ডেউচা পাচামি কয়লা প্রকল্পে জীবন যাত্রার মান বদলেছে আদিবাসীদের
কৌশিক সালুই বীরভূম: বাম শাসনে পশ্চিমবাংলায় সব থেকে বঞ্চিত ছিল রাজ্যের আদিবাসী সমাজ। আর বর্তমান শাসনের সেই ধারার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। আধপেটা বা অনাহারে দিন কাটাতে হয় না কোনো আদিবাসী মানুষজনকে। জয় জোহার প্রকল্প, লক্ষী ভান্ডার বা অন্যান্য সরকারি প্রকল্পের সুবিধার সঙ্গে বীরভূমের ডেউচা পাঁচামি কয়লা শিল্প প্রকল্প স্থানীয় ওই সমাজের মানুষদের জীবনযাত্রার মান বদলে গিয়েছে।
বীরভূম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে ডেউচা পাঁচামি কয়লা শিল্প প্রকল্পে ইতিমধ্যেই প্রায় ১০০০ জনের রাজ্য পুলিশ এবং প্রশাসনের চতুর্থ শ্রেণীতে চাকরি হয়েছে পুনর্বাসন প্রকল্পে। সেই চাকরি প্রাপকদের একটা সিংহভাগ অংশ আদিবাসী সমাজের ছেলেমেয়েরা। মাত্র এক বছর আগে ডেউচা পাঁচামি কয়লা শিল্প প্রকল্প এলাকার আদিবাসী সমাজ সরকারি চাকরির ব্যাপারে ভাবতে পারত না। পাথর শিল্পাঞ্চল এলাকার পাথর ভাঙ্গার কলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাড়ভাঙ্গা খাটুনি ছিল তাদের একমাত্র ভবিষ্যৎ। সেখানে এই কয়লা শিল্পাঞ্চলের পুনর্বাসন প্রকল্পে এখনো পর্যন্ত প্রায় কয়েকশো সরকারি চাকরি হয়েছে তাদের। পর্যায়ক্রমে আরো কয়েক হাজার চাকরি হয়ে যাবে আগামী সময়ে। এর সঙ্গে প্রকল্পের জমির দাম লক্ষ লক্ষ টাকা পেয়েছে তারা। এর ফলে জীবনযাত্রার মান বদলাতে শুরু করেছে তাদের। এখনো পর্যন্ত প্রায় 5000 জন এই প্রকল্পে চাকরির জন্য আবেদন করেছে। পুনর্বাসন কলোনির জন্য জমি চিহ্নিত হয়ে গিয়েছে। সেই কলোনির তৈরি হয়ে গেলে প্রকল্প এলাকার মানুষজনদের সেখানে স্থানান্তর করে দেওয়া হবে দ্রুত। ওই কলোনিতে প্রাথমিক চাহিদার সমস্ত সুযোগ-সুবিধাই থাকবে সেখানে। স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রভৃতি পরিষেবা খুব সহজেই পেয়ে যাবেন তারা। পানমুনি মুর্মু,কিনুশিলা টুডুরা বলেন,” লেখাপড়া করার পর সরকারি চাকরি যেখানে আমাদের কাছে স্বপ্নের মত ছিল।সেটা এখন বাস্তবে আমরা পেয়েছি।একমাত্র সম্ভব হয়েছে এই প্রস্তাবিত কয়লা শিল্পের পুনর্বাসন প্রকল্পের জন্য। আমাদের মত আরও ছেলে-মেয়ে আগামী দিনে সরকারি চাকরী পেতে চলেছে”। বীরভূম জেলা আদিবাসী উন্নয়ন গাঁওতার সম্পাদক রবিন সরেন বলেন,” প্রস্তাবিত কয়লা শিল্পাঞ্চল এলাকার জমি রুক্ষ এবং অনুর্বর। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হলে কোনোভাবেই চাষবাস হয় না। তাই এলাকার মানুষজনকে একমাত্র পাথর শিল্পাঞ্চলের কাজের ওপর ভরসায় থাকতে হয়। সেখানে কয়লা শিল্পের পুনর্বাসন প্রকল্পে ইতিমধ্যেই স্থানীয় ছেলে মেয়েরা চাকরি পেতে শুরু করেছে। ফলে তাদের পরিবারের জীবন যাত্রার মান অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে”।