের সংগঠন বৈঠক করবে। মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীকে উপস্থিত থাকার আবেদন জানানো হয়েছে। তাঁদের আবেদনে সাড়া দিয়ে বৈঠকে যাবেন বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিক্ষামন্ত্রী, মুখ্যসচিব ও আইনজীবীরাও থাকবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, “বঞ্চিত শিক্ষকরা একটি অ্যাসোসিয়েশন তৈরি করেছেন। তাঁরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান, সবাই একত্রিত হতে চান। সেখানে শিক্ষামন্ত্রী-সহ আমি ও মুখ্যসচিব, আইনজীবীরা থাকলে তাঁরা খুশি হবেন। তাতে সাড়া দিয়ে আগামী ৭ তারিখ নেতাজি ইন্ডোরে দেখা করতে যাব। কথা বলতে তো কোনও অসুবিধা নেই।”

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

শীর্ষ আদালতের নির্দেশে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল, চাকরিহারাদের সঙ্গে দেখা করবেন মুখ্যমন্ত্রী

আপডেট : ৩ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  বৃহস্পতিবার ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। এক ধাক্কায় চাকরি গেল ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীর। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চ এই রায় দেন।শীর্ষ আদালতের রায় মানবিকতার স্বার্থে মানতে পারছেন না বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে স্কুলগুলির ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। কিছু মানুষের ভুলে কেন সবাইকে খেসারত দিতে হবে সে নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মমতা। সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী তিনমাসের মধ্যেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।

গত বছর স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের রায়কেই বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। বাতিল হল স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২০১৬ সালের ২৬ হাজারের প্যানেল। সেইসঙ্গে অযোগ্যদের বেতন ফেরতের নির্দেশও দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে মানবিকতার খাতিরে মানতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “বিচারব্যবস্থার প্রতি আমাদের পূর্ণ সম্মান আছে। সমস্ত বিচারপতির প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে। আমরা প্রত্যেককে সম্মান করি। দয়া করে আমার মন্তব্য বিকৃত করবেন না।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের হাতে কোনও নথি ছিল না। নথি থাকলে  আমরা খুঁজে দেখতে পারতাম। আত্মরক্ষার জন্য একটা সুযোগ দেওয়া যেত!”

আরও পড়ুন: ২৮ এপ্রিল প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি মামলার শুনানি

আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয় ধনী ইলন মাস্ক, ফোর্বসের তালিকায় ১০ থেকে ১৮-তে নেমে এলেন মুকেশ আম্বানি

আরও পড়ুন: SSC-র পর বড় ধাক্কা সঞ্জীব খন্নার, সাত বিচারপতিকে বদলির সুপারিশ

একসঙ্গে ২৫ হাজার ৫৭২ জন শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের চাকরি যাওয়ায় কর্মী সংকটে পড়বে স্কুলগুলি। সে কথা মনে করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এঁরা স্কুলে পড়ান। স্কুলগুলির কী হবে? বাংলাকে আর কত টার্গেট করবেন? বাংলার পুরো সিস্টেমটা কোলাপস করাই কি বিজেপির লক্ষ্য?” তাঁর প্রশ্ন, “দু-চারজনের জন্য সবাইকে কেন শাস্তি দেওয়া হবে? আমরা জানলে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতাম। কিন্তু আমাদের তো নথিই দেওয়া হয়নি।”  মমতার তোপ, ”বিকাশবাবু মামলা করেছিলেন। তাঁর জন্যই আজ এতগুলো চাকরি গেল। উনি তো বিশ্বের বৃহত্তম আইনজীবী। কেন যে নোবেল প্রাইজ পাচ্ছেন না এখনও… আমি ভাবছি, একটা রেকমেন্ড করব।”  একযোগে সিপিএম ও বিজেপিকে নিশানা করে বলেছেন, “মনে রাখবেন, তাঁরা অচল হয়ে গেলে বিজেপি-সিপিএমও সচল থাকবে না। কোনও ঘটনা ঘটলে, দায়িত্ব আপনাদের হবে। আর এসবের জবাব আপনারা পাবেন।”

আরও পড়ুন: ‘ইন্ডিয়া জাস্টিসে’র রিপোর্টে দেশের ১৭ নং অবস্থানে কলকাতা হাইকোর্ট!

চাকরিহারাদের পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আদালতের নির্দেশ মেনে আগামী তিনমাসের মধ্যে নিয়োগ সম্পন্ন করার কথাও জানিয়েছেন তিনি। ৭ এপ্রিল নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে চাকরিহারাদের সংগঠন বৈঠক করবে। মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীকে উপস্থিত থাকার আবেদন জানানো হয়েছে। তাঁদের আবেদনে সাড়া দিয়ে বৈঠকে যাবেন বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিক্ষামন্ত্রী, মুখ্যসচিব ও আইনজীবীরাও থাকবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, “বঞ্চিত শিক্ষকরা একটি অ্যাসোসিয়েশন তৈরি করেছেন। তাঁরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান, সবাই একত্রিত হতে চান। সেখানে শিক্ষামন্ত্রী-সহ আমি ও মুখ্যসচিব, আইনজীবীরা থাকলে তাঁরা খুশি হবেন। তাতে সাড়া দিয়ে আগামী ৭ তারিখ নেতাজি ইন্ডোরে দেখা করতে যাব। কথা বলতে তো কোনও অসুবিধা নেই।”