২৩ জুন ২০২৫, সোমবার, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লক্ষ্য স্থীর থাকলে স্বপ্ন পূরণ সম্ভব, ইউপিএসসিতে নজরকাড়া সাফল্য ইউপির বাসচালক ও মুম্বইয়ের ফেরিঘাট কর্মীর ছেলের

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২৭ মে ২০২৩, শনিবার
  • / 68

বাঁদিকে মঈন আহমেদ, ডানদিকে পরিবারে সঙ্গে সৈইদ মোহাম্মদ হুসেন

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  লক্ষ্য স্থীর থাকলে যে স্বপ্ন সফল হওয়া সম্ভব, তাই প্রমাণ করে দেখালেন উত্তরপ্রদেশের মঈন আহমেদ ও মুম্বইয়ের ওয়াদি বুন্দেরের সৈইদ মোহাম্মদ হুসেন। উত্তরপ্রদেশ আর মুম্বইয়ের দুই গরিব পরিবারের ছেলের স্বপ্ন মিলে গেল একজায়গায় এসে। বাস চালকের ছেলে মঈন আর মুম্বইয়ের ফেরিঘাট কর্মীর ছেলে সৈইদ মোহাম্মদ হুসেনের স্বপ্ন ছিল ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল হওয়া। কঠিন লড়াইয়ে জয়ী হয়েছেন দুজনেই। ইউপিএসসিতে মঈন আহমেদ ২৯৬ ও সইদ মোহাম্মদ হুসেন ৫৭০ rank  করেছেন।

লক্ষ্য স্থীর থাকলে স্বপ্ন পূরণ সম্ভব, ইউপিএসসিতে নজরকাড়া সাফল্য ইউপির বাসচালক ও মুম্বইয়ের ফেরিঘাট কর্মীর ছেলের

আরও পড়ুন: প্রচণ্ড ভিড়ে মুম্বাইয়ে ট্রেন থেকে পড়ে মৃত অন্তত ৫

স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে বহু প্রতিবন্ধকতা এসেছে। কিন্তু লড়াই ছাড়েননি। মঈনের বাবা ও তার পরিবারের তরফ থেকে অনেকবার বলা হয়েছিল তার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু মায়ের প্রেরণায় লড়াই চালিয়ে আজ ইউপিএসসিতে ২৯৬ rank করেছেন মঈন। উত্তরপ্রদেশের ২৫ বছরের মঈন আহমেদের শৈশবের স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হওয়া।

আরও পড়ুন: জলমগ্ন মুম্বই-বিপর্যস্ত জনজীবন, রেড অ্যালার্ট জারি কর্ণাটকে

সেইসঙ্গে ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসা। এবছর চতুর্থবারের চেষ্টায় ইউপিএসসি ক্র্যাক করেছেন মঈন। নিজের স্বপ্নকে পূরণ করতে ২০১৯-এ মোরাবাদের সাইবার ক্যাফের চাকরি ছেড়ে দিল্লিতে চলে আসেন। পড়াশোনা চালানোর জন্য তিনি আড়াই লক্ষ টাকা লোন নেন। বাবা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কাছে মঈনের এই সিদ্ধান্ত যখন ছিল আত্মহত্যার শামিল, তখন মায়ের সমর্থনেই পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন তিনি। আর আজ মঈনের সিদ্ধান্ত যে সেদিন সঠিক ছিল সেটি মেনে নিয়েছেন তার বাবা সহ তার পরিবারের সদস্যরা।

আরও পড়ুন: ভারতে কোভিড কেস বেড়ে ৪৩৮; মুম্বই, চেন্নাই, আহমেদাবাদে কোভিডের সংখ্যা বৃদ্ধি

লক্ষ্য স্থীর থাকলে স্বপ্ন পূরণ সম্ভব, ইউপিএসসিতে নজরকাড়া সাফল্য ইউপির বাসচালক ও মুম্বইয়ের ফেরিঘাট কর্মীর ছেলের

