পঞ্চায়েত প্রধান হয়েও থাকেন একচালা অ্যাসবেস্টারের বাড়িতে, প্রধানের সততায় মুগ্ধ স্থানীয়রা
উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,জয়নগর : পঞ্চায়েত ভোট দরজায় কড়া নাড়ছে।যেকোনো সময়ে ভোটের নিঘন্ট ঘোষণা হয়ে যেতে পারে।আর তার আগে চলছে উন্নয়ন অনুন্নয় নিয়ে চুলচেঁরা বিশ্লেষণ। বর্তমানে যেখানে রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে উপপ্রধান বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসছে।
সেখানে তার বিপরীত চিত্র দেখা গেল জয়নগর এক নম্বর ব্লকের অধীন হরিনারায়নপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে। এই পঞ্চায়েতের বর্তমান প্রধান আজও ছাত্র পড়িয়ে নিজের সংসার টুকু চালায়। যেখানে রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা গেছে পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ি অট্টালিকায় সাজানো। সেই জায়গা থেকে এই হরিনারায়নপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পুরোপুরি ভিন্ন।
তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল একচালা অ্যাসবেস্টার দিয়ে কোনোভাবেই দিন কাটাচ্ছেন এই প্রধান। আবার বর্ষাকালে বৃষ্টি পড়লেই ঘরে ঢুকে যায় জল। প্রধানের স্ত্রী সেলাই করে স্বামীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। দিনের পর দিন এভাবেই চলছে তাদের সংসার।রাজ্যের একদিকে যখন বিরোধীরা শাসকদলের পঞ্চায়েত প্রধানদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি নিয়ে ভুরিভুরি অভিযোগ তুলছে আর সেই সময় এমন ভিন্ন ছবি ধরা পড়লো জয়নগর এক নম্বর ব্লকের হরিনারায়নপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে।এখানকার প্রধান প্রবীর সরদার শাসক তৃনমুল দলের টিকিটে জয়ী হয়।
২০১৮ সালে তিনি তৃণমূলের টিকিট নির্বাচিত হন। তারপর তাকে বসানো হয় প্রধানের আসনে। একচালা ঘরেই তার বসবাস।তবে প্রধান হওয়ার আগের নিয়মে তিনি এখন প্রধান হয়ে চালিয়ে যাচছেন।হয়নি তাঁর স্বভাব, আচার ব্যবহারে।প্রধান হয়ে ও সে পালটাইনি তাঁর স্বাভাবিক জীবন যাপন। নিয়ম করে নিত্যদিন কখনো সাইকেলে আবার কখনো পায়ে হেঁটেই সে পঞ্চায়েতে যান।
সেখানে পরিষেবা দেন সাধারণ মানুষের। পঞ্চায়েতের কাজ শেষ করে আবারো প্রতিদিনের মতো ছাত্র পড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন এই প্রবীর সরদার।রাজ্যের বিজেপি থেকে সিপিআইএম সমস্ত বিরোধী দল প্রত্যেকেরই একই অভিযোগ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দেখা গিয়েছে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রধানরা বড় বড় গাড়ি আবার কখনো বিশাল অট্টালিকা বাড়ি। সেই জায়গা থেকে এমন প্রধানের দুর্দশা দেখে বিস্মিত গ্রামবাসীরা ও। এ বিষয়ে পঞ্চায়েত প্রধান প্রবীর সরদার বলেন, আগামী কিছুদিনের মধ্যেই ঘোষণা হতে চলেছে ভোটের দিনক্ষণ। তবে তিনি আর রাজনীতিতে থাকতে চান না এমনটাই দাবি করেছেন তিনি।তিনি এও বলেন, আমি রাজনীতিতে এসেছি মানুষের পাশে থাকার জন্য।
নিজের সম্পদ বাড়ানোর জন্য নয়।আমি প্রধান বলে নিজের স্বাভাবিক জীবনযাএা ভুলে যাবো এ শিক্ষা কোনো দিন পাইনি। তাই আমি আগের মত আগামীদিনেও ছাএ পড়িয়ে যেতে চাই।প্রকৃত শিক্ষার আলোকে বর্তমান যুব সমাজকে আলোকিত করতে চাই।তবে আমি রাজনীতি না করলেও আগামী দিনে মানুষের পাশেই থাকবো।
আর তাঁর এই সুন্দর ব্যবহারেই এলাকার মানুষ খুশি। এলাকার মানুষেরা চান প্রবীর সরদারের মতন এরকম গরীব ছেলেই আবার প্রধান হিসাবে তাদের অভিভাবক হিসাবে থাকুক।গ্রামের উন্নয়নে এরকম নিঃস্বার্থহীন ছেলেকেই চান গ্রামের মানুষ। আর সেটা কি হবে তা জানা যাবে কিছু দিনের মধ্যে।