০১ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অস্ত্র হাতে ট্রাম্পের গাজা প্ল্যানের বিরুদ্ধে দাঁড়াও : Hamas

সুস্মিতা
  • আপডেট : ২ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার
  • / 105

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশ্বের সকল অস্ত্রধারীকে লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়েছে হামাস (Hamas)। গাজা পরিকল্পনায় দুই মিলিয়নেরও বেশি গাজাবাসীকে মিশর ও জর্ডানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোতে স্থানান্তরের কথা বলা হয়েছে। আর সে কারণেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছেন হামাসের শীর্ষ কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ট্রাম্পের এই নিষ্ঠুর পরিকল্পনা গণহত্যা এবং দুর্ভিক্ষের সঙ্গে সামিল। এর বিরুদ্ধে বিশ্বকে পদক্ষেপ নিতে হবে।

গত রবিবার  ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু হামাস নেতাদের গাজা ছাড়ার প্রস্তাব দেন, কিন্তু যুদ্ধের শেষের দিকে হামাসের (Hamas) সশস্ত্র বাহিনীকে নিরস্ত্র করতে হবে বলে শর্ত দেন। হামাস গাজার প্রশাসন ছেড়ে দিতে প্রস্তুত হলেও তাদের অস্ত্র জমা দেওয়ার বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করেছে।

নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরাইল ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছে, যা গাজার ২.৪ মিলিয়ন বাসিন্দাকে অন্য দেশগুলোতে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করেছিল। তবে পরে ট্রাম্প তার বক্তব্যে বলেন যে তিনি বাধ্যতামূলক কিছু করতে চান না, যা মিসর, জর্ডান এবং প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও)-র পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো হয়।

আরও পড়ুন: আর ১৪ দিনের খাবার মজুদ আছে গাজায়

জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার কয়েকদিন পরই ট্রাম্প একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন, যেখানে তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা থেকে তার জনগণকে সরিয়ে নিয়ে মিশর বা জর্ডানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোতে স্থানান্তরের কথা বলেন। তবে মিশর, জর্ডানসহ অন্যান্য আরব মিত্ররা, বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সরকার এবং ফিলিস্তিনিরা এই পরিকল্পনাকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। পরে ট্রাম্প তার এই বিতর্কিত পরিকল্পনা থেকে কিছুটা সরে আসার ইঙ্গিত দেন এবং বলেন যে তিনি এটি “জোরপূর্বক বাস্তবায়ন” করছেন না। মার্চের মাঝামাঝি সময়ে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প বলেন, “কেউ ফিলিস্তিনিদের বহিষ্কার করছে না।” তার এই মন্তব্য মিশর, জর্ডান এবং ফিলিস্তিন লিবারেশন অর্গানাইজেশন স্বাগত জানায়।

এরপর আরব দেশগুলো গাজার জনগণকে স্থানান্তর না করেই এর পুনর্গঠনের একটি বিকল্প পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে, যা ভবিষ্যতে রামাল্লাহ-ভিত্তিক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রশাসনের অধীনে পরিচালিত হবে। ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে জোরপূর্বক স্থানান্তরের যেকোনো প্রচেষ্টা তাদের ইতিহাসের এক ভয়াবহ অধ্যায়, “নাকবা” (অর্থাৎ বিপর্যয়)-এর স্মৃতি ফিরিয়ে আনবে। ১৯৪৮ সালে ইসরাইলের প্রতিষ্ঠার সময় লক্ষ লক্ষ ফিলিস্তিনিকে তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল, যা আরব বিশ্ব “নাকবা” হিসেবে স্মরণ করে।

আরও পড়ুন: ইসরাইলি হামলায় প্রতি ৪৫ মিনিটে নিহত ১ শিশু

ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রাথমিক পরিকল্পনায় “ব্যাপক সহায়তা অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যা গাজার যে কোনো বাসিন্দাকে স্বেচ্ছায় তৃতীয় কোনো দেশে যেতে সাহায্য করবে। এর মধ্যে বিশেষ নৌ, আকাশ ও স্থলপথে যাওয়ার ব্যবস্থাও থাকবে।” ইসরাইল ১৮ মার্চ গাজায় ব্যাপক বোমা হামলা শুরু করে এবং নতুন একটি স্থল অভিযানের ঘোষণা দেয়, যা হামাসের (Hamas) সঙ্গে চলমান যুদ্ধে প্রায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির অবসান ঘটায়। হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ পুনরায় শুরুর পর থেকে অন্তত ১,০০১ জন মানুষ নিহত হয়েছেন।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