পাশাপাশি মুম্বইয়ের ওয়াদি বুন্দেরে এক বস্তির ঘরে ঠাকুমা, বাবা-মা, বড় ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে একচিলতে ঘরে বাস সৈইদ মোহাম্মদ হুসেনের। ইউপিএসসি পরীক্ষার জন্য তিনি ভারতের হজ কমিটির কোচিং সেন্টারে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। হুসেনের বাবা জাহাজঘাটে পণ্য লোডিং আনলোডিং-এর কাজ করেন। পাঁচ বছর অপেক্ষা শেষে মঙ্গলবার ইউপিএসসি রেজাল্ট বের হওয়ার পর নিতান্ত গরিব পরিবারে ছেলের এই সাফল্য খুশির মুহূর্ত নিয়ে আসে।

হুসেন বলেন, ‘শেষ ব্যর্থতা আমাকে পুরোপুরি ভেঙে দিয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে আমি দিনের বেশিরভাগ সময় মসজিদে কাটাতাম। তার পরেই আমি আরও একবার ইউপিএসসিতে বসার জন্য মনস্থীর করি’।

সৈইদ মোহাম্মদ হুসেন ডংরির খোজ ইসনা আশেরি জামাত স্কুলে পড়াশোনা করেন। এর পর সেন্ট জোসেফ স্কুল থেকে এসএসসি ও মুম্বাইয়ের এলফিনস্টোন কলেজ থেকে বাণিজ্যে স্নাতক শেষ করার পর, তিনি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেন। পুনে এবং দিল্লির বিভিন্ন কোচিং ক্লাস থেকে সাহায্য নেওয়ার পাশাপাশি, হুসেন হজ কমিটি অফ ইন্ডিয়া রেসিডেন্সিয়াল কোচিং সেন্টারেও প্রশিক্ষণ নেন।
সৈইদ মোহাম্মদ হুসেন ছাড়াও এই কোচিং থেকে এই বছর তিনজন জন সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এরা হলেন কাজী আয়েশা ইব্রাহিম (rank ৫৮৬), তাসকিন খান (rank  ৭৩৬) এবং মোঃ বুরহান জামান (rank  ৭৬৮)।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

লক্ষ্য স্থীর থাকলে স্বপ্ন পূরণ সম্ভব, ইউপিএসসিতে নজরকাড়া সাফল্য ইউপির বাসচালক ও মুম্বইয়ের ফেরিঘাট কর্মীর ছেলের

আপডেট : ২৭ মে ২০২৩, শনিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  লক্ষ্য স্থীর থাকলে যে স্বপ্ন সফল হওয়া সম্ভব, তাই প্রমাণ করে দেখালেন উত্তরপ্রদেশের মঈন আহমেদ ও মুম্বইয়ের ওয়াদি বুন্দেরের সৈইদ মোহাম্মদ হুসেন। উত্তরপ্রদেশ আর মুম্বইয়ের দুই গরিব পরিবারের ছেলের স্বপ্ন মিলে গেল একজায়গায় এসে। বাস চালকের ছেলে মঈন আর মুম্বইয়ের ফেরিঘাট কর্মীর ছেলে সৈইদ মোহাম্মদ হুসেনের স্বপ্ন ছিল ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল হওয়া। কঠিন লড়াইয়ে জয়ী হয়েছেন দুজনেই। ইউপিএসসিতে মঈন আহমেদ ২৯৬ ও সইদ মোহাম্মদ হুসেন ৫৭০ rank  করেছেন।

লক্ষ্য স্থীর থাকলে স্বপ্ন পূরণ সম্ভব, ইউপিএসসিতে নজরকাড়া সাফল্য ইউপির বাসচালক ও মুম্বইয়ের ফেরিঘাট কর্মীর ছেলের

