২৭ নভেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাই বেশি করে পুলিশ বাহিনীতে আসুক মেয়েরা: মুখ্যমন্ত্রী

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২৭ মে ২০২২, শুক্রবার
  • / 92

নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্য পুলিশকে নিয়ে ইদানিং সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিরোধী শিবির থেকে শুরু করে বিজেপি বান্ধব সংবাদমাধ্যমগুলি পান থেকে চুন খসলেই নখদাঁত বের করে পুলিশের ভাবমূর্তি কলুষিত করতে নেমে পড়েন। লাগাতার সমালোচনার মুখে পড়ে কিছুটা হলেও মুষড়ে পড়েছিল আইনশৃঙ্খলা সামলানোর দায়িত্বে থাকা উর্দিধারীরা। তাঁদের মনোবল বাড়াতে অবশেষে এগিয়ে এলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশ মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নবান্ন সভাঘরে কলকাতা পুলিশের বার্ষিক অনুষ্ঠানে নিচুতলার পুলিশের ভূয়সী প্রশংসা করার পাশাপাশি তাদের সমাজের সম্পদ বলেও আখ্যা দিয়েছেন। পাশাপাশি পুলিশের মধ্যে যে বেতন বৈষম্য রয়েছে (বিশেষ করে আইপিএস ও ডব্লিউবিপিএসদের মধ্যে) তা দূর করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

কলকাতা পুলিশের বার্ষিক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্যের পুলিশ যথেষ্ট ভাল কাজ করছে। বিপদে সবার আগে ছুটে যায় পুলিশ। খুব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটলে পুলিশের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান কিন্তু  সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলেন ওসি, এসআই, কনস্টেবলরা। তাঁদের কাজ ২৪ ঘন্টা। কাজ করতে গিয়ে মানুষ মাত্রেই ভুল হয়। পুলিশেরও দু-একটা কাজ করতে গিয়ে ভুল হতে পারে। কিন্তু সেই দু-একটা ভুল নিয়ে শুরু হয়ে যায় সমালোচনা, মিডিয়া ট্রায়াল। এখন তো আবার মিডিয়াতেই বিচার হয়ে যায়, আইনি বিচারের আগে। এটা উচিত নয়। মনে রাখতে হবে নিচুতলার পুলিশ কর্মীরা আমাদের সম্পদ। উঁচুতলার পুলিশ কর্মীদের মাথায় রাখতে হবে নিচুতলার পুলিশকর্মীরা সম্পদ। নিচুতলার পুলিশকর্মীরা সাহায্য না করলে আপনারা এই সাফল্য পাবেন না।’

আরও পড়ুন: SIR শুরু হওয়ার পর ২৮ জনের মৃত্যু! নির্বাচন কমিশনের ‘অপরিকল্পিত’ সিদ্ধান্তকে কাঠগড়ায় তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা

আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীতে আরও বেশি করে মহিলা নিয়োগের পক্ষে সওয়াল করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীতে মহিলারাও ভাল কাজ করছেন। আমি চাই পুলিশ বাহিনীতে আরও মহিলারা আসুক। মহিলারা আলাদা জায়গা তৈরি করে নিক। আমার বিশ্বাস নাকা চেকিং, গুণ্ডা দমন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে মহিলা পুলিশ স্মার্টলি কাজ করতে পারবে। তাই পুরুষের পাশাপাশি মহিলা নিয়োগে জোর দেওয়া হচ্ছে। উইর্নাস বাহিনীর জন্য বেশি করে মহিলা পুলিশ নিয়োগ করা হচ্ছে।’

আরও পড়ুন: SIR নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আপত্তির পরই সুপ্রিম কোর্টে মামলা তৃণমূলের

এদিনের সভা থেকে আইপিএস ও ডব্লিউবিসিএসদের মধ্যে থাকা বৈষম্য দূর করারও আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আইপিএস-রা একটা নির্দিষ্ট ব্যবস্থার মধ্যে থাকেন। নির্ধারিত সময় তাঁরা সব কিছু পেয়ে যান। কিন্তু সমস্যায় পড়েন ডব্লিউবিপিএসের আধিকারিকরা। ওঁদের জন্য কিছু একটা করা দরকার। স্টেট পুলিশ সার্ভিসে অনেক বৈষম্য রয়েছে। কোনও আইপিএস অফিসার যদি ২ হাজার টাকা ভাতা পান, তা হলে রাজ্যের পুলিশ সার্ভিসের অফিসার পান ২০০ টাকা। এই বৈষম্য ঘোচাতে হবে।’

আরও পড়ুন: ১৬ দিনে নির্মাণ দুধিয়া ব্রিজ, জুড়ে গেল মিরিক-শিলিগুড়ি, পূর্ত দফতরকে ধন্যবাদ মুখ্যমন্ত্রীর

সাধারণ মানুষের অসুবিধা যাতে না হয়, তার জন্য বাতি ব্যবহারকারী পুলিশ আধিকারিকদের আরও সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। তাঁর কথায়, ‘অনেক সময় দেখা যায় সিগন্যাল লাল থাকা সত্বেও অনেক পুলিশ আধিকারিকের কনভয় চলে যায়। তাতে সাধারণ মানুষের মনে বিরুফ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। কই আমি তো সিগন্যাল লাল থাকলে কনভয় থামিয়ে দিই। কেউ যেতে চাইলে তাকে বারণ করি। মনে রাখতে সবার কাছে সময়ের দাম আছে। পুলিশ বলে সিগন্যাল না মেনে চলে যাবেন, আর সাধারণ মানুষ আটকে থাকবে, এটা হতে পারে না।’

