সেখ কুতুবউদ্দিন: খারিজি মাদ্রাসা অনুমোদনের কথা বলেছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি এবার দ্বিতীয় পর্যায়ে অনুমোদনের জন্য ৭০০ আন-এডেড মাদ্রাসার ইনেসপেকশন প্রক্রিয়া শুরু করছে ডিরেক্টরেট অফ মাদ্রাসার এডুকেশন (ডিএমই)। মাদ্রাসা শিক্ষা অধিকর্তা আবিদ হোসেন পুবের কলমকে বলেন, অনেক মাদ্রাসা আগেই অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছিল। সেই মাদ্রাসাগুলিতে ফের ইনেসপেকশনের কাজ শুরু করা হচ্ছে।
মাদ্রাসাগুলির বর্তমান অবস্থা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে জেলায় জেলায় কমিটি পাঠানো হবে। সেই সঙ্গে দফতরের পক্ষ থেকেও মাদ্রাসার পরিকাঠামো সহ অন্যান্য বিষয় খতিয়ে দেখা হবে। রাজ্যের সব জেলা থেকে আন এডেড মাদ্রাসার জন্য আবেদন করা হয়েছিল।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পর্যন্ত এই আবেদন গ্রহণ হয়। ডিএমই আরও বলেন, মাদ্রাসাগুলির সার্বিক পরিকাঠামো খতিয়ে দেখা হবে। সেই ইনেসপেকশন রিপোর্ট রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে জমা দেওয়া হবে এবং সেটা খতিয়ে দেখেই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আশার পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করতে উদ্যোগ নেন। ধাপে ধাপে ১০ হাজার মাদ্রাসা অনুমোদনের কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো ২০১২ সাল থেকে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়। ২০১৪ সাল পর্যন্ত ২ হাজার ২২৩টি আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে ৭০০টি আন এডেড মাoাসার ইনেসপেকশন করতে চলেছে ডিএমই।
জানা গিয়েছে, এর আগে এই আন এডেড মাদ্রাসাগুলিকে ‘এ’, ‘বি’ এবং ‘সি’— এই তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়। ‘এ’ ক্যাটাগরিতে রাখা হয় ৩৩৮টি মাদ্রাসা। ‘বি’ ক্যাটাগরিতে থাকে ৮৫টি মাদ্রাসা, আর ‘সি’ ক্যাটাগরিতে ১০৫টি মাদ্রাসা রাখা হয়। এদিন অনেক শিক্ষক জানান, ১৬১৫টি মাদ্রাসার মধ্যে অনেক মাদ্রাসায় রি-ইনেসফেশন হলেও ‘এ’, ‘বি’ এবং ‘সি’ তালিকায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
আবেদন গৃহীত হওয়া মাদ্রাসাগুলির মধ্যে তৎকালীন সময় ২৩৫টি আন এডেড মাদ্রাসায় অনুমোদন দেওয়া হয়। সেই মাদ্রাসাগুলি এখন পঠনপাঠন চলছে। শিক্ষক ও পড়ুয়ারাও সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। অনুমোদন হওয়া এই আন এডেড মাদ্রাসায় প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত রয়েছে ৫৩টি।
প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয় এমন মাoাসা ১৫টি। আর পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয় বাকি মাদ্রাসায়।
২৩৫টি মাদ্রাসা ‘অ্যাপ্রুভ্যাল’ পেলেও বাকী মাদ্রাসাগুলি যাতে অনুমোদনের ব্যবস্থা করা হয়, এই নিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে একাধিকবার আর্জি জানিয়েছেন বহু শিক্ষক সংগঠন। শিক্ষক সংগঠনগুলির বক্তব্য, আরও মাদ্রাসার অনুমোদন দেওয়া হোক। এতে সংখ্যালঘু পড়ুয়ারা শিক্ষায় এগিয়ে যাবে। তাঁদের আরও বক্তব্য, আন এডেড মাoাসার পড়ুয়ারা যাতে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো সুযোগ সুবিধা পায় তার ব্যবস্থা করলে ভালো হয়।
শিক্ষকরা আরও জানিয়েছেন, রাজ্যের আন-এডেড মাদ্রাসা অনুমোদন পেলে এবং খারিজি মাদ্রাসার একাংশের অ্যাপ্রুভ্যাল মিললে পিছিয়েপড়া এলাকায় সংখ্যালঘুদের পড়াশোনায় সুবিধা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা।
রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে আন-এডেড মাদ্রাসার টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ও অন্যান্য শিক্ষক সংগঠনের নেতৃত্বরা স্বাগত জানিয়েছেন।