আরও পড়ুন: প্রচণ্ড ভিড়ে মুম্বাইয়ে ট্রেন থেকে পড়ে মৃত অন্তত ৫

স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে বহু প্রতিবন্ধকতা এসেছে। কিন্তু লড়াই ছাড়েননি। মঈনের বাবা ও তার পরিবারের তরফ থেকে অনেকবার বলা হয়েছিল তার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু মায়ের প্রেরণায় লড়াই চালিয়ে আজ ইউপিএসসিতে ২৯৬ rank করেছেন মঈন। উত্তরপ্রদেশের ২৫ বছরের মঈন আহমেদের শৈশবের স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হওয়া।

আরও পড়ুন: জলমগ্ন মুম্বই-বিপর্যস্ত জনজীবন, রেড অ্যালার্ট জারি কর্ণাটকে

সেইসঙ্গে ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসা। এবছর চতুর্থবারের চেষ্টায় ইউপিএসসি ক্র্যাক করেছেন মঈন। নিজের স্বপ্নকে পূরণ করতে ২০১৯-এ মোরাবাদের সাইবার ক্যাফের চাকরি ছেড়ে দিল্লিতে চলে আসেন। পড়াশোনা চালানোর জন্য তিনি আড়াই লক্ষ টাকা লোন নেন। বাবা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কাছে মঈনের এই সিদ্ধান্ত যখন ছিল আত্মহত্যার শামিল, তখন মায়ের সমর্থনেই পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন তিনি। আর আজ মঈনের সিদ্ধান্ত যে সেদিন সঠিক ছিল সেটি মেনে নিয়েছেন তার বাবা সহ তার পরিবারের সদস্যরা।

আরও পড়ুন: ভারতে কোভিড কেস বেড়ে ৪৩৮; মুম্বই, চেন্নাই, আহমেদাবাদে কোভিডের সংখ্যা বৃদ্ধি

লক্ষ্য স্থীর থাকলে স্বপ্ন পূরণ সম্ভব, ইউপিএসসিতে নজরকাড়া সাফল্য ইউপির বাসচালক ও মুম্বইয়ের ফেরিঘাট কর্মীর ছেলের

পাশাপাশি মুম্বইয়ের ওয়াদি বুন্দেরে এক বস্তির ঘরে ঠাকুমা, বাবা-মা, বড় ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে একচিলতে ঘরে বাস সৈইদ মোহাম্মদ হুসেনের। ইউপিএসসি পরীক্ষার জন্য তিনি ভারতের হজ কমিটির কোচিং সেন্টারে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। হুসেনের বাবা জাহাজঘাটে পণ্য লোডিং আনলোডিং-এর কাজ করেন। পাঁচ বছর অপেক্ষা শেষে মঙ্গলবার ইউপিএসসি রেজাল্ট বের হওয়ার পর নিতান্ত গরিব পরিবারে ছেলের এই সাফল্য খুশির মুহূর্ত নিয়ে আসে।

হুসেন বলেন, ‘শেষ ব্যর্থতা আমাকে পুরোপুরি ভেঙে দিয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে আমি দিনের বেশিরভাগ সময় মসজিদে কাটাতাম। তার পরেই আমি আরও একবার ইউপিএসসিতে বসার জন্য মনস্থীর করি’।

সৈইদ মোহাম্মদ হুসেন ডংরির খোজ ইসনা আশেরি জামাত স্কুলে পড়াশোনা করেন। এর পর সেন্ট জোসেফ স্কুল থেকে এসএসসি ও মুম্বাইয়ের এলফিনস্টোন কলেজ থেকে বাণিজ্যে স্নাতক শেষ করার পর, তিনি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেন। পুনে এবং দিল্লির বিভিন্ন কোচিং ক্লাস থেকে সাহায্য নেওয়ার পাশাপাশি, হুসেন হজ কমিটি অফ ইন্ডিয়া রেসিডেন্সিয়াল কোচিং সেন্টারেও প্রশিক্ষণ নেন।
সৈইদ মোহাম্মদ হুসেন ছাড়াও এই কোচিং থেকে এই বছর তিনজন জন সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এরা হলেন কাজী আয়েশা ইব্রাহিম (rank ৫৮৬), তাসকিন খান (rank  ৭৩৬) এবং মোঃ বুরহান জামান (rank  ৭৬৮)।