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

চাই বেশি করে পুলিশ বাহিনীতে আসুক মেয়েরা: মুখ্যমন্ত্রী

আপডেট : ২৭ মে ২০২২, শুক্রবার

নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্য পুলিশকে নিয়ে ইদানিং সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিরোধী শিবির থেকে শুরু করে বিজেপি বান্ধব সংবাদমাধ্যমগুলি পান থেকে চুন খসলেই নখদাঁত বের করে পুলিশের ভাবমূর্তি কলুষিত করতে নেমে পড়েন। লাগাতার সমালোচনার মুখে পড়ে কিছুটা হলেও মুষড়ে পড়েছিল আইনশৃঙ্খলা সামলানোর দায়িত্বে থাকা উর্দিধারীরা। তাঁদের মনোবল বাড়াতে অবশেষে এগিয়ে এলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশ মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নবান্ন সভাঘরে কলকাতা পুলিশের বার্ষিক অনুষ্ঠানে নিচুতলার পুলিশের ভূয়সী প্রশংসা করার পাশাপাশি তাদের সমাজের সম্পদ বলেও আখ্যা দিয়েছেন। পাশাপাশি পুলিশের মধ্যে যে বেতন বৈষম্য রয়েছে (বিশেষ করে আইপিএস ও ডব্লিউবিপিএসদের মধ্যে) তা দূর করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

কলকাতা পুলিশের বার্ষিক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্যের পুলিশ যথেষ্ট ভাল কাজ করছে। বিপদে সবার আগে ছুটে যায় পুলিশ। খুব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটলে পুলিশের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান কিন্তু  সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলেন ওসি, এসআই, কনস্টেবলরা। তাঁদের কাজ ২৪ ঘন্টা। কাজ করতে গিয়ে মানুষ মাত্রেই ভুল হয়। পুলিশেরও দু-একটা কাজ করতে গিয়ে ভুল হতে পারে। কিন্তু সেই দু-একটা ভুল নিয়ে শুরু হয়ে যায় সমালোচনা, মিডিয়া ট্রায়াল। এখন তো আবার মিডিয়াতেই বিচার হয়ে যায়, আইনি বিচারের আগে। এটা উচিত নয়। মনে রাখতে হবে নিচুতলার পুলিশ কর্মীরা আমাদের সম্পদ। উঁচুতলার পুলিশ কর্মীদের মাথায় রাখতে হবে নিচুতলার পুলিশকর্মীরা সম্পদ। নিচুতলার পুলিশকর্মীরা সাহায্য না করলে আপনারা এই সাফল্য পাবেন না।’

আরও পড়ুন: SIR শুরু হওয়ার পর ২৮ জনের মৃত্যু! নির্বাচন কমিশনের ‘অপরিকল্পিত’ সিদ্ধান্তকে কাঠগড়ায় তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা

আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীতে আরও বেশি করে মহিলা নিয়োগের পক্ষে সওয়াল করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীতে মহিলারাও ভাল কাজ করছেন। আমি চাই পুলিশ বাহিনীতে আরও মহিলারা আসুক। মহিলারা আলাদা জায়গা তৈরি করে নিক। আমার বিশ্বাস নাকা চেকিং, গুণ্ডা দমন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে মহিলা পুলিশ স্মার্টলি কাজ করতে পারবে। তাই পুরুষের পাশাপাশি মহিলা নিয়োগে জোর দেওয়া হচ্ছে। উইর্নাস বাহিনীর জন্য বেশি করে মহিলা পুলিশ নিয়োগ করা হচ্ছে।’

আরও পড়ুন: SIR নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আপত্তির পরই সুপ্রিম কোর্টে মামলা তৃণমূলের

এদিনের সভা থেকে আইপিএস ও ডব্লিউবিসিএসদের মধ্যে থাকা বৈষম্য দূর করারও আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আইপিএস-রা একটা নির্দিষ্ট ব্যবস্থার মধ্যে থাকেন। নির্ধারিত সময় তাঁরা সব কিছু পেয়ে যান। কিন্তু সমস্যায় পড়েন ডব্লিউবিপিএসের আধিকারিকরা। ওঁদের জন্য কিছু একটা করা দরকার। স্টেট পুলিশ সার্ভিসে অনেক বৈষম্য রয়েছে। কোনও আইপিএস অফিসার যদি ২ হাজার টাকা ভাতা পান, তা হলে রাজ্যের পুলিশ সার্ভিসের অফিসার পান ২০০ টাকা। এই বৈষম্য ঘোচাতে হবে।’

আরও পড়ুন: ১৬ দিনে নির্মাণ দুধিয়া ব্রিজ, জুড়ে গেল মিরিক-শিলিগুড়ি, পূর্ত দফতরকে ধন্যবাদ মুখ্যমন্ত্রীর

সাধারণ মানুষের অসুবিধা যাতে না হয়, তার জন্য বাতি ব্যবহারকারী পুলিশ আধিকারিকদের আরও সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। তাঁর কথায়, ‘অনেক সময় দেখা যায় সিগন্যাল লাল থাকা সত্বেও অনেক পুলিশ আধিকারিকের কনভয় চলে যায়। তাতে সাধারণ মানুষের মনে বিরুফ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। কই আমি তো সিগন্যাল লাল থাকলে কনভয় থামিয়ে দিই। কেউ যেতে চাইলে তাকে বারণ করি। মনে রাখতে সবার কাছে সময়ের দাম আছে। পুলিশ বলে সিগন্যাল না মেনে চলে যাবেন, আর সাধারণ মানুষ আটকে থাকবে, এটা হতে পারে না।’