অস্ত্র হাতে ট্রাম্পের গাজা প্ল্যানের বিরুদ্ধে দাঁড়াও : Hamas

আপডেট : ২ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশ্বের সকল অস্ত্রধারীকে লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়েছে হামাস (Hamas)। গাজা পরিকল্পনায় দুই মিলিয়নেরও বেশি গাজাবাসীকে মিশর ও জর্ডানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোতে স্থানান্তরের কথা বলা হয়েছে। আর সে কারণেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছেন হামাসের শীর্ষ কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ট্রাম্পের এই নিষ্ঠুর পরিকল্পনা গণহত্যা এবং দুর্ভিক্ষের সঙ্গে সামিল। এর বিরুদ্ধে বিশ্বকে পদক্ষেপ নিতে হবে।

গত রবিবার  ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু হামাস নেতাদের গাজা ছাড়ার প্রস্তাব দেন, কিন্তু যুদ্ধের শেষের দিকে হামাসের (Hamas) সশস্ত্র বাহিনীকে নিরস্ত্র করতে হবে বলে শর্ত দেন। হামাস গাজার প্রশাসন ছেড়ে দিতে প্রস্তুত হলেও তাদের অস্ত্র জমা দেওয়ার বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করেছে।

নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরাইল ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছে, যা গাজার ২.৪ মিলিয়ন বাসিন্দাকে অন্য দেশগুলোতে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করেছিল। তবে পরে ট্রাম্প তার বক্তব্যে বলেন যে তিনি বাধ্যতামূলক কিছু করতে চান না, যা মিসর, জর্ডান এবং প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও)-র পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো হয়।

আরও পড়ুন: আর ১৪ দিনের খাবার মজুদ আছে গাজায়

জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার কয়েকদিন পরই ট্রাম্প একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন, যেখানে তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা থেকে তার জনগণকে সরিয়ে নিয়ে মিশর বা জর্ডানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোতে স্থানান্তরের কথা বলেন। তবে মিশর, জর্ডানসহ অন্যান্য আরব মিত্ররা, বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সরকার এবং ফিলিস্তিনিরা এই পরিকল্পনাকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। পরে ট্রাম্প তার এই বিতর্কিত পরিকল্পনা থেকে কিছুটা সরে আসার ইঙ্গিত দেন এবং বলেন যে তিনি এটি “জোরপূর্বক বাস্তবায়ন” করছেন না। মার্চের মাঝামাঝি সময়ে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প বলেন, “কেউ ফিলিস্তিনিদের বহিষ্কার করছে না।” তার এই মন্তব্য মিশর, জর্ডান এবং ফিলিস্তিন লিবারেশন অর্গানাইজেশন স্বাগত জানায়।

এরপর আরব দেশগুলো গাজার জনগণকে স্থানান্তর না করেই এর পুনর্গঠনের একটি বিকল্প পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে, যা ভবিষ্যতে রামাল্লাহ-ভিত্তিক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রশাসনের অধীনে পরিচালিত হবে। ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে জোরপূর্বক স্থানান্তরের যেকোনো প্রচেষ্টা তাদের ইতিহাসের এক ভয়াবহ অধ্যায়, “নাকবা” (অর্থাৎ বিপর্যয়)-এর স্মৃতি ফিরিয়ে আনবে। ১৯৪৮ সালে ইসরাইলের প্রতিষ্ঠার সময় লক্ষ লক্ষ ফিলিস্তিনিকে তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল, যা আরব বিশ্ব “নাকবা” হিসেবে স্মরণ করে।

আরও পড়ুন: ইসরাইলি হামলায় প্রতি ৪৫ মিনিটে নিহত ১ শিশু

ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রাথমিক পরিকল্পনায় “ব্যাপক সহায়তা অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যা গাজার যে কোনো বাসিন্দাকে স্বেচ্ছায় তৃতীয় কোনো দেশে যেতে সাহায্য করবে। এর মধ্যে বিশেষ নৌ, আকাশ ও স্থলপথে যাওয়ার ব্যবস্থাও থাকবে।” ইসরাইল ১৮ মার্চ গাজায় ব্যাপক বোমা হামলা শুরু করে এবং নতুন একটি স্থল অভিযানের ঘোষণা দেয়, যা হামাসের (Hamas) সঙ্গে চলমান যুদ্ধে প্রায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির অবসান ঘটায়। হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ পুনরায় শুরুর পর থেকে অন্তত ১,০০১ জন মানুষ নিহত হয়েছেন।